কেরুজ চিনিকলে আলোচিত ১০৪ শ্রমিক মরসুমি থেকে স্থায়ীকরণ বানিজ্য ফেঁসে গেলেন সাবেক এমডি মোশারফ ও ৫ জিএম সহ ১০ কর্মকর্তা
কেরুজ চিনিকলে ১০৪ জন শ্রমিককে মরসুমি থেকে স্থায়ীকরণ ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনা-সমলোচনার কেন্দ্র-বিন্দুতে পরিনত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা থেকে শুরু করে মন্ত্রনালয় ও সদর দপ্তরে অভিযোগের ঘটনাও ঘটে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত একাধীক তদন্ত কমিটি কেরুতে এসে করেছেন তদন্ত। সকল কমিটির প্রতিবেদন সমন্বয়ক্রমে অবশেষে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে সদর দপ্তর কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তে ফেঁসে গেছেন কেরুজ সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন, ততকালীন ৫ মহাব্যবস্থাপক সহ ১০ কর্মকর্তা। জানা গেছে, দেশের অন্যতম ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকলে এক যুগ পর ২০২৩ সালের ১৫ মে ১০৪ জন মরসুমি শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়। ওই প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই বিভিন্ন অভিযোগ উঠে। ওই মাসেরই ১৩ ১৪ তারিখে পরিক্ষা নেয়া হয় প্রার্থীদের। ১৪০ জন প্রার্থী পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করলেও ১০৪ জনকে স্থায়ীকরণ করা হয়। পরীক্ষা নেয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন থেকে জনবল স্থায়ীকরণের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার একটি নির্দেশনা জারি করা হলেও কর্তৃপক্ষ তা না মেনে নিজ নিজ পদে জনবল স্থায়ী করার জন্য চিঠি ইস্যু করে। অভিযোগ ওঠে, ঘুষ-বাণিজ্যের কারণে কেরু চিনিকলে তড়িঘড়ি করে ওই সকল পদে স্থায়ীকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। স্থায়ীকরণে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মানায় কোম্পানির ততকালীণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকে মোশারফ হোসেনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন কারখানার মরসুমি ফিল্টার হেলপার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাবুল আকতার। নিয়োগের ব্যাপারে লিখিত ভাবে শিল্প মন্ত্রনালয় ও চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন মিলের মরসুমি সিনিয়র ক্রয় করনীক মহিদুল ইসলাম। সূত্র থেকে জানা গেছে, স্থায়ী লোকবলের সংকট থাকায় ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ লোকবল চেয়ে নীতিমালা প্রস্তুত করে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনে পাঠানো হয় কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ থেকে। এরপর সদর দপ্তর ২৫ মার্চ শূন্য পদ পূরণে নিয়োগের আহ্বান জানায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেন ২ এপ্রিল স্থায়ীকরণ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। তবে বিজ্ঞপ্তিটি সংবাদপত্রে না দিয়ে শুধু নোটিশ বোর্ডে দেয়া হয়। ২৪ এপ্রিল আবেদনকারীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেন সদর দপ্তরের প্রতিনিধি সাইফুল আলম। ১৩ ও ১৪ মে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন ১৪০ জন শ্রমিক-কর্মচারী। ১৫ মে ১০৪ জনকে স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয়। ঠিক ওই দিনই কেরু সহ সব চিনিকলে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করার নির্দেশনা দেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ততকালীন সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়ছার। তবে কেরুজ এমডির স্বাক্ষরিত চিঠি স্থায়ী করা শ্রমিক-কর্মচারীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ওই দিনই তাঁদের যোগদান করানো হয় কৌশলে। এরপর করপোরেশনের ততকালীন চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম চিঠি দিয়ে কেরুজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনকে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। ওই নিয়োগকে কেন্দ্র করে অভিযোগ উঠে, বিধান থাকা সত্ত্বেও জনবল নিয়োগের জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। শ্রমিকদের কাছ থেকে জন প্রতি ৫ থেকে ৯ লাখ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠে। সে সময় ১০৪ জন ভাগাভাগি করে নেন ৫ জন। ফলে অর্থবানিজ্য ওই ৫ জনরই হয়েছে বলে মুখে মুখে শোনা যায়। এ দিকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আদেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। অনিয়ম খতিয়ে দেখতে শিল্প মন্ত্রণালয় ও সদর দপ্তর আলাদাভাবে গঠন করে তদন্ত কমিটি। এ পর্যন্ত পৃথক দুটি কমিটি ৫ দফায় কেরুতে এসে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছেন। সকল প্রতিবেদন সমন্বয়ের মাধ্যমে অবশেষে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। গত ১০ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রশিদুল হাসান স্বাক্ষরিত পত্রে জানা গেছে, ১০৪ স্থায়ীকরণ (নিয়োগ) ঘটনায় অভিযুক্ত কেরুজ সাবেক ব্যভস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন, সাবেক এডিএম ইউসুফ আলী, সদর দপ্তরের ততকালীন প্রতিনিধি বর্তমানে কুষ্টিয়া চিনিকলের এডিএম সাইফুল আলম, বর্তমানে কেরুজ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আব্দুছ ছাত্তার, মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) সুমন সাহা, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভূইয়া, মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারী) রাজিবুল হাসান, পরিবহন বিভাগের প্রকৌশলী আবু সাঈদ, খামার ব্যবস্থাপক সুমন কুমার সাহা ও প্রশাসন বিভাগের আলআমিনকে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ, তার জবাব, তদন্ত প্রতিবেদন, কারণ দর্শানোর জবাব ও বিভাগীয় মামলাদ্বয়ের সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনায় তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা ১৯৮৯ সালের প্রবিধি ৩৮ এর ক ও খ অনুযায়ী যথাক্রমে দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং অসদারচণের অভিযোগ সন্দেহতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় আগামি ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বেতন বর্ধন স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া মোশারফ হোসেন, সাইফুল আলম, ইউসুফ আলী ও আলআমিনের বেতন বর্ধন স্থগিতের পাশাপাশি প্রত্যেক নিয়োগকালীন বেতনের আওতায় নেয়া হয়েছে।
এমএসএম / এমএসএম
বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথে মইনুল বাকরের মতবিনিময়
তানোরে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন
বিজয়ের চেতনায় মুখর বাঘা: তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলার শুভ উদ্বোধন
তারুণ্যের উৎসবে বারি’র প্রযুক্তি প্রদর্শনী এবং কর্মশালা
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী
সিংগাইরে শহীদ আনিস রমিজ ও শরীফের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ : শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও আলোচনা সভা
ধামইরহাটে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ৩দিন ব্যাপী বিজয় মেলার উদ্বোধন
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে সকল আন্দোলন সংগ্রামে সাংবাদিকদের ভূমিকা প্রশংসনীয়-ড.সরওয়ার সিদ্দিকী
শ্রীমঙ্গলে এবার হচ্ছে না হারমোনি ফেস্টিভ্যাল
অষ্টগ্রামের কাস্তুলে ইউপি সদস্য জামাল ভূইয়ার গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধনে উত্তাল অষ্টগ্রাম
কলমাকান্দায় ডোবার পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ভেড়ামারা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের কেয়ারটেকার ৪৮ মাসেও বেতন পাননি