এ.জে.আর কুরিয়ার সার্ভিসের অভিনব প্রতারণা
সম্প্রতি এ.জে.আর কুরিয়ার সার্ভিসের নামে গ্রাহক হয়রানি, চাকুরি দেওয়ার নামে প্রতারণা এবং ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নিয়ে ফাঁদে ফেলা সহ নানা ধরণের অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগে গত কয়েক দিন আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন করেন গ্রাহকরা। এদিকে আঙ্গুল কুলে কলাগাছ হয়েছেন এ.জে.আর কুরিয়ার সার্ভিসের চেয়ারম্যান সামছু উদ্দিন আহম্মেদ রিয়াদ। জানা গেছে, গ্রাম থেকে আসা ছেলেদের চাকুরি দেওয়ার নামে দেয়া হয় লোভনীয় অভার। চাকুরীর মেয়াদ এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই বাড়তি বেতন দেওয়া হবে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তিনটি সাইন সহ খালি ব্যাংক চেকের পৃষ্ঠা ও ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প তিন সেট যা দাঁড়ায় ১০০/ টাকার নয় টি নন-জুড়িশিয়াল স্ট্যাম্প। সদ্য চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া মনির হোসেন জানিয়েছেন, আমি সব কিছু বুঝিয়ে দেওয়ার দুই মাস পার হলেও এখনো পর্যন্ত আমার ফেরৎযোগ্য চেক ও স্ট্যাম্প আমাকে ফেরত দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে বর্তমানে আমি প্রতিনিয়ত ভয়ের মধ্যে আছি। সাভার বাইপাইলে দায়িত্বরত আব্দুর রশিদ চাকুরী থেকে লিখিত অব্যাহতির ৪ মাস পার হলেও এখনো মেলেনি তার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের তিনটি চেক ও দুই সেট সাইন করা ছয়টি নন-জুড়িশিয়াল স্ট্যাম্প। এরই মধ্য তার কাছে উকিল নোটিশও চলে এসেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অফিস সহকারী বলেন, আমি চাকুরি করি ৮ হাজার টাকা বেতনের। অথচ আমার কাছ থেকে তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে সাইন নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ফাঁকা সাদা কাগজেও সই নেওয়া হয়েছে আমার কাছ থেকে। পল্টন বিজয় নগরের অফিস ম্যানেজারের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে তিনটি ব্যাংকের সাইন সহ খালি পাতার চেক ও পাঁচটি সাইন করা স্ট্যাম্প। একই অফিসের সহকারী ম্যানেজার কবির হোসেন সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে চাকুরী করতেন। তিনিও লোভনীয় অফারে চলে আসেন এজেআর কুরিয়ার সার্ভিসে। তার কাছ থেকেও নেওয়া হয়েছে তিনটি খালি চেকের পাতা ও তিনটি স্ট্যাম্প। বেশ কিছুদিন আগে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া এ.জে.আর কুরিয়ার সার্ভিসের হেড অব মার্কেটিং সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, চাকুরি ছাড়ার সময় আমি সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। আমাকে ফুল দিয়ে বিদায় সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রতারনা করেছি মর্মে আমার কাছে উকিল নোটিশ আসে। যা দেখে আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম।
ফেনীর মো. মফিজ উদ্দিন অফিস সহকারী হিসেবে চাকুরিতে যোগদানের কিছু দিন যেতে না যেতেই উক্ত রিয়াদের সহযোগী শিমুল তাকে বলেন, শুনলাম তোমার ভাই-বোনদের অনেক টাকা পয়সা আছে। এক কাজ করো, তাদের কাছ থেকে কিছু টাকা পয়সা নিয়ে আসো; সবাই মিলে আমরা একটি গাড়ি কিনবো। প্রতি মাসে যা লাভ হয় তার সমান ভাগ নিয়ে যাবে বলে মিথ্যা আশ্বাস দেয় শিমুল। মফিজ তার প্রতারনার ফাঁদ বুঝতে না পেরে নিজ ভাই বোন থেকে আকুতি মিনতি করে সাত লাখ টাকা এনে দেন শিমুলের কাছে। গাড়িও কেনা হয় তাদের তিনজনের নামে। কয়দিন যেতে না যেতেই শুরু হয় শিমুলের প্রতারনার ফাঁদ। মফিজ কিছু বুঝে উঠার আগেই গাড়িটি নিজের নামে করার আপ্রান চেষ্টা চালায় শিমুল ও তার সহযোগীরা। এক পযার্য়ে মফিজকে বেধে মারদর করে ফাঁকা স্ট্যাম্প ও খালি চেকে স্বাক্ষর নেয়া হয়। মফিজের নামে পুরো গাড়ি টি লিখে দিবে বলে জোর পূর্বক মফিজের বড় ভাই সাহবুদ্দিন কে সুকৌশলে ফোন করে আনা হয়। এরই মধ্যে মফিজের কাছ থেকে সই করা ফাঁকা চেকের ৫টি পাতা ও ৬টি স্ট্যাম্প নেওয়া হয়েছে। পরবর্তিতে