ঢাকা রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

পুতিনের ভারত সফরে কী বার্তা পেল বিশ্ব


রায়হান আহমেদ তপাদার  photo রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশিত: ৭-১২-২০২৫ দুপুর ১১:৫৩

সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি পর্যবেক্ষণে এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনেক নীতির কারণেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি থেকে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ক্ষমতাসীন হওয়ার পরপরই ওন্স আটলান্টিক চুক্তি থেকে সরে আসা, মধ্যপ্রাচ্য তথা সিরিয়া নীতি এবং সেই সঙ্গে সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র-সংক্রান্ত ছয় জাতি আলোচনা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করার ফলে ইউরোপের মিত্ররাও যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজেদের মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাদের আঞ্চলিক সুরক্ষার নতুন কৌশল অবলম্বনে ব্যস্ত। এমতাবস্থায় ভারত এ ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি অবলম্বনই শ্রেয় মনে করছে। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীনের সঙ্গেও সম্পর্কের উন্নতি ঘটছে রাশিয়ার। তথ্যপ্রযুক্তি বিনিময়ের মতো স্পর্শকাতর সম্পর্কে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে তাদের। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বৃদ্ধির কারণেই রাশিয়া এ উদ্যোগ নিয়েছে। এমনকি, দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে সরাসরি চীনের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে রাশিয়া। এখানে যৌথ সামরিক মহড়ায়ও চীনের সঙ্গে অংশ নেয় তারা। এখন চীনের মিত্র পাকিস্তানের প্রতি হৃদ্যতার হাত বাড়াচ্ছে রাশিয়া।পুতিনের ভারত সফর নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায়, দীর্ঘ সময় বিরতির পর ভারতের পুরনো মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে নতুন সম্পর্কোন্নয়ন কী ধরনের তাৎপর্য বহন করে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এর প্রভাব এবং সব শেষে আঞ্চলিক রাজনীতির ক্ষেত্রে এটা কী বার্তা বহন করতে পারে। পুতিনের হঠাৎ করে ভারতমুখী হওয়া বা ভারতের রাশিয়ামুখী হওয়ার কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে, সেই বিষয়ে। বিগত দুই দশকের বেশি সময় ধরে চলে আসা ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্ষা করতে গিয়ে ভারত যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে। অন্যদিকে সামরিক দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে বলে মনে করা হয়। 
এ সময়ের মধ্যে ভারতের অন্যতম প্রতিবেশী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের অনেকটাই উন্নতি ঘটেছে। পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় রাশিয়া নাকি চীন, কোন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ হুমকি হয়ে দাঁড়াবে, এ নিয়ে যখন বিশ্ব রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক বিশ্লেষণ চলে, সেই সময়ে এই দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক তথা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর কোরিয়া নীতিসহ অপরাপর বিষয়াবলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একমেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার অস্তিত্বে বড় ধরনের ধাক্কা দেয়। এমন অবস্থায় এশিয়ায় ভারতের বিকল্প হিসেবে চীনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের সমান্তরালে নতুন একটি সম্পর্ক সৃষ্টির তাগিদ দেয়। দুই দেশের মধ্যে এই রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট অবশ্য সই হয়ে গিয়েছিল গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি। তবে সেটি সম্প্রতি রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ স্টেট ড্যুমা'র অনুমোদন পেল। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে 'সার্বিক এবং কৌশলগত' বলে বর্ণনা করা হয়েছে এবং এই সম্পর্ককে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় তার দেশ, সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে। যে চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, তা পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বাড়াবে এবং নিঃসন্দেহে সম্পর্ক আরও উন্নত করবে। ভারত আর রাশিয়ার মধ্যে যে রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট বা 'রেলোস' চুক্তি হয়েছে, তা মূলত এক দেশ অপর দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্য, সরঞ্জাম, যুদ্ধ জাহাজ, সামরিক বিমান পাঠানোর কার্যপদ্ধতি। শুধু যে বাহিনীর সদস্যদের অথবা সরঞ্জাম একটি দেশ অপর দেশে পাঠাতে পারবে 'রেলোস' চুক্তি অনুযায়ী, তা নয়। অপর দেশটিতে গিয়ে সেখানকার সামরিক পরিকাঠামোও ব্যবহার করা যাবে। যৌথ মহড়া, প্রশিক্ষণ, মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে এই চুক্তি অনুযায়ী সামরিক সহায়তা করবে একে অপরকে।
