অনুমোদনবিহীন ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার, সড়কে বাড়ছে ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হলো দক্ষ চালকের ঘাটতি, আর এই ঘাটতির সুযোগ নিয়ে রাজধানী ঢাকা শহরের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে হাজারো অনুমোদনবিহীন ড্রাইভিং ট্রেনিং সেন্টার। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে অনুমোদিত ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলের সংখ্যা মাত্র ১৪৯টি। অথচ ঢাকার উত্তরা, মিরপুর, মতিঝিল, বনশ্রী, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ড্রেনের উপর দোকান কিংবা ফুটপাত দখল করে স্থাপিত হয়েছে অসংখ্য "টিনের ঘরের" ট্রেনিং সেন্টার, যারা নামমাত্র হাজার টাকার বিনিময়ে চালক তৈরি করছে।
উত্তরা পশ্চিম ট্রাফিক বিভাগের একজন ইন্সপেক্টর এই অবৈধ কার্যকলাপের বিষয়ে বলেন, “এগুলো দেখার দায়িত্ব বিআরটিএর। তবে যৌথ অভিযানে হলে আমরা সহায়তা করতে প্রস্তুত।” অন্যদিকে বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভাব ও জনবল সংকটের কারণে নিয়মিত অভিযান সম্ভব হচ্ছে না।
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮–এর ৬৩ ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও, যেখানে অনুমতি ছাড়া ট্রেনিং সেন্টার চালালে জেল ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে, সেই আইন কার্যকর না হওয়ায় বেআইনি সেন্টারগুলো দাপটের সাথে চলছে। রাজধানীর একাধিক অনুমোদিত ট্রেনিং স্কুল ঘুরে দেখা গেছে— তাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, অপর পাশেই অবৈধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো মাত্র ৩,০০০—৩,৫০০ টাকা অ্যাড দিয়ে “চালক বানানোর” প্রলোভন দেখাচ্ছে।
উত্তরার একটি অনুমোদিত ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অভিযোগ করেন, “আমরা ক্লাসরুম, অফিস, লাইসেন্স, ট্রেইনার, কর—সব মেনটেইন করি। তাই কম দামে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। অথচ ফ্লাইওভারের নিচে টিনের দোকান খুলে কেউ চালক বানিয়ে ফেলছে। এতে সড়কে ঝুঁকি বাড়ছে।” অভিযোগ উঠেছে— এসব অবৈধ ট্রেনিং সেন্টারের অধিকাংশ ছাত্র মৌলিক ট্রাফিক জ্ঞানই রাখেন না। সিগন্যাল, রোড সাইন, লেন ডিসিপ্লিন— কিছুই শেখানো হয় না। শুধু স্টিয়ারিং ধরার প্রশিক্ষণ পেলেই রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামছেন তারা। আর তার ফলেই বাড়ছে দুর্ঘটনা।
অনুমোদিত ড্রাইভিং স্কুল মালিকদের দাবি— বিআরটিএ শক্ত অবস্থানে না গেলে ও এই অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ না করলে দক্ষ চালক তৈরি সম্ভব নয়, ফলে দেশের সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও নাজুক হবে। তারা নিম্নলিখিত দাবিগুলো জানান:
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে অবশ্যই ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা।
বিআরটিএর অনুমোদিত ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলগুলোকে সিলেবাস তৈরি করে দেওয়া।
প্রতিনিয়ত বিআরটিএর অনুমোদিত ড্রাইভিং স্কুলগুলো বিআরটিএ মনিটরিং এর আওতাভুক্ত করা।
অনুমোদিত ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলগুলোর নির্ধারিত ফি নিশ্চিত করা। তাহলে প্রত্যেকটি অনুমোদিত ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিক ও সুশৃঙ্খল ভাবে চালক তৈরি করতে পারবে বলে আশা ব্যক্ত করেন অনুমতিতে ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুলের মালিকরা।
দুর্ঘটনার শিকার হয়ে স্বজন হারানো সাধারণ মানুষের একটাই প্রশ্ন—“আইন থাকতে কেন বাস্তবায়ন নেই?” সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দক্ষ, সচেতন ও প্রশিক্ষিত চালক তৈরি করতে হলে এখনই অবৈধ ড্রাইভিং সেন্টারগুলো বন্ধ এবং নিয়মিত মনিটরিং জরুরি। এ বিষয়ে উত্তরা বিআরটিএ মেট্রো-৩ এর উপ-পরিচালক মোঃ কাজী মোরসালিন বলেন, এটার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমাদের এনফোর্সমেন্ট স্যার, যিনি হেডকোয়ার্টারে রয়েছেন, ওনাদের জানালে ওনারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করবেন। আমাদের নিজস্ব কোনো ফোর্স নেই, হেডকোয়ার্টার থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে থাকে। অবৈধ ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল এর বিষয়ে জানতে চাইলে বিআরটিএ (হেডকোয়ার্টার) এর এনফোর্সমেন্ট শাখার উপ-পরিচালক (উপসচিব) হেমায়েত উদ্দিন বলেন, আমি বুজতে পেরেছি আপনার প্রশ্ন, আপনার দৃষ্টিতে যেই ধরনের অসংগতি চোখে পরেছে, আমার এই নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপ রয়েছে, আপনি তথ্যগুলো দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন, আমরা ব্যবস্থা নিব।
এমএসএম / এমএসএম
উৎসব মুখর পরিবেশে ড্যাবের নুতন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত
কে এই প্রতারক নাহিদ,পরিচয় ও তার পেশা কি ?
রাজউকের জোন ৬/২-এ ভবন নির্মাণে অনিয়ম দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের না দেখার ভান
মনোহরদী থানার ওসি দুলাল আকন্দের বিরুদ্ধে আইজিপির কাছে অভিযোগ
ঢাকা-১২ আসনে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে উত্তর বিএনপির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত
ট্রাভেল এজেন্সির অধ্যাদেশ-২৫-এ উদ্বেগ আটাব সদস্যদের
যৌন হয়রানির মামলায় ঢাবির শিক্ষক এরশাদ হালিম কারাগারে
উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে সেবা নিলেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ
১৫ নভেম্বর উদ্বোধন হচ্ছে বিআইডব্লিউটিসির শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার ‘পি এস মাহসুদ’
উৎসবমুখর পরিবেশে ড্যাবের সাংগঠনিক মাসের সূচনা
রাজউক চতুর্থশ্রেনীর কর্মচারীর কোটি টাকার সম্পদ
কার্গো ভিলেজ এখনও ধ্বংসস্তূপ: অভিযোগ উঠেছে সংস্থা গুলোর সমন্বয়হীনতা নিয়ে