শেরপুরে মুষ্টির চালে নারীদের আয়োজনে হচ্ছে দুর্গাপূজা

শেরপুরে মুষ্টির চালে নারীদের আয়োজনে হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। জেলা শহরের সাতানিপাড়া এলাকায় এই ব্যতিক্রমী দুর্গাপূজার আয়োজন করেছেন একদল সাহসী নারী। ‘যা দেবী সর্বভূতেষু পূজা সংস্থিতা’ এই মন্ত্রকে ধারণ করে উমা সংঘ নামের একটি নারী সংগঠন শুধুমাত্র নিজেদের জমানো মুষ্টির চাল দিয়ে দুর্গাপূজার প্রস্তুতির কাজ করে যাচ্ছেন।
এলাকাবাসী ও সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর শহরের সাতানি পাড়ায় মূলত আদিবাসী ও দলিত সম্প্রদায়ের অতিদরিদ্র মানুষ বাস করেন। তাঁরা দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। তাঁদের মধ্য থেকেই ২৩ জন নারীর সমন্বয়ে উমা সংঘের কমিটি গঠন করা হয়। গত বছর ছোট পরিসরে প্রথমবার দুর্গাপূজার আয়োজন করেন তাঁরা। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার আরও বড় পরিসরে পূজা আয়োজন করেছে এই সংগঠনটি।
কমিটির নারীরা সিদ্ধান্ত নেন, সারা বছর ধরে এলাকার ৪২টি পরিবার থেকে প্রতিদিন মুষ্টি পরিমাণ চাল সংগ্রহ করবেন। সেই চাল বিক্রি করে প্রতি মাসে প্রায় ২০০ টাকা করে সঞ্চয় করেন তাঁরা। এক বছরে এভাবে সঞ্চিত হয় ৬০ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়েই শুরু হয় এবারের পূজার প্রস্তুতি।
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজার খরচ অনেক বেশি। তাই পূজার খরচ মেটাতে স্থানীয় ধনী ব্যক্তি ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা। ইতোমধ্যে প্রতিমা নির্মাণ ও রঙের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে পূজোমণ্ডপের প্রবেশপথে তোরণ নির্মাণ, মণ্ডপে আলোকসজ্জাকরণ ও পূজার অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহের কাজ। ২৮ সেপ্টেম্বর রোববার ষষ্ঠী কল্পারম্ভের মধ্য দিয়ে পূজা শুরু হবে।
এলাকার পুরুষমানুষেরাও উমা সংঘের এই উদ্যোগে নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তরুণ-তরুণীরাও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং নানাভাবে সহযোগিতা করছেন।
উমা সংঘের সভাপতি মুক্তি বিশ্বাস বলেন, ‘নারীরা শক্তির প্রতীক। আমরা এই পূজার মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাই, নারীরাও যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে পারে।’ তিনি জানান, চাল বিক্রির টাকা দিয়ে তাঁরা পূজার কাজ শুরু করলেও সমাজের অন্যদের সহযোগিতায় পূর্ণাঙ্গ আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে ।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুমিতা বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের পাড়ায় আদিবাসী, দলিত, ব্রাহ্মণ ও সাহা সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে থাকেন। সবাই মিলে আমাদের সহযোগিতা করায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আগামীতেও পূজার আয়োজন করার ইচ্ছে রয়েছে আমাদের।’
স্থানীয় আদিবাসী নেতা বিদ্বান বিশ্বাস বলেন, ‘দেবী দুর্গা নারী শক্তির প্রতীক। সেই বিশ্বাস থেকে নারীরা এই সাহসী উদ্যোগ নিয়েছে। প্রশাসনের উচিত এই উদ্যোগের পাশে দাঁড়ানো ও সহযোগিতা করা।’
জেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি জিতেন্দ্র চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আমরা তাঁদের উদ্যোগের কথা জেনেছি এবং পূজোমণ্ডপ এলাকা পরিদর্শনও করেছি। তাই অন্য মণ্ডপের তুলনায় তাঁদের বরাদ্দ কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে। প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে পূজার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। উমা সংঘ শুধু পূজা করছে না, তাঁরা নারী শক্তির আরাধনাও করছে।’
উমা সংঘের নারীদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ প্রমাণ করেছে, ইচ্ছাশক্তি আর ঐক্য থাকলে সব কিছুই সম্ভব। মুষ্টির চাল থেকে শুরু হয়ে দুর্গাপূজার মতো বড় আয়োজন নারীদের সাহস, শক্তি এবং সংকল্পের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে শেরপুরে।
এমএসএম / এমএসএম

আরেক ঘুষের হাট সরকারি আবাসন পরিদপ্তর

মুরাদনগরে কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ

টুঙ্গিপাড়ায় টাইফয়েড ভ্যাকসিন কার্যক্রম সফল করতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

গোদাগাড়ীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরায় ৭ জেলেকে জরিমানা

রাঙ্গামাটি সদরে বিকেএসপি আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে কুমিল্লায় বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

গোপালগঞ্জে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন

রৌমারীতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে মটর সাইকেল যোগে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত

রায়পুরে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগ

আলফাডাঙ্গায় এক মাদ্রাসা ছাত্রের বস্তা বন্দী লাশ উদ্ধার

নরসিংদীর ডেঙ্গু আপডেট: নতুন শনাক্ত ১৯, চিকিৎসাধীন ৪০ জন রোগী
