দেশে পলিনেটের মাধ্যমে আঙুর চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব
পলিনেটের মাধ্যমে দেশে আঙুর চাষের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন নাটোরের আঙুর চাষী আমজাত হোসেন। তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগেও দেশে আঙুর চাষ তেমন একটা ছিলোনা কিন্তু এখন অনেক জেলায় আঙুর চাষ করা হচ্ছে এবং ভালো ফলন ও পাওয়া যাচ্ছে। নাটোরে আঙুর চাষে আমার সফলতা দেখে অনেকেই এখন উদ্যোগী হচ্ছে। তবে খোলা জাগায় আঙুর চাষের চেয়ে পলিনেটে আঙুর চাষ করলে ফলন অনেক ভালো হয় এবং আঙুর সুমিষ্টি হয়।
নাটোরে আঙুর চাষী আমজাত হোসেন বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আমাকে ২৫শতাংশ জমির উপর একটি পলিনেট হাউজ করে দেয়া হয়। সেখানে আমি আঙুর চাষ করে সফলতা পেয়েছি। তিনি বলেন , আমি পলিনেট এবং পলিনেটের বাইরেও আঙুর চাষ করেছি। পলিনেটের ভিতর আঙুর চাষ করলে আঙুর পোঁকা-মাকরে ধরেনা, ফল সুমিষ্টি হয়, ফলের উৎপাদন ও ভালো হয়। আঙুরে পরিমানেও বেশি হয়। তাই পলিনেট হাউজের মাধ্যমে আঙুর চাষ করলে দেশে আঙুরের বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, পলিনেট হাউসে ২৫ শতাংশ জমিতে আঙুর চাষাবাদ করতে গিয়ে গাছের চারা, মাচা, পরিচর্যাসহ যাবতীয় খরচ পড়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আঙুর বাগানে যে পরিমাণ ফল এসেছে এবং বর্তমান বাজার মূল্য অনুসারে আনুমানিক তিন থেকে চার লাখ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। আর পলিনেট হাউস তৈরি করতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে এই অর্থ আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে দেয়া হয়েছে।
আমজাত হোসেনের বাগানে সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাদা রংয়ের পলিনেট হাউসের ভেতর মাচায় ঝুলে আছে থোকায় থোকায় সুমিষ্ট আঙুর ফল। আর সবুজ পাতার মাঝে উঁকি দিচ্ছে কোথাও লাল, আবার কোথাও হলুদ-সবুজ রঙের মিশ্রণের এসব আঙুল। খেতে কোনোটা মিষ্টি, আবার কোনোটা হালকা টক-মিষ্টি। তবে এসব আঙুর দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও বেশ সুমিষ্ট।
আর আঙুর ফলের এ বাগান দেখলে যে কারো মনে হবে বিদেশের মাটিতে চাষাবাদের আঙুর ক্ষেত। আসলে এটি তা নয়, দেশের মাটিতেই এখন চাষ হচ্ছে বিদেশি জাতের আঙুর। আগে মানুষের ধারণা ছিল আঙুর একটি বিদেশি ফল, এ দেশে চাষ করলে হয় টক। কিন্তু সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্প থেকে সাহায্য সহযোগীতা পেয়েই কৃষক আমজান হোসেন আঙ্গুরের চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
শহরতলির কান্দিভিটা এলাকায় দেড় বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে রাশিয়ান বাইকুনুরসহ সাতটি জাতের আঙুর ফল চাষাবাদ করে সফল হয়েছেন তিনি। তার বাগানে গেলেই দেখা মিলবে মাচায় ঝুলে আছে থোকায় থোকায় টসটসে আঙুর। প্রতিদিন দেখতে আসেন দর্শনার্থীরা, আবার অনেক ক্রেতাও আসেন আঙুর ফল কিনতে।
কৃষি বিভাগ বলছেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী ও উন্নত মানের এই জাতের আঙুর ফল চাষাবাদে কোনো প্রকার কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। কেবলমাত্র গোবর বা জৈব সার ও মাকড় মারার জন্য ভাটিমিক ব্যবহার করেই এ ফল চাষাবাদ করা যায়। তাই ফসলে জৈব-বালাইনাশক ব্যবহারের জন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করানো হচ্ছে। পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
