ঢাকা সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫

'জুলাই বিপ্লব' শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোচিত হবে, শহীদরাই আজকের মহানায়ক: মাহমুদুর রহমান


ইবনুল হাসান রায়হান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা photo ইবনুল হাসান রায়হান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা
প্রকাশিত: ২০-১০-২০২৫ দুপুর ৪:৪৮

আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মন্তব্য করেছেন যে, 'জুলাই বিপ্লব' শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোচিত হবে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আমার দেশ পাঠকমেলা কুমিল্লা জেলা কর্তৃক আয়োজিত মহান '৩৬ জুলাই যোদ্ধাদের' সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি শহীদ পরিবারগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা মন খারাপ করবেন না, আপনাদের ছেলে মেয়েদের গল্প সারা পৃথিবীতে শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোচিত হবে।” তিনি আরও বলেন, এই বিজয় সম্ভব হয়েছে আপনাদের সন্তানদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে। “আপনারা কাঁদবেন না, আপনারা গর্ব করবেন। সমগ্র জাতি তাদের জন্যই গর্ব করে,” উল্লেখ করে তিনি জানান, আমার দেশ পত্রিকা তাদের জন্য আলাদাভাবে কাজ করছে এবং তারা সার্বক্ষণিক তাদের স্মরণে থাকে।

মাহমুদুর রহমান বলেন, যেই মুহূর্তে আমাদের সন্তানেরা মৃত্যুকে জয় করতে সক্ষম হয়েছে, সেই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ পালাতে বাধ্য হয়েছে। কারণ আমাদের তরুণেরা কেবলমাত্র ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নয়, তারা ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছে। নিরস্ত্র তরুণ-তরুণীরা এই যুদ্ধে নিজের শক্তি এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে জয়ী হয়েছে। তিনি শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "আজ থেকে ৫০ বছর আগে মারা যাওয়া চে গুয়েভারাকে মহানায়ক হিসেবে জানতাম। আজকের মহানায়ক হলো আবু সাইদ, আজকের মহানায়ক মুগ্ধ ও ওয়াসিমের মতো শহীদরা। এরা আমাদের মহানায়ক। আমাদের আর বাইরে থেকে মহানায়ক আনতে হবে না।" জুলাই যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ও আহতদেরকে অভিবাদন জানিয়ে তিনি বলেন, "এই মহান জুলাই না আসলে আমি আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না। এই মহান জুলাই সংঘটিত না হলে আমার দেশ পুনঃপ্রকাশ হতো না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা ফিরে পেত না। বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার সার্বভৌমত্ব ফিরে পেত না।"

তিনি আরও বলেন, দুঃখের বিষয় হলো—আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। তিনি সাংবাদিকদের কঠিন পেশা সম্পর্কে বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন, "আমরা যখন পত্রিকা বের করা শুরু করলাম, তখন খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। আগে তো আমাদের জন্য সহজ ছিল, কারণ আমরা তখন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লিখতাম। এখন তো যাদের সম্পর্কে লিখতে হবে, তারা তো সবাই জুলাই যোদ্ধা—বিএনপি জুলাই যোদ্ধা, জামায়াতে ইসলামী জুলাই যোদ্ধা, এনসিপি জুলাই যোদ্ধা—তারা তো জুলাইয়ের মহানায়ক, তারা তো জুলাইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছে।" তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কিভাবে লিখব? কিন্তু লিখতে তো হবে—তারা তো ভুল করে, সব তো আর সঠিক করছে না। এনসিপি আমার সন্তানতুল্য, বিএনপি-জামায়াত আমার বন্ধু। তারপরেও তাদের বিরুদ্ধে লিখতে হবে। কারণ সংবাদপত্রটাই এমন।” তিনি যোগ করেন, সবাই এখন সরকারে যেতে চায়, তাহলে আপনি কার পক্ষে লিখবেন, কার মন জয় করবেন? যার বিপক্ষে যাবেন, সেই তো শত্রু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, যদি আপনি সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিক হতে চান, তাহলে পত্রিকা চালানো সবচেয়ে কঠিন কাজ। সংবাদপত্রের কাজ প্রতিদিন লড়াই করা। এটা আপনাকে প্রতিদিন নতুন সংবাদ দিচ্ছে। এটা ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেই বাসি হয়ে যায়।