নিজের গাড়ি দাবী করে শিমুল মফিজের নামে গাড়ি চুরির মিথ্যা মামলা দেয়। কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে মফিজ আবার মোহাম্মদপুর থানায় এসে জিডি করেন। জিডি মূলে তদন্ত শুরু হয় এবং তদন্ত শেষে পাওয়া যায় উক্ত গাড়িটি রানার্স মটর থেকে কিস্তিতে কেনা। পুরো গাড়ির সাত লাখ টাকা মফিজের দেওয়া তাই রানার্স মটর তার নামে গাড়িটির ভাউচার করেছেন। এরপর মফিজের নামে ভাঙচুর, লুটপাট এর একটা মামলা করেন। তার থেকে জোরপূর্বক রাখা ৫ টি খালি পাতার চেক ব্যাংক ডিজনার করে ১০ লাখ টাকা করে মোট দুই চেক এ ২০ লাখ টাকার মামলা দেন রিয়াদের সহযোগী জিয়া উদ্দিন শিমুল। বর্তমানে মফিজ চার মামলার আসামী।
সামছু উদ্দিন আহম্মেদ রিয়াদের আপন ভাগিনার কাছে তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিয়াদ মামা আমাদের বাড়িতে থেকে বড় হয়েছে। আমি চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে চাইলে আমাকে তিনি মামলার ভয় দেখিয়েছেন। পরবর্তীতে আমার পরিবারকে ব্যাপারটা জানানোর পর তিনি আমার নামে মামলা দিতে পারেনি। রিয়াদের কোম্পানীর চাকুরীচ্যুত আপন ভাতিজা বলেন, তাকে চাচা বলতেও আমার ঘৃনা লাগে। তিনি আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে চাকুরীচ্যুত করেন। মূলত তিনি গ্রাম থেকে ২০১০ সালে ভাগিনার সাথে চুরি করে বাড়ি থেকে খালী হাতে পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে আসেন। দীর্ঘ সময় চট্টগ্রাম ভাগনীর জামাইয়ের ট্রান্সপোর্টে চাকুরী করতেন। চাকুরিতে বিভিন্ন জেলার গাড়ির ভাড়া করাই ছিলো তার দায়িত্ব। ভাগনী জামাইয়ের সাথে বনিবনা না হওয়াতে ২০১৩ সালে ঢাকায় এসে এ.জে.আর এন্টার প্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান করেন। এর কিছুদিন পর করেন এজেআর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সী। তারও কিছুদিন পর নাম বদলে করেন এ.জে.আর পার্সেল এন্ড কুরিয়ার সার্ভিস। সর্বশেষ নিজে একাই করেন এ.জে.আর গ্রুপ। এদিকে ২০১৮ সালে এনবিআর তার নামে ৫ কোটি টাকার মামলা করেন। ২০২০ সালে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার সিল স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা হয় তার নামে।
এদিকে রাতারাতি তিনি হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। যিনি বর্তমানে আপডেট মডেলের দেড় কোটি টাকা দামের একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রইজারে গাড়ি ব্যবহার করেন। এদিকে হাজারো অভিযোগের তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছেন কুরিয়ার সার্ভিসের আড়ালে অবৈধ ব্যবসা যা বিভিন্ন সময় দেশের প্রথম সারির গনমাধ্যমগুলো বেশ কয়েকবার প্রকাশ করেছে। এমন প্রতারকদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য রিয়াদের মুঠোফোনে কল করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এমএসএম / এমএসএম
তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সিবিএ এর অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠান
জাইকার সহায়তায় রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন TOD প্রকল্পের ৪র্থ সেমিনার আয়োজিত
ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ছয় দফা দাবি
জাইকার সহায়তায় রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন TOD প্রকল্পের ৪র্থ সেমিনার অনুষ্ঠিত
কামরাঙ্গীরচর থানার মোঃ আমিরুল ডিএমপি লালবাগ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে নির্বাচিত
পেশাদারিত্ব ও মানবিকতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখায় বিশেষ সম্মাননা পেলেন ডিসি মহিদুল ইসলাম
ঝিনাইদহ অফিসার্স ফোরামের নতুন কমিটি গঠন
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শিখাচ্ছে পাথওয়ে
উত্তরায় SEDA ফাউন্ডেশনের ১৭তম মেধা যাচাইয়ে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় নকশা দাখিল ও অপসারণের নির্দেশ
হাতপাখা নির্বাচিত হলে ঢাকা-১৮ কে একটি মডেল সিটি হিসেবে গড়ে তুলা হবেঃ আলহাজ্ব আনোয়ার