বাঁশখালীতে গৃহহীন নারীকে পুলিশের ঘর প্রদান
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গৃহহীন অসহায় মহিলাকে নিজস্ব অর্থায়নে জমি ক্রয় করে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মানবতার নজির স্থাপন করল বাঁশখালী থানা পুলিশ। সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতেও পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত একটি ঘর পেলেন উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের জোহরা বেগম নামে এক অসহায় নারী।
রোববার (১০ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সে শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে মুজিববর্ষের উপহার উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপির নির্দেশনা মোতাবেক দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে গৃহহীনদের একটি করে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার অংশ হিসেবে বাঁশখালীতে পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে জমি ক্রয় করে নির্মিত একটি ঘর গৃহহীন জোহরা বেগম নামের এক নারীর বরাবর হস্তান্তর করলেন চট্টগ্রাম জেলায় তৃতীয় বারের মতো শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত ওসি বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন।
জানা যায়,স্বাধীনতার স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দেশব্যাপী ভূমি ও গৃহহীনদের জন্যে গৃহ নির্মাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ আইজিপির নির্দেশনা মোতাবেক গৃহহীনদের জন্যে প্রতিটি থানায় একটি করে ঘর নির্মাণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাঁশখালী থানা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত একটি ঘর উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের জোহরা বেগম নামের এক মহিলাকে প্রদান করল বাঁশখালী থানা পুলিশ। এতে উপকার ভোগী পরিবারের জন্যে রয়েছে ১টি করে রান্নাঘর, টয়লেট, টিউবওয়েল ও বৈদ্যুতিক সংযোগ।
জানা যায়,স্বামী দিতীয় বিবাহ করে জোহরা বেগমকে ছেড়ে চলে যাওয়ার ফলে দীর্ঘ বছর যাবত গৃহহীন হয়ে পড়ে অসহায় জোহরা।সন্তান গর্ভকালীন অবস্থায় স্বামী চলে যাওয়াতে জোহরা বেগমের মাথা গুছানোর ঠাই ছিলনা কোথাও।একপর্যায়ে পুঁইছড়ি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতানুল গণী চৌধুরী লেদু মিয়ার পরিত্যক্ত পাহাড়ি জায়গাতে বাঁশের বেড়া দিয়ে একটি ছোট্ট ঘরে তৈরি করে ঠাই নেন জোহরা।দীর্ঘ অসহায়ত্বের জীবন যাপনের পর পুলিশের দেওয়া ঘরটি পেয়ে খুশিতে আত্মহারা জোহরা।সড়ক সংস্কার কাজে মাটি কেটে সীমিত আয়ের মাধ্যমে সংসার চালাতেন জোহরা।দুই ছেলে সন্তানের মা জোহরা বেগম,বড় ছেলের বিবাহের পর নাতী-নাতনিকে ফেলে ছেলের বউ চলে যাওয়ার ফলে নাতি-নাতনির দেখা শুনার দায়িত্ব ভারও নিতে হয়েছে জোহরা বেগমকে।তাছাড়া তাঁর এক ছেলে বর্তমানে স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে বলেও জানান জোহরা।স্কুলে পড়ুয়া ছেলের পড়া-লেখার খরচ বহন সহ সংসারের খরচ চালাতে চরম অসহায়ত্ব যেন জোহরার নিত্য জীবন
এই দূর্সময়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এমন মানবিক সহযোগিতা পেয়ে বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন সহ সকল পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উপকার ভোগী জোহরা বেগম।বাঁশখালীতে গৃহহীন জোহরা বেগম নামের ওই নারীকে পুলিশের ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মানবতার নজির স্থাপনের খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় বাঁশখালী থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি কামাল উদ্দিন ও পুলিশ সদস্যদের মানবিক পুলিশে আখ্যা দিয়ে বাঁশখালী থানা পুলিশ সদস্যদের ভূয়সী প্রশংসা করেন স্থানীয় জনসাধারণ।
এই ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন,পুলিশ দেশ ও জনগণের বন্ধু,পুলিশ নিজেদের দায়িত্ববোধ থেকে অসহায় মানুষের জীবন যাত্রায় মানবিক সহযোগিতাও করে থাকেন।তার প্রমাণ বাংলাদেশ পুলিশ আইজিপির নির্দেশনা মোতাবেক বাঁশখালী থানা পুলিশ জায়গা ক্রয়পূর্বক ঘর নির্মাণ করে উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের গৃহহীন বিধবা জোহরা বেগমের মতো অসহায় নারীকে ঘর প্রদান করা।
উল্লেখ্য,বাঁশখালী থানায় অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন যোগদানের পর থেকে বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত অগ্নি কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কিছু পরিবারকে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করে মানবিক পুলিশ হিসেবেও পুরো বাঁশখালী ব্যাপী পরিচয় লাভ করেছেন চট্টগ্রাম জেলায় তৃতীয় বারের মতো অফিসার ইনচার্জ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী ওসি কামাল উদ্দিন।এবার গৃহহীন জোহরা বেগম নামের এক নারীকে নিজস্ব অর্থায়নে একটি নির্মাণ করে দিয়ে মানবতার আরো একটি নজির স্থাপন করলেন বাঁশখালী থানা পুলিশ।
এমএসএম / জামান