ঢাকা বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সুখে নেই চন্দনাইশের বাঁশি পরিবারের সদস্যরা


আমিনুল ইসলাম রুবেল, চন্দনাইশ  photo আমিনুল ইসলাম রুবেল, চন্দনাইশ
প্রকাশিত: ৭-৪-২০২২ দুপুর ১১:৪০

‘বাঁশি শুনে আর কাজ নেই, সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি’- এক সময়কার সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি গানের এই কলি থেকেই বোঝা যায় বাঁশির গুরুত্ব। বাঁশি নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক উপন্যাস, গল্প, কবিতা ও গান। বাংলা সিনেমার নায়ক-নায়িকার দৃষ্টি আকর্ষণে আশ্রয় নেয়া হয় এ বাঁশির। প্রেমিকের বাঁশির সূরে মোহিত হয়ে প্রেমিকা ঘর ছেড়েছে, এমন উদাহরণও কম নয়। যে বাঁশি অজস্র ঘটনার জন্ম দেয়, সে বাঁশির জন্ম নিয়ে কেউ কোনোদিন মাথা ঘামায়নি।

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার পূর্ব জোয়ারা গ্রামে একটি পাড়ার নাম বাঁশি বেপারী বাড়ি। এই বাঁশি বেপারী বাড়ির প্রায় ৩০টি পরিবার একসময় বাঁশি তৈরিতে নিয়জিত ছিল বলে পাড়াটির নামকরণ হয় বাঁশি বেপারী বাড়ি।

এই বাঁশি বেপারী বাড়িতে সরেজমিন দেখা যায়, পাড়ার অনেকেই এখন আর বাঁশি তৈরি করেন না। বাঁশি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে কষ্ট হওয়ার কারণে এসব পরিবার বাঁশি তৈরির পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছে। তারপরও এখনো দু-একটি পরিবার তাদের পৈত্রিক ঐতিহ্য রক্ষা করার প্রয়াসে ধরে রেখেছে বাঁশি তৈরির শিল্পটি।

বাঁশি বেপারী বাড়ির প্রবীণ এক বাঁশিশিল্পী জানান, সময়ের ব্যবধানে এ পেশায় এখন আর কেউ এগিয়ে আসতে চাইছে না। ফলে অনেকে এ পেশা ছাড়ার কারণে কয়েক পরিবারে এসে ঠেকেছে। এখন শুধুমাত্র দু-একটি পরিবার বাঁশি তৈরিতে নিয়োজিত রয়েছে।

অন্য আর এক বাঁশি বেপারী বলেন, আমাদের তৈরি বাঁশি দেশের আঙ্গিনা ছাড়িয়ে বিদেশে জায়গা করে নিলেও আমাদের কথা কেউ কোনোদিন ভাবেনি। আমাদের অভাব-অভিযোগের কথা কেউ শুনতে আসেনি। অথচ সরকারি-বেসরকারি যে কোনো মহলের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই বাঁশিশিল্পীরা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো জানান, বাঁশি তৈরির উপকরণসমূহ এখন আর সহজে পাওয়া যায় না। প্রধান উপকরণ সংগ্রহ করতে হয় ধোপাছড়ি ও বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে। দুষ্প্রাপ্য সুরুজ গাছ সংগ্রহ করতে হয় বিশেষ বিশেষ কিছু এলাকা থেকে। আগে এসব উপকরণ সহজে পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা সংগ্রহ করতে হয় দ্বিগুণ মূল্যে। বর্তমানে এসব উপকরণের মূল্য বাড়তে থাকলেও বাঁশির দাম বাড়ানো সম্ভব না হওয়ায় লাভের চেয়ে লোকসানের পাল্লাই দিন দিন ভারী হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এক সময় চট্টগ্রাম শহরের রেয়াজুদ্দিন বাজারস্থ খাজা স্টোরের মাধ্যমে বেশকিছু বাঁশি মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে সেই ধারা অব্যাহত রাখা যায়নি। এখন বাঁশির প্রধান বাজার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত মেলা, বলীখেলা, সার্কাস ইত্যাদি। দেশের কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্রের দোকানে বাঁশি নিলেও তা নিতান্তই হাতেগোনা। তবে লালদীঘির মেলায় সবচেয়ে বেশি টাকার বাঁশি বিক্রি হয় বলে জানালেন তিনি।

এক বাঁশি কারিগর  জানান, তিনি নিজে বাঁশিশিল্পী হলেও তার কোনো ছেলে-মেয়েকে এ শিল্পের কাজে নিয়োজিত করেননি। তার ইচ্ছা, তার পরিবারের কোনো সদস্য যেন এই শিল্পে না আসে। যে শিল্পে কোনো ভবিষ্যত নেই বা নিশ্চয়তা নেই, সেই শিল্পে জড়িত হয়ে কোনো লাভ হবে না বলেও তিনি জানান।

তিনি আরো জানান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলে বাঁশিশিল্পীদের শুধুমাত্র সম্মান মেলে। তার মতে. শুধু সম্মান দিয়ে তো ভাই পেট ভরবে না। তাই এ পেশায় না আসাই ভালো।

অবস্থাদৃষ্টে যেটুকু বলা যায় তা হলো, চন্দনাইশের বাঁশি পরিবারগুলো সুখে নেই। তবে সামান্যতম পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান বাঁশি শিল্পটি টিকে থাকবে সৌগৌরবে।

জামান / জামান

চুরি করে আনা প্রাইভেট কারে ছিল বিপুল পরিমান মাদক

বিগত সরকারের শাসনামলের ১৫ বছর আতঙ্কের ভিতর কাটিয়েছিঃ অভি

ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা খোকন গ্রেফতার

মেডিক্যাল চান্স পাওয়া পাবনার শিক্ষার্থী মেঘলার সব দায়িত্ব নিলেন পাবনার জেলা প্রশাসক

উলিপুরে নবাগত ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময়

গলাচিপায় নদী থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার

মান্দায় ভারতীয় জাল রুপিসহ আ.লীগ নেতা আটক

সিলেটে ২ দিনে ১ কোটি টাকার চোরাচালানের মালামাল জব্দ

চন্দনাইশে আটককৃত পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ভুরুঙ্গামারীতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ বার্ন হাসপাতাল নির্মাণ ও চিকিৎসায় ভোগান্তি বন্ধে মানব বন্ধন

আপনারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে না পারলে, যারা পারবে তাদের পথ সুগম করেন: দুদু

খানসামায় নদীর বালু হরিলুট করছে ইউপি সদস্য