এই সময় তিনি তার ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথা তুলে ধরে বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ লেখালেখির কারণে তিনি বেশিদিন এ দেশে টিকতে পারেননি। তিনি গ্রেপ্তার হন, ২০১৩ সালের ১১ই এপ্রিল তার পত্রিকা বন্ধ হয়, প্রেসে তালা দেওয়া হয় এবং পুলিশের সামনে সবকিছু পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি জেলে যান এবং চার বছর জেল খাটেন, রিমান্ডে নিয়ে পুলিশের অত্যাচার সহ্য করেন। তার এক বছর পর কুষ্টিয়াতে আদালতের সামনে তার উপর হামলা হয়, রক্তাক্ত হলেও আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে যান। তারপর দেশ ছাড়তে বাধ্য হন, কারণ তখন তার মনে হয়েছিল দেশে থাকলে তো গুম হয়ে যেতে হবে। তার চেয়ে বাইরে থেকে যুদ্ধ চালিয়ে গেলেও তো ভালো হয়—এবং সেটা উচিত। এই কারণেই সিদ্ধান্ত নেন, বাইরে থেকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। সেই যুদ্ধে আমরা জয়ী হতে পারিনি, কিন্তু একটা পটভূমি তৈরি করতে পেরেছিলাম। সেই পটভূমিতে দাঁড়িয়ে আপনাদের সন্তানেরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করেছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো: হায়দার আলী, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কলামিস্ট এম আব্দুল্লাহ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মহাসচিব ডাঃ গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, এবি পার্টির কুমিল্লা জেলা সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সফিকুর রহমান হেলাল, কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক দুলাল, এনসিপির কুমিল্লা মহানগর যুগ্ম সমন্বয়ক রাশেদুল হাসান। আমার দেশ পরিচালক ড. শাকিল ওয়াহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম জাহিদ চৌধুরী, আমার দেশ মফস্বল আবু দারদা জোবায়ের-ও উপস্থিত ছিলেন। আমার দেশ পাঠকমেলা কুমিল্লা জেলার সভাপতি ডা. আরিফ মোর্শেদ খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আমার দেশ পাঠকমেলা কুমিল্লা জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান মনির। শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শহীদ হামিদুর রহমান সাদমানের মা কাজী শারমিন এবং শহীদ মুনতাসির রহমানের বাবা সৈয়দ গাজীউর রহমান। আমার দেশ কুমিল্লা প্রতিনিধি এম হাসানের সঞ্চালনায় কুমিল্লার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কুমিল্লায় শহীদ ৩৯ জনের পরিবার ও ২০ জন আহত সদস্যের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

এমএসএম / এমএসএম

আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন এখন বিএনপি সভাপতি প্রার্থী

আপনার এসপি’ নামে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের বিশেষ সেবা চালু

ভূরুঙ্গামারীতে দুই মাদক সেবনকারীকে জেল ও জরিমানা ভ্রাম্যমান আদালতের

বরগুনায় সওজ’র সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরোতী

কুমিল্লায় সংঘর্ষের ঘটনায় ৮ কিশোর গ্যাং সদস্য গ্রেফতার

ঝিনাইদহে বিশ্ব ও জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত

সিংড়ায় অনলাইন জুয়ায় বিরোধে প্রান গেলো ব্যবসায়ীর

মোহনগঞ্জ পাইলট সরকারি স্কুলের কম্পিউটার অপারেটর মাসুমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

সাটুরিয়ায় ডোবা থেকে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার

'জুলাই বিপ্লব' শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোচিত হবে, শহীদরাই আজকের মহানায়ক: মাহমুদুর রহমান

৫ হাজার টাকা চাদাঁ না দেওয়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা ও লুঠপাট থানায় মামলা দায়ের

বিয়ে বাড়িতে হামলা, আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সদরপুরে মমিন হোটেলে দুই লাখ টাকা জরিমানা