রাশিয়ার ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ডেনিস মান্তুরোভ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সামরিক সহযোগিতা একটি কৌশল। এর পরের ধাপে কারিগরি এবং শিল্পোদ্যোগ পর্যায়ে গভীর সহযোগিতার দিকে এগোবে দুটি দেশ। ওই সাক্ষাৎকারে মন্তুরোভ বলেছেন যে দুটি দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভগুলো হলো যৌথভাবে উদ্ভাবন ও উৎপাদন এবং স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে সরঞ্জামগুলোকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পদ্ধতি। তিনি এও বলেছেন যে ভারতের মোট সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে ৩০ শতাংশেরও বেশি মস্কো দিয়ে থাকে এবং গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এটাই চলে আসছে। তাই দুটি দেশের মধ্যে সামরিক-কারিগরি সহযোগিতার কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই সহযোগিতা প্রতিবছরই আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হচ্ছে।দিল্লি সফরকালে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় সুখোই- ফিফটি সেভেন যুদ্ধবিমান ভারতকে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এগুলো সব থেকে আধুনিক যুদ্ধবিমান। ভারতের যে ২৯টি যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন আছে, তার বেশিরভাগই রাশিয়ার তৈরি সুখোই-থার্টি। এখন তারা আরও আধুনিক সুখোই-ফিফটি সেভেনও দিতে চাইছে ভারতকে, এমনটাই দুজন ভারতীয় কর্মকর্তার সূত্র উদ্ধৃত করা হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৮ সালের এক চুক্তি অনুযায়ী ভারত ইতোমধ্যেই তিনটি এস-ফোর হান্ড্রেড পেয়ে গেছে, আরও দুটি পাওনা আছে তাদের। রাশিয়ার সঙ্গে ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কতটা নিবিড় করতে চায়, সেটা দিল্লির হাতেই ছেড়ে দিয়েছে মস্কো, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের দিগন্ত যেমন বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, ভারতের ক্ষেত্রেও তাই। তবে ওই সম্পর্ক কতটা বিস্তৃত হবে, তা নির্ভর করছে ভারতের ওপরে। 
চীন, ভারতের বিশেষ কৌশলগত সহযোগী। চীনের সঙ্গে উচ্চস্তরের সহযোগিতা রয়েছে, যেমনটা আছে ভারতের সঙ্গেও। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতের প্রতিও রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি একই। কিন্তু ভারত যতটা এগিয়ে আসবে, রাশিয়াও ততদূর পর্যন্ত এগিয়ে যেতে প্রস্তুত। ভারত যতদূর পর্যন্ত সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে,রাশিয়াও তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ভারতের ওপরে চাপ আছে। এই চাপের মধ্যেই দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সুরক্ষিত রাখার দরকার আছে। আমরা বুঝতে পারি যে ভারতের ওপরে চাপ আছে। এজন্যই তাদের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে  খুব সাবধান থাকতে হবে। এই সম্পর্ক কোনো তৃতীয় দেশের প্রভাব-মুক্ত থাকা উচিত। ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভারতের সঙ্গে তাদের কৌশলগত সহযোগিতায় কোনও সীমা থাকবে না। এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য। চীনের ওপরে যাতে ভারতের নির্ভরতায় ভারসাম্য বজায় থাকে, তাই কৌশলগত দিক থেকে ভারতকেও একই পর্যায়ে রাখা হলো।যদি ভারত এই প্রস্তাব আংশিকভাবেও মেনে নয়, তাহলে এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণটাই বদলে যাবে, যার মধ্যে থাকবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কূটনীতি, ব্রিকস প্লাস, জ্বালানি সরবরাহ এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভারসাম্য অনেক কিছুই আবারও বদলে যাবে। জিন্দাল স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ডিন এবং ফ্রেন্ডস: ইন্ডিয়াজ ক্লোজেস্ট স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারস' বইয়ের লেখক শ্রীরাম চাউলিয়া বলছেন, রাশিয়া ভারতের কোর্টে বল রাখলেও রাশিয়ার এই আশা পূরণ হবে না। শ্রীরাম চাউলিয়া বলেন,'রাশিয়া ও চীনের মধ্যে জোট আসলে আমেরিকা-বিরোধী। ভারত এই জোটের অংশ হতে চায় না। চীন ও রাশিয়া উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করে, কিন্তু ভারত তা করে না।ভারতের উন্নয়ন পথে আমেরিকার প্রয়োজন। 
