ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভবন থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল নেই
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভবন থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল নেই, এ কারনে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। সেইসাথে হাসপাতালের বহিঃবিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে আসে গড়ে প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ রোগী। হাসপাতালের সুন্দর চকচকে ভবন থাকলেও নেই পর্যাপ্ত জনবল। ফলে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য রোগীকে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, ৫০০ শয্যা অনুযায়ী টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্টাফদের পদসংখ্যা খুব কম। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদেরকে মানসম্মত সেবা প্রদান করতে চাইলে চিকিৎসক ও স্টাফদের পদসংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। এরমধ্যে চিকিৎসক প্রয়োজন ২০০ জন কিন্তু এখানে রয়েছে সর্বমোট ৫৫ জন। এই ৫৫ জনের মধ্যে ১ জনের পোস্ট যোগদান না করার কারনে ফাঁকা রয়েছে, বাকি ৫৪ জনের মধ্যে বহিঃবিভাগে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেন ২২ জন ডাক্তার, ইমারজেন্সিতে থাকেন ৫ জন এবং অন্তঃবিভাগে ডিউটি করেন বাকী ২৭ জন ডাক্তার। নার্স প্রয়োজন ৩০০জন, এই হাসপাতালে রয়েছেন ১৬৫ জন। পরিচ্ছন্নতা কর্মী প্রয়োজন ২০০ জন কিন্তু সর্বমোট আছে ৯০ জন। নিরাপত্তা কর্মী প্রয়োজন কমপক্ষে ৬০ জন কিন্তু এখানে রয়েছে ২৮ জন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দরকার ৬৫-৭০ জন, এখানে আছে ৩৮জন। হাসপাতালে সর্বমোট ১৪ টি ওয়ার্ড ও ৬ টি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে, তবে জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য কোনো এ্যাম্বুলেন্স নেই এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্যও প্রয়োজনীয় কোনো গাড়ি নেই। টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে মেডিসিন, গাইনী ও প্রসূতি, সার্জারী, শিশু, চর্ম, নাক-কান-গলা, চক্ষু বিভাগ, দন্ত বিভাগ, ফিজিওথেরাপী, শিশু বিকাশ কেন্দ্র ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা চালু রয়েছে। জরুরী বিভাগে এর আগে একদিন পরপর রোগী ভর্তি নেয়া হলেও সম্প্রতি পুরোপুরি অর্থাৎ সপ্তাহের ৭ দিনই রোগী ভর্তি করা হচ্ছে।
হাসপাতালের অন্তঃ বিভাগে মেডিসিন বিভাগের তিনটি ইউনিটে বেড সংখ্যা ১১০ টি, তবে বেড সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকে অধিকাংশ সময়। গাইনী বিভাগে বেড সংখ্যা ৪০ টি এবং গাইনী ওয়ার্ডের বিভিন্ন অপারেশন চালু আছে। প্রসূতি বিভাগে বেড সংখ্যা ৪০টি। এই ওয়ার্ডে স্বাভাবিক প্রসব ও সিজার অপারেশন চালু আছে। সার্জারী বিভাগে বেড সংখ্যা ৭০টি, সার্জারী অপারেশন চালু রয়েছে। শিশু বিভাগ বেড সংখ্যা ৫০টি। কার্ডিওলজি বিভাগে বেড সংখ্যা ১৮টি, এই ওয়ার্ড চালু থাকলেও যান্ত্রিক ত্রুটি ও জনবলের অভাবে ক্যাথল্যাব চালু নাই। নেফ্রোলজি বিভাগে বেড সংখ্যা ১২টি, এই ওয়ার্ড চালু আছে কিন্তু ডায়ালাইসিস এর ৫০ টি বেড চালুর জন্য অবকাঠামো মেরামত চলমান আছে। অর্থোপেডিক্স বিভাগে বেড সংখ্যা ৭০টি। ডেন্টাল বিভাগে রোগী ভর্তি রাখা হয় না। আই.সি.ইউ ওয়ার্ডে বেড সংখ্যা ১০টি, কিন্তু জনবল ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই না থাকায় চালু নাই। এই হাসপাতালে ৮০ টি কেবিন আছে, কিন্তু জনবল এর অভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালে রক্তের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা, এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, ম্যামোগ্রাফী, ই.সি.