কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পর দ্রুত পুনরুদ্ধারে সাফল্য, দুর্যোগেও দৃঢ়তা দেখালো বেবিচক
অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও কার্যক্রম স্বাভাবিক, তদন্ত কমিটি গঠন ও আধুনিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় নতুন উদ্যোগ।
গত ১৮ অক্টোবর রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যে ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পুরো এলাকা। রপ্তানিযোগ্য পণ্যের প্যাকেজিং ও সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এ কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দ্রুত মাঠে নামে ফায়ার সার্ভিস ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
ফায়ার সার্ভিসের ৩০টিরও বেশি ইউনিট, বিমানবন্দর নিরাপত্তা বাহিনী, এভিয়েশন ফায়ার ইউনিট এবং বেবিচকের নিজস্ব টিমের সমন্বিত পদক্ষেপ ও জরুরি সাড়া দেওয়ার ফলে প্রাণহানি ছাড়াই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করার নির্দেশ দেন তিনি। পরদিন থেকেই বিমানবন্দর কার্যক্রম কিছুটা স্বাভাবিক করা হয়েছে বলে জানা যায়। তিনি বলেন, “এটি একটি দুঃখজনক দুর্ঘটনা। অগ্নিকাণ্ডের পর ওয়্যার হাউজ নিয়ে আমরা কিছুটা সমস্যায় আছি। নতুন ওয়্যার হাউজের টাকা নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হচ্ছে। তাদের দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ বেশি হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি দ্রুত সমাধানের। পাশাপাশি সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়েও এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক আলোচনা হচ্ছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই অবকাঠামোকে সচল রাখা আমাদের দায়িত্ব এবং আমাদের টিম সেটিই করেছে দক্ষতার সঙ্গে।”
গত ২১ অক্টোবর বেবিচক সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক বলেছেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) প্রোটোকল মেনেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিমানবন্দরে সপ্তাহে এক দিন ফায়ার ড্রিল (অগ্নিনির্বাপণ মহড়া) করা হয়। এমনকি আগুন লাগার পরও আইসিএওর সব নিয়ম মেনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগুনের কারণে বিমানবন্দরের কার্গো অপারেশন এক দিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ৯ নম্বর গেট দিয়ে কার্যক্রম চালু আছে। আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয় ২৬ ঘণ্টা পর। যদিও এ ঘটনায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। তবে প্রাথমিক হিসাবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার পণ্য ও কাঁচামাল পুড়ে গেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে বলে উল্লেখ করছেন তাঁরা।
তিনি আরও বলেন, আগুনের সূত্রপাত কোনো আমদানি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। রানওয়ের অ্যাপ্রনে পণ্যসামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। এর কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে সমস্যা হয়। এর দায় বিমান, ঢাকা কাস্টম হাউস ও সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টদের। নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিনের মধ্যে পণ্য অপসারণের কথা। কিন্তু সেখানে বছর ধরে পণ্য পড়ে থাকে। তবে তিনি তদন্তের স্বার্থে কোনো সংস্থার ওপর দায় দিতে চান না।
বেবিচক সূত্রে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেবিচকসহ তুরস্কের বিশেষজ্ঞ আট সদস্যের দল বিষয়টি তদন্ত করছে। এছাড়াও ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও চীনকে তদন্তের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেসব দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ দল আসবে এবং তারা তদন্ত করবে কী কারণে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটেছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক মন্তব্য রাখেন নি বেবিচক কর্তৃপক্ষ।
তবে তদন্তের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা মেরামত ও নতুন সুরক্ষা সরঞ্জাম স্থাপনে কাজ শুরু হয়েছে। আধুনিক ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম, কার্গো এলাকায় স্বয়ংক্রিয় পানি ছিটানো (sprinkler) ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বেবিচক জানিয়েছে, বিমানবন্দরের কোনো আন্তর্জাতিক বা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়েনি। মাত্র কয়েক ঘণ্টা বিলম্বের পর ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হয়। রপ্তানি কার্যক্রমও পুনরায় চালু করা হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
কার্গো পরিচালনায় যুক্ত বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক শিপিং ও এয়ারলাইন কোম্পানি বেবিচকের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো বলছে, “এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তাৎক্ষণিক সাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আস্থার বার্তাও দেন তারা।
ঘটনার মাত্র কয়েকদিন আগেই বেবিচক আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা মানে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। যুক্তরাজ্যের সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (CAA) কর্তৃক পরিচালিত সর্বশেষ নিরাপত্তা নিরীক্ষায় বাংলাদেশ ৯৭ শতাংশ স্কোর অর্জন করেছে, যা দেশের এভিয়েশন সেক্টরের জন্য একটি গর্বের অর্জন। এই অর্জন বেবিচকের সুরক্ষা-সংক্রান্ত অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফল বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। বেবিচক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কার্গো ভিলেজ ও বিমানবন্দরের প্রতিটি স্থাপনায় নিরাপত্তা পর্যালোচনা নতুন করে করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে ভবিষ্যতে বড় আকারের অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনা প্রতিরোধে “Emergency Response Simulation Center” চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “বেবিচকের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও সমন্বয় প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশের বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনা এখন অনেক বেশি প্রস্তুত ও পেশাদার।”
এমএসএম / এমএসএম
দি একমি ল্যাবরেটরিজ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারণায় ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন
ঢাকা-১১ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ
ঝিগাতলায় হোস্টেল থেকে এনসিপি নেত্রীর মরদেহ উদ্ধার
যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারে বাসে তল্লাশি চালিয়ে ১২ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
উত্তরা পূর্ব থানার বিশেষ অভিযানে ঠোঁটকাটা আলতাফসহ ১৬ জন গ্রেফতার
গণপূর্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে গণপূর্ত ঠিকাদার সমিতির মানববন্ধন
উত্তরা ১২ নং সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন
বিজয় দিবসে বিজয়ের পিঠা উৎসব :আয়োজনে উত্তরা সেক্টর- ৬ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি
গণপূর্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে গণপূর্ত ঠিকাদার সমিতির মানববন্ধন
খরচ কমিয়ে উৎপাদন বাড়াচ্ছে বায়োন্যাচারের ‘ম্যাজিকেল গ্রোথ’
বংশালে সেনাবাহিনীর অভিযানে লুট হওয়া বিদেশি পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার, ৪ জন গ্রেফতার
রাজধানীতে সেনা অভিযানে কালোবাজারি সিন্ডিকেটের দুই সদস্য গ্রেফতার