ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

১০ হাজার কোটি টাকা এবং ঢাকায় ১০০ বিঘা জমি : শুরু হচ্ছে ত্রিপক্ষীয় তদন্ত

গাঢাকা দিয়েছে ভুয়া ভিসি জঙ্গি নেতা সাদেক


শামীম আহমদ photo শামীম আহমদ
প্রকাশিত: ৩-৪-২০২২ দুপুর ৩:৩২
রাজধানী ঢাকার উত্তরায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর সাবেক ভিসি জঙ্গি নেতা মৌলভী আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেকের নামে ঢাকায় ১০০ বিঘা জমি এবং ১০ হাজার কোটি টাকা পাচারের ব্যাপারে শুরু হচ্ছে ত্রিপক্ষীয় তদন্ত। চলতি মাসেই তার অপরাধ তদন্তের জন্য সরজমিনে নামবে সরকারের তিনটি দপ্তর। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারের এসব দপ্তর ইতিমধ্যেই দৈনিক সকালের সময়কে এ তথ্য নিশ্চিত করছে। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন পৃথকভাবে এসব অভিযোগ তদন্ত করবে। ৩০ মার্চ ২০২২ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়টির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এম আনিছুর রহমান দপ্তরগুলোতে পৃথকভাবে এসব অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি বলছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ গত ২৬ বছরে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সরকারি অডিট না করে সাবেক ভিসি আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক (এনআইডি নং ৪৬০০১৭৪৪৭০) এবং তার পুত্র বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাষ্ট চেয়ারম্যান জাফর সাদেক ও সাদেকের স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাষ্ট সদস্য সালেহা খাতুন সরকারের আয়কর ফাঁকি দিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ গড়েছে। সাদেকের পরিবার কর্তৃক পরিচালিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সাল থেকে কোন সরকার নিয়ন্ত্রণ করেনি। জামাত- বিএনপি সরকারের মদদপুষ্ট সাদেক সব সরকারের আমলে চলছে রাজার হালে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ১৩ বছর দেশ পরিচালনা করলেও এই জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেককে আইনের আওতায় আনতে পারেনি। অভিযোগ আছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ নিয়ে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। উপাচার্য ছাড়া সেই সমাবর্তন ছিলো সম্পুর্ন অবৈধ। বিশ্ববিদ্যালয়টির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলছেন সাদেকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের ধাক্কা সামাল দিতে পারছেনা সরকারের কোন দপ্তর। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা সাদেকের টাকা ও দাপটের সামনে অসহায়। মাদ্রাসা থেকে টাইটেল পাশ করা ছদ্মবেশী মাওলানা আবুল হাসান মোহাম্মদ সাদেক একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। মূলতঃ তিনি জামাত শিবিরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিনত করছে এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। সরকার পরিবর্তন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন করে তার পোষাক। কখনও মুজিব কোট, কখনও মতিউর রহমান নিজামীর মতো জামাতি কায়দায় টুপি, কখনও জিয়াউর রহমানের মতো চার পকেট ওয়ালা শার্ট ছাড়াও নানা সাজে সজ্জিত থাকে এই জঙ্গি নেতা মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক।
 
মাওলানা আবুল হাসান মুহাম্মদ সাদেক ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ব্যাপক বিরোধী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে তিনি পাকিস্তান টেলিভিশনে (বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশন) টকশো অনুষ্ঠান করে পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত "জীবনের আলো" অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এই সাদেক বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছে। তার নামে অভিযোগের স্তুপ ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন ছাড়াও সরকারের সকল পর্যায়ের দপ্তরে। দশ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ ইতোমধ্যেই আমলে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন। সারাদেশে আউটার ক্যাম্পাস স্থাপন করে দুরশিক্ষন বা ডিসট্যান্স লার্নিং কথা বলে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাদেক অছাত্র, বিদেশি অবৈধ ব্যাবসায়ী, চাকুরীজীবি, গৃহিণী, সামরিক বেসামরিক সরকারের নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সনদ প্রদান করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বিক্রি করে সাদেক টাকার পাহাড় গড়েছে। সরকারের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পর্যায়ে পদন্নোতি পেতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক যে সনদ দরকার হয় সেই সনদ প্রদানকরে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির এই সাদেক। যে কারনে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সাদেক সরকারের নানামহল থেকে ছাড় পায়। দুই বছর করে দুই মেয়াদ অর্থাৎ একজন ব্যক্তি চার বছর উপাচার্য পদে থাকার নিয়ম থাকলেও জঙ্গি নেতা মাওলানা সাদেক ২৭ বছর অবৈধভাবে উপাচার্য ছিলো। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন পরিচালক ওমর ফারুখ বলছেন ৯ মে ২০১২ সাল থেকে সাদেক এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ভিসি নয় তবুও তিনি ২০২২ সাল পর্যন্ত ভিসি হিসেবে সকল কার্যক্রম চালিয়েছে, যা সম্পুর্ণ অবৈধ। তিনি বলছেন কমিশন এব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করছে। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ না দিলে ইউজিসির কিছু করার নাই বলে জানিয়েছেন ওমর ফারুখ। অভিযোগকারী ড. আনিছুর রহমান সকালের সময়কে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দ জঙ্গি নেতা মাওলানা সাদের সাথে গোপনে বোঝাপড়া করছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেখবালের দ্বায়িত্বে আছেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর বিশ্বজিৎ চন্দ এবং পরিচালক ওমর ফারখ। বিশ্বজিৎ চন্দ জঙ্গি নেতা সাদের নিকট থেকে বড় অংকের টাকা নিয়েছে এমন অভিযোগ আনিছুর রহমানের।
 