কৃষি উদ্যোক্তা মো. আমজাদ হোসেন জানান, গেল দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব মারফতে রাশিয়ান, ইউক্রেন, ইতালি ও অস্ট্রেলিয়া থেকে ৩৫ প্রকার জাতের আঙুরেরচারা সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে চাষাবাদ শুরু করেন। প্রথম বছরেই আঙুর চাষে সফলতা পেয়েছেন। তবে এর মধ্যে বাছাই করে সাতটি জাতের আঙুরের ফলন ভালো এবং স্বাদে মিষ্টতা পেয়েছেন। এর মধ্যে রাশিয়ান বাইকুনুর জাতটি সবচেয়ে ভালো এবং ভালো ফলন হয়েছে। এ জাতটি দেশের আবহাওয়া ও চাষাবাদের পরিবেশ উপযোগী বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, প্রায় ৫০ শতাংশ নিজস্ব জমি ও লিজকৃত ২৫ শতাংশ মিলে মোট ৭৫ শতাংশ জমিতে তিনি ৩৫ প্রজাতির আঙুর চাষ শুরু করেন। এর মধ্যে গবেষণা করে রাশিয়ান বাইকুনুর জাতসহ সাতটি জাতের আঙুরের ভালো ফলন ও খেতে সুমিষ্ট হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর পরীক্ষিত জাত দিয়ে পরে তিনি ২৫ শতাংশ জমিতে পলিনেট হাউজের মাধ্যমে একটি মাতৃবাগান তৈরি করেছেন। এ বাগানে মোট ১২০টি চারা রোপণ করেন। চারা রোপনের ৩ মাস পর ফল এসেছে।
প্রায় ছয় মাস পর থেকে তিনি ফল বিক্রি শুরু করেছেন। তার মতে রোপণ থেকে গাছের বয়স এক বছর হলে পরিপূর্ণভাবে আঙুর ফল বাজারজাত করা সম্ভব। ইতিমধ্যে তার এ আঙুর বাগানে প্রতিটি গাছে অফসিজনে ৮ থেকে ১০ কেজি করে ফল পাওয়া যাচ্ছে। সে হিসেবে ১২০টি গাছে অন্তত গড়ে ১ হাজার ২০০ কেজি বা ৩০ মণ ফল পাওয়া যাবে। বাজার মূল্য গড়ে ৩০০ টাকা কেজি দরে হিসাব করলে যার আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় কয়েক লাখ টাকা।
নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলিমা জাহান বলেন, নাটোরে অনেক বিদেশি জাতের ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। আঙুর চাষের চেষ্টা অনেকেই করেছেন। কিন্তু সফল হননি। তবে আমজাদ হোসেনের বাগানে সঠিক জাত নিরুপণ হওয়ায় এবার সুমিষ্ট আঙুরের ফলন ভালো হচ্ছে এবং খেতেও বেশ সুমিষ্ট। আঙুর চাষ আগামীতে সম্ভাবনাময় ফসল হবে বলে মনে করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
এমএসএম / এমএসএম
ভবন দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর, ফায়ার সার্ভিসের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
দেশে পলিনেটের মাধ্যমে আঙুর চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব
জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ঘোষণা
১৩ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা -৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী তানভীর আহমেদ রবিন
ফারইস্ট লাইফের টাকা আত্মসাৎকারি নজরুল ইসলাম আটক
গ্রাহকদের ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও এম.এম. সেইফ সিকিউরিটির মালিক মাসুদ রানা
আনন্দঘন বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা'র অষ্টম বর্ষ পূর্তি ও নবম বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠান
বাড্ডায় বাসা থেকে দম্পতির অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
সাভারে ‘শিরিন মেকওভার অ্যান্ড বিউটি সেলন’-এর উদ্বোধন
‘নো ওয়েজ বোর্ড নো মিডিয়া’ নীতি কার্যকরসহ ৩৯ দাবি সাংবাদিকদের
কোম্পানীগঞ্জ সড়কে অবৈধ পার্কিংয়ে তীব্র যানজট
উত্তরায় বেগম খালেদা জিয়া ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫-এর শুভ উদ্বোধন করেন বিএনপি নেতা আফাজ উদ্দিন