জি, ইকো কার্ডিওগ্রাফী ও ইটিটি, আল্টা সনোগ্রাফী, ডোপ টেস্ট চালু আছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এম. আর.আই সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি ভর্তি রোগীদের খাবার ও ওষধ সরবরাহ করা হয়, কিন্তু খাবারের মান নিয়ে অনেক রোগীই অভিযোগ করেন। রোগীদের সাপ্লাই ঔষধ না পাওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায় প্রতিনিয়ত। হাসপাতালের চত্বরে দালালদের দৌরাত্ম খুব, প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন রোগী ও রোগীর স্বজনরা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন দালাল প্রতিরোধে প্রশাসন থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় মাঝে মাঝেই। গত অক্টোবরের শুরুতে মধ্য রাতে টাঙ্গাইল মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্ট নিয়ে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হোন। ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বলেন। হাসপাতালে ইসিজি সেবা চালু আছে বলে এখানেই করানো হয়। কিন্তু যিনি মেশিন অপারেট করছিলেন তিনি কোনো ডাক্তার বা নার্স নন। তিনি হাসপাতালের আউট সোর্সিং পরিচ্ছন্নতা কর্মী। এছাড়াও গত অক্টোবরের ৩ তারিখে বুকে ব্যথা নিয়ে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হোন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির জুবায়ের আল মাহমুদ রনি। হার্ট এ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়। তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা দাবি করেন সঠিক সময়ে ডাক্তার ট্রিটমেন্ট করেননি এবং ডাক্তার ছিলোনা বলেও অভিযোগ করেন। তাছাড়াও চিকিৎসা অবহেলার কারনে মৃত্যু হয়েছে অভিযোগে কর্তৃপক্ষের সাথে তর্কে জড়িয়ে বাক বিতন্ডা করেন।
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস জানান, জনবল ঘাটতি নিয়েই চলছে, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সেই সাথে জনবলের অভাবের কারণেই কয়েকটা ওয়ার্ড বিশেষ করে অর্থোপেডিক্স, আই ইএনটি, আইসিইউ, এগুলো চালু করা সম্ভব হয়নি। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রেক্ষিতে পদ সৃষ্টি করে লোকবল বাড়ালে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম চালু করা সম্ভব এবং চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা উপযুক্ত সেবা পাবেন। জনবল সৃষ্টি এবং পদায়নের জন্য মন্ত্রণালয় বরাবর পত্র লিখেছি, যদি সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়, জনবল পদ সৃষ্টি এবং পদায়ন করে তাহলে হাসপাতালের সকল ডিপার্টমেন্ট চালু করা যাবে। তখন রোগীরা পর্যাপ্ত সেবা পাবে।
এমএসএম / এমএসএম
নবীনগরে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এম. এ. মান্নানের নির্বাচনী জনসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত
কুমিল্লায় ইমাম–খতীব সম্মেলন রোববার,প্রধান অতিথি ধর্ম উপদেষ্টা
নন্দীগ্রামে ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া প্রতিহতের আহ্বান সাংবাদিকদের
লাকসামে জামায়াত প্রার্থী সরওয়ারের বিশাল হোন্ডা র্যালী
মনপুরায় সফরকালে সুধীবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেন জেলা প্রশাসক
দুমকীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি-নেত্রকোনায়-জামায়াত নেতা মতিউর রহমান আকন্দ
ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক গ্রেপ্তার
বাস-ইজিবাইকের সংঘর্ষে নিহত ৪
নোয়াখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চিকিৎসাধীন সাবেক ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যু
কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, এমডি রাব্বিক হাসানের বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতাদের সরব অভিযোগ