ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় আসছে রাজধানীর ১২ লাখ পরিবার
রাজধানীতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি (ট্রাক সেল) তুলে দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ৪০ হাজার নিম্নআয়ের পরিবারকে দেয়া হতো টিসিবির পণ্য। এ পদ্ধতি বাতিল করে স্থায়ীভাবে রাজধানীর ১২ লাখ নিম্নআয়ের পরিবারকে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় আনা হচ্ছে। উপকারভোগী নির্বাচন ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে প্রধান করে আলাদা দুটি সমন্বয় ও তদারক কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আগামী ১৫ মের মধ্যে উপকারভোগীদের তালিকা চূড়ান্ত করতে এই দুই কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের উপদেষ্টা করে গঠিত কমিটি উপকারভোগীদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সমন্বয় কমিটিতে পাঠাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) এএইচএম সফিকুজ্জামান জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে ১ কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য দেয়ার কার্যক্রম ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হতো। এখন ভ্রাম্যমাণ এসব সুবিধাভোগী ১২ লাখ পরিবারকে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় আনা হবে। সেটি ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডেরই অংশ।
সাবেক সিনিয়র অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ জানান, এ উদ্যোগ ভালো। তবে অসুবিধা হচ্ছে শহরের গরিব মানুষকে শনাক্ত করা। অনেকে রেললাইনের পাশে, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ও বাসস্ট্যান্ডে ভাসমান বসবাস করেন। এরা স্থায়ী নয়। ফলে এদের মধ্যে ফ্যামিলি কার্ড কর্মসূচি বাস্তবায়ন কঠিন হবে। কঠিন হলেও এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা দরকার। বিশেষ করে শহরের বস্তিবাসীসহ নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোকে তালিকায় নিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো জানান, করোনার কারণে অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার আয়ের সূচকে নিচে নেমে গেছে। কিন্তু লজ্জায় মুখ খুলছে না। এরা আবার ফ্যামিলি কার্ড নিতে যাবে না। এদের বিকল্প নীতির মাধ্যমে সহায়তার বিষয়টিও সরকারকে ভাবতে হবে।
সূত্র জানায়, রাজধানীর ফ্যামিলি কার্ডধারীদের ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পেঁয়াজ, চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুর দেয়া হবে। তবে পরিবারপ্রতি এসব পণ্যের বরাদ্দের পরিমাণ এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকার বাইরে ফ্যামিলি কার্ড কর্মসূচিতে যে পরিমাণ পণ্য দেয়া হচ্ছে, ঢাকার ফ্যামিলি কার্ডে একই পরিমাণ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান ফ্যামিলি কার্ডপ্রতি দেয়া হচ্ছে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল ও দুই কেজি ছোলা। ওই হিসাবে ঢাকায় উপকারভোগীদের মধ্যে দুই দফা পণ্য বিতরণ করা হলে প্রয়োজন হবে ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চিনি, ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন মসুর ডাল, ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন সয়াবিন তেল ও ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ছোলা। তবে পণ্যের পরিমাণ কম-বেশি হলে মোট চাহিদার পরিমাণ কম বেশি হবে।
জানা গেছে, রাজধানীতের ট্রাক সেলে টিসিবি প্রতিদিন ৪০ হাজার পরিবারকে ভর্তুকি পণ্য দিয়ে আসছে। এরমধ্যে প্রতি পরিবারের জন্য দুই কেজি ছোলা, দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল ও দুই লিটার সয়াবিন তেল রয়েছে। শহরের ১২৫টি পয়েন্টে ট্রাক সেলে প্রতি মাসে ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন চিনি, ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ছোলা, ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন মসুর ডাল ও ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন সয়াবিন তেল উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, গত ৪ এপ্রিল শহরের ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রকে প্রধান করে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কমিটির সদস্য সচিব আছেন প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা। কমিটিতে সদস্য হিসাবে থাকছেন- সিটি করপোরেশনে সচিব, মেয়র মনোনীত দুইজন কাউন্সিলর ও একজন মহিলা কাউন্সিলর, সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, টিসিবি, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রতিনিধি এবং মেয়র মনোনীত দুজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। এই কমিটি সব ওয়ার্ডের প্রাপ্যতা অনুযায়ী ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ দেবেন। এছাড়া ওয়ার্ড কমিটি কর্তৃক প্রণয়নকৃত উপকারভোগীর তালিকা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে এ কমিটি। পরে আইসিটি বিভাগ থেকে তালিকা যাচাই-বাছাই করে আগামী ১৫ মের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য পাঁচ লাখ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য সাত লাখ উপকারভোগী নির্বাচন করা হবে। এসব উপকারভোগী নির্বাচন, যাচাই, বাছাই ও তালিকা প্রণয়নের জন্য দুই সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই কমিটির উপদেষ্টা হবেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। পাশাপশি সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সচিব এ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশন কাজ করেছে। ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ ট্রাক সেলের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে ১২ লাখ গরিব মানুষকে টিসিবির পণ্য দেয়া হয়েছে। শহরের দেড়শ’ পয়েন্টে ট্রাকের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি করা হয়। শহরের জন্য নতুন তালিকা তৈরির পর তাদেরও টিসিবির পণ্য ভর্তুকি মূল্যে দেয়া হবে।
জানা গেছে, করোনার কারণে দেশে ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন। এই দরিদ্র তালিকায় নতুন করে এসেছে ১ কোটি ২০ লাখ মধ্যবিত্ত পরিবার। করোনার পর শুরু হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ। এর প্রভাবে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার (ফাও) হিসাবে বিশ্ববাজারে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত পণ্যের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশি বাজারের ওপর। সম্প্রতি টিসিবির ট্রাক সেলের কাতারে অনেক মধ্যবিত্তকেও পণ্য নিতে দেখা গেছে। পণ্য নেয়ার জন্য তারা লাইনেও দাঁড়িয়েছেন। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকায় ফ্যামিলি কার্ড কর্মসূচি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
জামান / জামান
তিতাস গ্যাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সিবিএ এর অভিষেক ও শপথ অনুষ্ঠান
জাইকার সহায়তায় রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন TOD প্রকল্পের ৪র্থ সেমিনার আয়োজিত
ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ছয় দফা দাবি
জাইকার সহায়তায় রাজউক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন TOD প্রকল্পের ৪র্থ সেমিনার অনুষ্ঠিত
কামরাঙ্গীরচর থানার মোঃ আমিরুল ডিএমপি লালবাগ বিভাগে শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে নির্বাচিত
পেশাদারিত্ব ও মানবিকতায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখায় বিশেষ সম্মাননা পেলেন ডিসি মহিদুল ইসলাম
ঝিনাইদহ অফিসার্স ফোরামের নতুন কমিটি গঠন
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
বিনামূল্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শিখাচ্ছে পাথওয়ে
উত্তরায় SEDA ফাউন্ডেশনের ১৭তম মেধা যাচাইয়ে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে রাজউক চেয়ারম্যান, ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনায় নকশা দাখিল ও অপসারণের নির্দেশ
হাতপাখা নির্বাচিত হলে ঢাকা-১৮ কে একটি মডেল সিটি হিসেবে গড়ে তুলা হবেঃ আলহাজ্ব আনোয়ার