ভারতে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর আমরা লক্ষ্য করেছি, তিনি চীনের সঙ্গে নতুন করে সহযোগীদের সম্পর্কে উপনীত হতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন।এরই অংশ হিসেবে তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পরপরই চীন সফর করেছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও ভারত সফরের শুরু করেছেন মোদির রাজ্য গুজরাট দিয়ে, যা সম্পর্কোন্নয়নে দুই দেশের অঙ্গীকারের স্মারক। ভারত ও চীন অনেক দিন ধরেই দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরো মজবুত করার আগ্রহ দেখিয়েছে। এশিয়ার এই দুই বৃহত্তম দেশই ব্রিকস ও বিসিআইএমের মতো ফোরামের সদস্য,যারা নতুন একটি বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নেতৃত্ব দিতে বদ্ধপরিকর। পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণে আমরা এটাই বলতে পারি যে, রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিকে চীন এক ধরনের শক্তির ভারসাম্য কিংবা নেহাতই ভারতের প্রতিরক্ষার অধিকার হিসেবে বিবেচনা করতে পারে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারে রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ ও সামরিক হেলিকপ্টার ক্রয়ের বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। বৈঠকে ভারতে রাশিয়ার দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, ২০২২ সালে ভারতের প্রথম মহাকাশ মিশনে নভোচারী পাঠানোর জন্য রাশিয়ায় তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়ও আলোচনার টেবিলে রয়েছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এই দুই দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক বজায় রাখার দুরূহ এক কৌশলের পথে হাঁটছে ভারত। ভারত আশা করছে, চীনের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে যুক্তরাষ্ট্র অবরোধ থেকে ভারতকে ছাড় দেবে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন যে ইঙ্গিত দিয়েছে, তাতে অবরোধ থেকে অব্যাহতি পাওয়া দুষ্কর। অবশ্য চীনের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ব এবং রাশিয়ার চাপ মোকাবিলায় নয়াদিল্লির সঙ্গে জোরদার সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি জটিল পরিস্থিতিতে রয়েছে। চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক উত্থান এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার সঙ্গে এ ধরনের চুক্তিতে উপনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে চীন-রাশিয়া দ্বৈরথ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা তার মিত্রদের জন্য যতটা উদ্বেগের কারণ ছিল, সম্প্রতি ভারত-রাশিয়ার মধ্যকার একই চুক্তি কি একই ধরনের উদ্বেগে নতুন মাত্রা যুক্ত করল নাকি এর ভিন্ন কোনো কারণ থাকতে পারে, সেটিও বিশ্লেষণের দাবি রাখে। 
এদিকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের ক্রমবধর্মান কৌশলগত সম্পর্কের কারণেই ঐতিহাসিক বন্ধুত্বকে ভুলে নতুন সম্পর্কের দিকে ঝুঁকছে রুশরা। এ অঞ্চলে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধনে ভবিষ্যতে ভারতের সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে করেন ভারতীয় কূটনীতিকরা। তাদের দাবি, ভারতের পররাষ্ট্রনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো রাশিয়া। আর তাই রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের নতুন চুক্তি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এটিকে একান্তই ভারতের সার্বভৌম অধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই ভারতের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে নাকি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। অবশ্য সাম্প্রতিককালে ওম্প প্রশাসন মাথা গরম করে এমন অনেক সিদ্ধান্তই নিয়েছে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে চীন এবং রাশিয়ার অবস্থানকেই সুসংহত করেছে। ভারতের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যদি নিষেধাজ্ঞার মতো কোনো ঝুঁকিতে যায়, তবে তা তাদের জন্য যেমন শক্তির লড়াইকে কঠিন করে তুলবে, অন্যদিকে না গেলে এ ধরনের অস্ত্রের বিস্তারকে অপরাপর দেশের জন্যও সহজলভ্য করে তুলবে। পরিস্থিতি বলছে, একে একে রাশিয়া কঠিন চ্যালেঞ্জের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। মোদি-পুতিনের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নিরিখে এশিয়ার পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী আকার ধারণ করতে যাচ্ছে, সেটাও একটি ভিন্নতর আলোচনার বিষয়। চীন ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘকালীন বৈরী সম্পর্ক নিরসনে এ ধরনের উদ্যোগ কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখবে নাকি ভবিষ্যতে বৈরিতাকেই আরো উসকে দেবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক, যুক্তরাজ্য 

Aminur / Aminur