চট্টগ্রামে ভ্যাট অফিসের দালাল বজলুতে জিম্মি ব্যবসায়ীরা

বজলুর রহমান, নিজেকে পরিচয় দেন কাস্টমস্ কর্মকর্তা হিসেবে। নগরের সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত কাস্টমস্ এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের আগ্রাবাদ দপ্তরে চেয়ার টেবিল নিয়ে নিয়মিত অফিস করছেন তিনি। বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের ডেকে নিয়ে ভ্যাট ফাঁকির ফাঁদ পেতে আদায় করছেন মোটা অংকের টাকা। তার এসব কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করছেন ওই দপ্তরের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেনসহ একাধিক কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে, ২০০৩ সালে বাদাম বিক্রি ছেড়ে এই দপ্তরে পদচারণা শুরু করেন বজলুর। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সরকারের এই দপ্তরের ভেতর ও বাহিরের সকল নিয়ম-অনিয়ম আয়ত্ত করে র্টাগেটকৃত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলা শুরু করে। এতে অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি বনে যান তিনি। সম্প্রতি বজলুর রহমান সরকারের এই দপ্তরে বসে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে ঘুষ আদায় করছে এমন ভিডিও ও ছবি প্রকাশ হতেই চারদিকে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেই ভিডিও ও ছবি এই প্রতিবেদকের হাতেও এসে পৌছেছে। তার বাড়ি ভোলার সদর থানার ধনিয়া ইউনিয়নের আলগী গ্রামে।
যদিও সংস্থাটির আগ্রাবাদ সার্কেল সুত্রে জানা গেছে বজজলুর রহমান এই সংস্থার নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ নন। অফিসিয়াল ভাবে তার কোনো পদ-পদবী এবং বেতন-ভাতা নাই। তবে এই দপ্তরে অফিসার পরিচয়ে নিয়মিত অফিস করার পাশাপাশি ব্যবসায়িদের জিম্মি করে ঘুষ আদায় করছেন নিয়মিত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের এই সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা জানান, টেকনাফ স্থল শুল্ক ষ্টেশনের এক সময়কার মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত নুরুল ইসলামের (যিনি দুদকের মামলায় কারাগারে) হাতধরে ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস্ এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগে দালাল (কোনো কর্মচারি নয়) হিসেবে যোদদেন বজলুর রহমান। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বজলুর রহমানের নগরীর ইপিজেড কলসিরদীঘির মুখ, হালিশহর বড়পোল ও জেলার পটিয়ার শান্তিরহাট এলাকায় বিভিন্ন নামে ওয়ালটনের অন্তত ৭টি শোরুম রয়েছে। চট্টগ্রামে রয়েছে ভাড়ায় চালিত দুইটি নোহাগাড়ি। একইভাবে ভোলা ও চট্টগ্রামে ১০ সিএনজি অটোরিকশা, শতাধিক রিকশা এবং অন্তত ২০টি ইজিবাইক। ভোলা সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের আলগী গ্রাম ও ঢাকার মিরপুরে গড়েছেন বহুতল ভবন। নামে বেনামে ব্যাংক ডিপোজিট, কৃষি জমি ও মৎসঘের।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ণ জমা দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তারা রিটার্ণের হার্ডকপি চেয়ে অফিসে ডেকে পাঠান। পরে ওই রিটার্ণে ভুলভাল হিসাব দেখিয়ে ভ্যাট ফাঁকির অযুহাতে অফিসে কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে ঘুষ দাবি করেন। এতে করে ব্যবসায়ীদের চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ভ্যাট বিভাগের আগ্রবাদ সার্কেলে আওতাধীন বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর বাহিরেও ওই এলাকায় ভ্যাট অনিবন্ধিত প্রায় ১০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েগেছে। যার মধ্যে হোটেল, ফার্ণিচার দোকান, মিষ্টির দোকান, পরিবেশক, কমিউনিটি সেন্টার এবং বিভিন্ন মার্কেট সমিতি রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে মাসিক চুক্তিতে ঘুষ নিয়ে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই দপ্তরে ভ্যাট নিবন্ধিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও বড় বড় কোম্পানীর লাখ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলার ফাইল চুক্তিতে গায়েব করার অভিযোগও রয়েছে বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বজলুর রহমান র্টাগেটকরে বিভিন্ন সময় সিণ্ডিকেটভুক্ত রাজস্ব কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ফিল্মিস্টাইলে প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে ব্যবসার হিসাব সংক্রান্ত খাতা-পত্র এবং ক্রয়-বিক্রয় রেজিস্টার বিনা রশিদে জব্দ করে অফিসে নিয়ে যায়। পরে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান বা প্রতিনিধিকে অফিসে ডেকে এনে মোটা অংকের ঘুষ দাবি করেন। তবে তাদের দাবিমতো ঘুষ দিতে রাজি না হলে ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিভিন্নভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
একাধিক কর্মকর্তা জানান, নতুন কোনো কর্মকর্তা এই দপ্তরে যোগ দিলেই ওই কর্মকর্তাকে নগরীর অভিযাত কোনো রেষ্টেুরেন্টে নিয়ে পার্টির আয়োজন করা হলো বজলুর প্রথম কাজ। যাতে কোনো কর্মকাণ্ডে কেউ বাধা হয়ে না দাঁড়ান। এছাড়া ব্যবসায়িদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে আদায়কৃত ঘুষের ভাগ ভ্যাট কমিশনাটের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়মিত পৌছে দেন তিনি। যাতে তাকে সুবিধা-অসুবিধায় আগলে রাখেন। বর্তমানে ওই দপ্তরের কোনো ফাইলপত্র নাড়তেও বজলুর পূর্ব অনুমতি নিতে হয়। না হয় একেরপর এক জবাবদিহিতা এবং নাজেহালে দিতে হয় কড়া মাশুল। এসব কারণে ওই দপ্তরের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বজলুর নিকট জিম্মি হয়ে পড়ে।
কাস্টমস্ সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজস্ব আদায় যুগউপযোগী করতে সরকারের চালুকৃত ইএফডি মেশিন প্রকল্পও কব্জায় নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে বজলু। বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আড়ালে রেখে কিছু ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে এই ইএফডি মিশিন প্রদান করা হয়েছে। এতে সরকারের কাঙ্খিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ভেস্তে চলেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বজলুর রহমান ও কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট আগ্রাবাদ সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার কল ও বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস্ এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন।
এমএসএম / এমএসএম

জিন তাড়াতে গিয়ে মা-মেয়েকে হত্যার মূল আসামী কবিরাজ গ্রেপ্তার

গাজীপুর-৩ আসনে আলোচনায় বিএনপির ৪ প্রার্থী, একক প্রার্থী নিয়ে নিশ্চিন্ত অন্য দল

আদালতের দোতলা থেকে লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা হত্যা মামলার আসামির

রায়পুরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

চট্টগ্রাম-১৩ আসনে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পছন্দের শীর্ষে এস এম মামুন মিয়া

চাঁদপুরে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক পেয়েছেন ১৯ সাংবাদিক

জুড়ীতে কৃষ্ণনগর বাছিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে উপহার প্রদান

গাছে ঝুলন্ত লাশ, পা মাটিতে-শ্বশুরবাড়ি থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রূপগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশমুখে গোলচত্বর ও ফ্লাইওভারের দাবিতে মানববন্ধন

ভূরুঙ্গামারীতে নবযোগদানকৃত কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক এর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে

রাণীশংকৈলে গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৫
