চিকিৎসক সংকট ও অব্যবস্থাপনায় হাসপাতালই যেন রোগী
জনবল সংকটে বিপর্যস্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রায় চার লাখ মানুষের সরকারি চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই হাসপাতাল। কিন্তু চিকিৎসক ও জনবল ঘাটতি থাকায় মাত্র ৬ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা, বাড়ছে বাড়তি খরচ।
হাসপাতালটিতে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও চিকিৎসক সংকটে গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সীমান্তবর্তী এ উপজেলার বাসিন্দা। এছাড়া প্রসবকালীন জটিলতায় ভোগা গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে ছুটতে হচ্ছে জেলা শহরের বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে।
অ্যানেসথেসিওলজিস্টের (অজ্ঞান করার চিকিৎসক) অভাবে এখনো চালু হয়নি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার। অথচ সিজারিয়ান অপারেশন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় এগুলো নষ্ট হওয়ার পথে। এতে ভুক্তভোগী দরিদ্র পরিবারগুলোকে বাড়তি খরচের বোঝা বইতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানায়, জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা গর্ভবতী মায়েরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণ গর্ভকালীন সেবা পেলেও, প্রসবের সময় কোনো জটিলতা দেখা দিলেই তাদের শেরপুর জেলা সদরে স্থানান্তর করা হয়। এতে একদিকে যেমন বাড়ে রোগীর ভোগান্তি, তেমনি সময়ের অপচয় ও মৃত্যুর ঝুঁকিও তৈরি হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে হাসপাতালটি ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। উদ্বোধনের পর ডায়াথার্মি মেশিন, ওটি লাইট ও জেনারেটরের মতো জরুরি যন্ত্রপাতির অভাবে অপারেশন থিয়েটার চালু করা যায়নি। পরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মো: মোকছেদুর রহমান লেবুর উদ্যোগে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে সেই সংকট দূর হয়। কিন্তু যন্ত্রপাতি পেয়েও জনবলের অভাবে অপারেশন থিয়েটারটি আজও চালু হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন মেডিক্যাল অফিসারের মধ্যে আছেন চারজন। ১৩টি পদই শূন্য। আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০ জনের মধ্যে আছে মাত্র ২ জন। অন্যদিকে একজন এক্স-রে টেকনিশিয়ান দিয়ে চলছে হাসপাতালটি। রয়েছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরও সংকট।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, জরুরি বিভাগ থেকে যাদের পরীক্ষার ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হচ্ছে, তারা বাইরে কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছুটে যাচ্ছেন। কেউ চলে যাচ্ছেন জেলা শহর শেরপুরে। আবার তাদের নিতে এসেছেন দালাল চক্রের লোকজন। আর ল্যাব, কর্মকর্তার কক্ষ সব তালা দেওয়া। ময়লা আর দুর্গন্ধে হাসপাতালে অবস্থান করায় দায়।
সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জুমরা রিসিল বলেন, মাকে নিয়ে এসেছি। জরুরি বিভাগ থেকে একটা কাগজে কয়েকটি ওষুদের নাম ও টেস্ট লিখে দিলো। একজন নারী আমাকে সঙ্গে নিয়ে বাইরের একটি ক্লিনিকে পরীক্ষা করিয়ে আনলেন। সবকিছু কিনে আনতে হলো। এখানে ঠিকমতো বিদ্যুৎ ও থাকে না! আবার মশার উৎপাতে সন্ধ্যার পর টেকাও দায়!
ভুক্তভোগী রোজিনা বেগম (৫০) বলেন, ‘উপজেলা হাসপাতালে সিজার না হওয়ার কারণে গরু বিক্রি করে আমার মেয়েকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে শেরপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজার করে নিয়ে এসেছি।’
আরেকজন রিক্সাচালক আফাজ আলী জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিনি তার মেয়েকে শেরপুর থেকে সিজার করিয়ে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, ৩০ হাজার টেহা খরচ করা আমগোর লাইগা খুব কষ্টের।’
নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহাম্মেদ বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যেই যাতে এখানে সিজারিয়ান অপারেশন ব্যবস্থা চালু করা যায়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
এমএসএম / এমএসএম
মনোনয়ন বঞ্চিত আসলাম চৌধুরীর সমর্থকদের মহাসড়ক-রেল অবরোধ
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এস এম রেজাউল ইসলাম রেজু
শার্শা আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন-তৃপ্তি
মৌলভীবাজার-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হাজী মুজিব
বিএনপির মাদারীপুর এক ও তিন আসনে প্রার্থিতা ঘোষণা
গাইবান্ধার পাঁচ টি আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত
কুমিল্লায় বিএনপি'র ৯ টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীতা ঘোষণা
চাঁদপুর জেলার বিএনপির সম্ভাব্য পাঁচ প্রার্থী
শরীয়তপুর-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাঈদ আহমেদ আসলাম
প্রথম বারের মতো ভোলা -৪ চরফ্যাশন মনপুরা আসেন মনোনয়ন পেলেন নূরুল ইসলাম নয়ন
মেহেরপুর বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মাসুদ অরুণ-আমজাদ হোসন
মৌলভীবাজার-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন মিঠু