দৈনিক সকালের সময়ের অনুসন্ধানে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির সাবেক এই ভিসি জঙ্গি নেতা সাদেকের নানাবিধ কুকর্মের প্রমান পাওয়া যায়। সনদ জালিয়াতি অর্থ পাচার নারী কেলেঙ্কারি অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ তার নানাবিধ কুকর্মের ইতিহাস নিয়ে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন সাদেকের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়। দৈনিক সকালের সময়ের আবেদন আমলে নিয়ে ইউজিসি ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখে চিঠি দিয়ে তার "ইমিরেটাস উপাধি" ব্যাবহার করতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ১০ মার্চ ২০২১ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে। বিশ্ববিদ্যালয়টির সনদ জালিয়াতির অভিযোগে একই তারিখে উপসচিব শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ফারুক আহমদকে আইনের আওতায় আনতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়। রেজিস্ট্রার ফারুখ চাকুরীচ্যুত হলেও তাকে আইনের আওতায় আনতে দেখা যায়নি। ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শাজাহান খান নামের একজনকে ভিসি পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে নতুন ভিসি অবৈধ ভিসি সাদেকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেখানে দ্বায়িত্ব পালন করছে। তিনিও ইউজিসির নির্দেশ মানছে না। নতুন ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়টির ভুয়া ভিসি জঙ্গি নেতা সাদেক পুত্র জাফরের অধীনস্থ একজন কর্মচারীর মতো গোপনে দ্বায়িত্ব পালন করছে। পারিবারিক উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া সম্পদের মতো পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ করেছে সাদেকের পুত্র মুহাম্মদ জাফর সাদেক। জাফর এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। পিতা পুত্রগং নিয়ন্ত্রিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট বোর্ডে আছে বোমা হামলার আসামি ইয়াসিন আলী এবং ট্রাষ্টি বোর্ডে আছে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী সাদেক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাজাকার কামারুজ্জামানের বিশেষ সহকারী শিবির ক্যাডার বোমা সন্ত্রাসী এস এম ইয়াসিন উত্তরার আব্দুলাপুরে বোমা হামলার চিহ্নিত আসামি। রংপুরের কারমাইকেল কলেজের শিবির ক্যাডার সাদেকের পিএস মাহাবুব ও ঢাকার পল্টন থানা জামাত সেক্রেটারি জাকির হোসেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে বিচরণ করে টাকা লুটপাট করছে। সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন পল্টন বোমা হামলার পরে গ্রেফতার হয়েছিলো। সেই জাকির এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচালক। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া বর্তমান ভিসি শাজাহান খান এবং ট্রেজারার প্রফেসর নুরুল ইসলামের নামেও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আছে। অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন কুইনস ল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন প্রফেসর শাজাহান খান তথ্য গোপন করে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ভিসি হয়েছেন। অন্যদিকে সদ্য নিয়োগ পাওয়া ট্রেজারার জামাত নেতা প্রফেসর নুরুল ইসলাম নিজ এলাকায় মসজিদ তৈরির নাম দিয়ে বহু টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সাদেকের কাছ থেকে। নানাবিধ সুবিধা প্রদান করে রেজিস্ট্রার ও বর্তমান ভিসিকে নিয়ন্ত্রণ করছে এই জঙ্গি নেতা মাওলানা সাদেক।

এমএসএম / এমএসএম

ট্যাক্স ল'ইয়ার্স সোসাইটি ২০১৭ এর নির্বাচিত নতুন কমিটির অভিষেক দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠিত

উদ্যোমী নারীদের সম্মাননা জানাল ‘উইমেন’স ফাউন্ডেশন’

উত্তরা সেক্টর-১২ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

রোজাদার পথচারীদের পাশে ইফতার নিয়ে হাজির আজমল হুদা মিঠু

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ৮ জন নারী উদ্যোক্তা পেলেন সাহসিকা সম্মাননা

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

ছাত্র দলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বিআরটি’র ফ্যাসিস্ট আওয়ামীর দোসর এডি আলী আহসান বহাল তবিয়তে

ধর্ষণও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

ছুরিকাঘাতে রাজধানীতে যুবক নিহত

আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই আওয়ামী লীগ নেত্রী তাহমিনার

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার উন্নয়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সৌদি আরবের আল মারি ট্রেডিং ইস্ট কোম্পানির সাথে নিজাম গ্রুপ অফ কোম্পানির দ্বি পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর