বাঁশখালীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ভূমি দখলের অভিযোগ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুকুরিয়ার ১নং ওয়ার্ডের চরজুইদন্ডী এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভূমি দখলের রাজত্ব কায়েম করছে পতেঙ্গার ভূমিদস্যু সৈয়দ নুর।২৮ মার্চ(সোমবার)বিকেলে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার সৈয়দ নুর নামক এক লোক বিজ্ঞ-আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুকুরিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে আঁতাত করে শঙ্খ নদীর তীরবর্তী চরজুইদন্ডী এলাকার সরকারি খাস জায়গা সহ জোর পূর্বক দখল করে মাটি কাটার স্ক্যাবটার গাড়ী দিয়ে মাটি কেটে অন্যত্রে সরিয়ে নিচ্ছে ওইসব মাটি।
পরিদর্শন কালে স্থানীয়রা বলেন,বিগত ২০২০ সালে অভিযুক্ত জায়গায় ভূমিদস্য সৈয়দ নুর ওই এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে আঁতাত করে শাহাদত ব্রীকফিল নামক ইট ভাটা নির্মাণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করেছিল, পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ইট ভাটা নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দিন সহ সাম্প্রতিক উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)আতিকুর রহমান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম সরেজমিনে তদন্ত করে অবৈধ ইট ভাটা নির্মাণের অপরাধে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা সহ ইট ভাটা নির্মাণ বন্ধ ঘোষণা করেছিলেন,প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের ফলে পরিত্রাণ পেয়েছিল ওই এলাকার কয়েক শত অসহায় কৃষক পরিবার।
কিন্তু আবারও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় ভূমিদস্যু সৈয়দ নুর মাটি কাটার কাজ শুরু করেছে মর্মে অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা।স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে পরিদর্শন কালে দেখা যায় মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত স্ক্যাবেটর গাড়ি।সাংবাদিক আসার বিষয়টি টেরপেয়ে গাড়িটি রেখে কাজে নিয়োজিত লোকজন স্থান ত্যাগ করে ঘটনাস্থল চলে যায়।
এব্যাপারে পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আসহাব উদ্দিন বলেন,১নং ওয়ার্ডের চরজুইদন্ডী এলাকাটি একসময় শঙ্খ নদীর মোহনার স্রোতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল,এরই মধ্যে বিগত কয়েক বছর পূর্বে বালি ভরাট হয়ে চর এলাকায় পরিণত হয়,ওই চর এলাকার বেশ কিছু আমার খরিদা সত্ত্ব,তাছাড়া প্রায় ৮/১০ একর জমি সরকারি খাসও রয়েছে,যা স্থানীয় বেশ কিছু কৃষক পরিবার চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।কিন্তু গত ২০২০ সালে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের সাথে হাত মিলিয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার সৈয়দ নুর নামক এক ব্যক্তি ওই জায়গা জবর দখল করে ইট ভাটা নির্মাণ কাজ শুরু করেছিল,যাহা আমি সাম্প্রতিক উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) আতিকুর রহমান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম সহ যৌথ ভাবে সরেজমিনে গিয়ে পরিবেশ ধ্বংসকারী নির্মাণধীন ইট ভাটা তৈরি কাজ বন্ধ করেছিলাম,এসময় অবৈধ ইট ভাটা নির্মাণকারীদের পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানাও করেছিল উপজেলা প্রশাসন।প্রশাসনের জরিমানা করার পরেও পুনরায় ইট ভাটা নির্মাণ কাজ করায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযুক্ত ভূমিদস্যু সৈয়দ নুরকে আরো বিশ লাখ টাকা জরিমানা করলে সৈয়দ নুর পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে কাজ করবেনা মর্মে মোসলেকা দেয়ার ফলে পরিবেশ অধিদপ্তর তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে জরিমানার অবশিষ্ট টাকা মওকুফ করে দিয়েছিল বলে শুনেছিলাম।প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ওই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেয়েছিল চাষাবাদ কারী কৃষক পরিবারের সদস্যরা।
এবিষয়ে ১৪৫ ধারার একটি মামলাও দায়ের করেছিলাম,যার আদালত ওই জায়গার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।দুঃখের বিষয় হলো,আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বর্তমানে আবারও প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্ত বিজ্ঞ-আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ভূমিদস্যু সৈয়দ নুর স্ক্যাবেটর গাড়ি দিয়ে জোর পূর্বক ওই জায়গার মাটি একে এক দিকে নিয়ে যাচ্ছে,তার কাছে ওই জায়গার বৈধ কোন কাগজ পত্র না থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক সরকারি খাস জায়গাসহ দখল করে নিচ্ছে বলেও জানান আসহাব উদ্দিন।
এই ব্যাপারে রামদাস মুন্সির হাট ফাঁড়ি পুলিশ এস আই মোস্তফা কামাল এর যোগাযোগ করলে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার বিষয়টি নিশ্চিত তিনি বলেন,পতেঙ্গা এলাকার সৈয়দ নুর নামক এক লোক পুকুরিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চরজুইদন্ডী এলাকায় স্ক্যাবেটর গাড়ি দিয়ে মাটি কাটার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি,মূলত ওই জায়গা সংক্রান্তে বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে,কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাটি কাটতেছে অভিযুক্ত সৈয়দ নুর।ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি এবং বলে দিয়েছে যে আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিষ্পত্তি না করা পর্যন্ত কেউ কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ওমর ফারুক এর সাথে যোগাযোগ করার একাধিক বার চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এমএসএম / এমএসএম