গৃহবধূর ঘরে প্রতিবন্ধী যুবক আটক, সালিশ বৈঠকে তালাক, মারধর ও অপমান স্থানীয়দের ক্ষোভ

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার কালুহাটি উত্তরপাড়ায় এক গৃহবধূর ঘরে প্রতিবন্ধী যুবককে আটকের ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আটক হওয়া যুবকের নাম সজিব (২২)। তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী এবং কালুহাটির নাসিরের ছেলে। গৃহবধূ স্থানীয় আশরাফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী। আশরাফ আলীর বাবার নাম মৃত আজা প্রাং, আর গৃহবধূর বাবার নাম মৃত ইয়ার আলী মন্ডল, সাং-ওমরগাড়ী। প্রায় ১০ বছরের সংসার ছিল তাদের। ঘটনার রাতেই সজিবের মা প্রথমে গৃহবধূর ঘরে তাদের একসঙ্গে দেখতে পান বলে জানা যায় । এরপর বিষয়টি দ্রুত গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পরপরই গ্রামবাসীর উদ্যোগে একটি সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহীনসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও গ্রামের প্রামাণিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরদিন বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সালিশে সিদ্ধান্ত হয়, গৃহবধূর দেনমোহর ও যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে কাজী সিদ্দিক আলীর মাধ্যমে খোলা তালাক সম্পন্ন করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় গৃহবধূর প্রায় ১০ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটে। তবে প্রতিবন্ধী যুবকের বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সালিশ চলাকালে বিএনপি নেতা শাহীন নিজেই সজিবকে মারধর করেন। এ ছাড়াও বর্বরোচিত কায়দায় মাটিতে থুতু ফেলে তা জিহ্বা দিয়ে চাটতে বাধ্য করা হয় সজিবকে। জনসম্মুখে কান ধরে ভুল স্বীকার করানো হয় তাকে। এ ঘটনাকে ‘অমানবিক ও লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “একজন নারী তার সংসার হারালেন, আর এক প্রতিবন্ধী যুবক মানবিক মর্যাদা হারাল। এখানে কে অপরাধী আর কে ভুক্তভোগী — তা স্পষ্ট না করেই এমন তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা অন্যায়।”
অন্য এক যুবক বলেন,“আমাদের ধারণা, সজিব ও তার মায়ের ষড়যন্ত্রের কারণেই গৃহবধূর সংসার ভেঙে গেছে। কিন্তু কোনো সঠিক তদন্ত হয়নি। শুধু গ্রাম্য চাপে তালাক হয়ে গেল।”
ঘটনার পর থেকে এলাকায় আলোচনা -সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয়দের একটি অংশ মনে করছে, প্রতিবন্ধী যুবককে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে গৃহবধূকে ফাঁসানো হয়েছে। আবার অন্যরা বলছে, যদি সত্যিই অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনা ঘটে থাকে, তবে বিচার হওয়া উচিত ছিল প্রমাণের ভিত্তিতে, অমানবিক আচরণের মাধ্যমে নয়।
সামাজিকভাবে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান গ্রামীণ জীবনের একটি অংশ হলেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত অনেক সময় ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে। এ ক্ষেত্রে গৃহবধূ সংসার হারালেও প্রতিবন্ধী যুবকের কোনো আইনগত বিচার হয়নি, বরং তাকে প্রকাশ্যে অপমান করা হয়েছে।
কালুহাটি উত্তরপাড়ার এ ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলেছে গ্রামীণ সালিশ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে। তদন্ত ছাড়া হঠাৎ সিদ্ধান্ত, অমানবিক আচরণ এবং সামাজিকভাবে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী -এমন মন্তব্যই এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে।
এমএসএম / এমএসএম

চট্টগ্রামে রাস্তায় ৫০ হাজার অনিবন্ধিত সিএনজি, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

কসবায় টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

কুষ্টিয়ায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গণে ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার, দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়রা

ধামরাই প্রেস ক্লাবের নির্বাচন : সভাপতি তুষার, সম্পাদক আহাদ

সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, রফিকুল আলমের চাকরিচ্যুতি দাবিতে মানববন্ধন

তাড়াশে বিয়ে বাড়িতে চুরির ঘটনা

টুঙ্গিপাড়ায় শুরু হয়েছে টাইফয়েড ভ্যাকসিন টিকাদান কর্মসূচি

তেঁতুলিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পর্যটন কেন্দ্র এখন মোহনগঞ্জের গলার কাঁটা

অভয়নগরে শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ

রাঙামাটিতে টাইফয়েড টিকাদান শুরু
