কমলগঞ্জে দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌঁড়ঝাঁপ

 মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তার আগেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। গণসংযোগ এর পাশাপাশি করছেন ওঠান বৈঠক। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে করছেন জোর লবিং। প্রতিদিন গণসংযোগ আর গাড়ির বহন নিয়ে শোডাউন করছেন নির্বাচনী এলাকায়। শারদীয় পূজার সময়ে মন্দিরে মন্দিরে শুভেচ্ছা বিল বোর্ড টাঙিয়ে জানিয়েছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বার্তা।

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। এ জন্য আওয়ামী লীগের নৌকার কান্ডারি হতে দলের প্রবীণ নেতাদের সাথে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী নবীন প্রার্থীরাও  ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এদের মধ্যে নবীন দুই যুবলীগ নেতা নৌকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বোর্ড এর সিদ্ধান্তে তৃণমূলের ভোটের ওপর দলীয় প্রার্থী হওয়ার প্রাথমিক মানদন্ড নির্ধারণ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। তারপরও নৌকার কান্ডারি হওয়া নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের ওপর। তাই প্রার্থী হতে আগ্রহীরা ইতিমধ্যে মনোনয়ন পেতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা ,জেলা সদর ও কেন্দ্রীয় লবিং করছেন। অনেকে আবার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন।

কমলগঞ্জে গত ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ৯ ইউনিয়নের মধ্যে ৭টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টিতে বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র থেকে বিজয়ী হন। উপজেলায় আওয়ামী লীগ, বিএনপিও সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সমাজসেবীরা ইউপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। বিএনপি যেসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে আসন্ন নির্বাচনে যারা অংশ গ্রহন করবেন তারা নিববে প্রচারনা করছেন। আর আওয়ামীলীগের প্রার্থী হতে আগ্রহীরা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজেদের ছবি সম্ভলিত পোষ্টার, ব্যানার টাঙিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারনা চালিয়ে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের নেতা ও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় হাট-বাজারের বিভিন্ন দোকানে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন থেকেই গ্রামে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, মসজিদে ও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পেতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা ,জেলা সদর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে ঘোরাঘুরি ও দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থীত প্রার্থীরা ভোটের আগেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়াকেই বেশী প্রধান্য দিচ্ছেন। মেম্বার ও মহিলা মেম্বার প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। এই কার্যক্রমে প্রায় ৩ শতাধিক প্রার্থী নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশি গতবারের চেয়ে এবার তুলনামূলক কম। নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ২৯ জনের নাম এখন পর্যন্ত শুনা যাচ্ছে। এ সংখ্যা তফসিল ঘোষণার পর বাড়তে পারে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিশ্বাস এবার জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী অপেক্ষাকৃত কম হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আছলম ইকবাল মিলন বলেন, আমরা ঐকবদ্ধ। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তিনি যাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করবেন তার বিজয় নিশ্চিতে আমরা ভোটযুদ্ধে মাঠে নামব।

কমলগঞ্জে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা তালিকায় রয়েছেন কমলগঞ্জের ১নং রহিমপুর  ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইফতেখার আহমদ বদরুল ,আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি জুনেল আহমদ তরফদার। ২নং পতনউষার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমদ বাবু ও আওয়ামীলীগ নেতা মইনুল ইসলাম রিপন। ৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতলিব তরফদার, আওয়ামী লীগ নেতা রামেন্দ্র ভট্রাচায্য, জাহিদুল ইসলাম ও শ্যামল সুন্দর সিংহ। ৪ নং শমসেরনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জুয়েল আহমদ, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল মালিক বাবুল ,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এবিএম আরিফুজ্জামান অপু। ৫নং কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আব্দুল হান্নান, উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি তরুন আওয়ামী লীগ নেতা সুলেমান হোসেন ভুট্রো, ৬ নং আলীনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফজলুল হক বাদশা,কমলগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক উপজেলা যুবলীগের সদস্য তরুন সমাজ সেবক নিয়াজ মুর্শেদ রাজু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাংবাদিক শাহীন আহমদ। ৭ নং আদমপুর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের  স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাব্বির আহমদ ভুঁইয়া, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগেরব সদস্য হাজী জয়নাল আবেদিন, আওয়ামী লীগ নেতা হাজীর বখত, লন্ডন প্রবাসী একেএম সালাম ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন। ৮ নং মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিদ আলী ও কমলা কান্ত সিংহ। ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সুলেমান মিয়।