১৯ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
মানিকগঞ্জের সিংগাইরের চাঞ্চল্যকর গর্ভবতী স্ত্রী জুলেখা বেগম (১৯) হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সিরাজুল ইসলামকে (৩৯) ১৯ বছর পর গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার (২২ জুন) রাতে র্যাব-৪-এর একটি আভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চরসৈয়দপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৪-এর অধিনায়ক ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সিরাজুল ইসলামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাহেরচর এলাকায় এবং জুলেখা আক্তার (১৯) সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামের মো. আব্দুল জলিলের মেয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক জানান, ২০০২ সালের জুলাই মাসে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বাহেরচর এলাকার সিরাজুল ইসলামের সাথে সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামের মো. আব্দুল জলিলের মেয়ে জুলেখা বেগমের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে বেশকিছু নগদ অর্থ, গহনা এবং আসবাবপত্র বরপক্ষকে প্রদান করে জুলেখার পরিবার। বিয়ের পর হতে আসামি সিরাজুল স্ত্রী জুলেখাকে আরো যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত এবং ভিকটিমকে যৌতুক না দিতে পারলে তালাক দেবে মর্মে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত।
তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে ভিকটিম ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আসামি সিরাজুল তার প্রতিবেশী মোশারফ নামে এক যুবকের সাথে ভিকটিমের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে মর্মে সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভুয়া, অমূলক অভিযোগ তোলে এবং ভিকটিমকে আরো বেশি নির্যাতন করতে থাকে। আসামির নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভিকটিমের বাবা ও ভাইসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আসামির গ্রামে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভিকটিমের কোনো দোষ না পেয়ে এবং পরকীয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সালিশে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আসামি সিরাজুলকে গালিগালাজ করেন এবং ভিকটিমকে নির্যাতন না করার জন্য সতর্ক করে দেন।
ওই ঘটনার পর আসামি সিরাজুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মনে মনে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর আসামি সিরাজুল ভিকটিমকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি সিংগাইরের উত্তর জামশা গ্রামে যায় এবং ৬ ডিসেম্বর জুলেখাকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে মানিকগঞ্জ শহরে নিয়ে যায় সিরাজুল। মানিকগঞ্জ শহর থেকে আসামি সিরাজুল ভিকটিমকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি না গিয়ে কৌশলে তার শ্বশুরবাড়ির নিকটবর্তী কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি তার ব্যাগে থাকা গামছা বের করে ভিকটিম জুলেখার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীর পাড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মো. আব্দুল জলিল বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় সিরাজুলসহ তার বড় ভাই রফিকুল, মা রাবেয়া বেগম, খালু শামসুল, চাচা ফাইজুদ্দিন ও তাইজুদ্দিন এবং মামা আবুল হোসেনসহ ৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক আরো জানান, মামলার পরিপেক্ষিত সিংগাইর থানা পুলিশ উক্ত মামলার এজাহারনামীয় আসামি শামসুলকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে উক্ত আসামি ৩ মাস হাজত খাটার পর জামিনে মুক্তি পায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষে এজাহারনামীয় আসামি ভিকটিমের স্বামী সিরাজুল, ভাশুর রফিকুল, শাশুড়ি রাবেয়া এবং খালু শ্বশুর শামসুলসহ সর্বমোট ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন এবং এজাহারনামীয় বাকি ৩ আসামি ফাইজ উদ্দিন, তাইজুদ্দিন ও আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে তাদের অব্যাহতি প্রদান করেন।
পরবর্তীতে চার্জশিটের ভিত্তিতে আদালত উক্ত মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করেন এবং পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ভিকটিম জুলেখাকে হত্যাকান্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে ২০০৫ সালের শেষের দিকে মানিকগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মোতাহার হোসেন চার্জশীটে অভিযুক্ত আসামী সিরাজুল’কে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন এবং অপর ৩ জন আসামি ভাসুর রফিকুল, শ্বাশুরী রাবেয়া এবং খালু শ্বশুর শামসুল’কে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। উক্ত ঘটনার পর হতে আসামি সিরাজুল প্রায় ১৯ বছর পলাতক ছিল।
এ সময় ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক আরো বলেন, প্রথম স্ত্রী জুলেখাকে হত্যা করার পর আসামী সাভারে কয়েকদিন আত্মগোপনে থাকে। ২০০৫ সালে আসামী সিরাজুল পুনরায় বিয়ে করে। গ্রেফতারের মহূর্তে আসামি সিরাজুল তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন চর সৈয়দপুর এলাকায় বসবাস করে আসছিল। বর্তমান সংসারে তার একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রী ভিকটিম জুলেখাকে হত্যার পর থেকে আসামী আর কোনোদিন মানিকগঞ্জে যায়নি। তবে উক্ত হত্যার ঘটনার পর থেকে আত্মগোপন এবং গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আসামী সিরাজুল কখনো শরিয়তপুর, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করতো। এক যায়গায় সে বেশিদিন অবস্থান করতো না। তাছাড়াও পরিচয় গোপনের উদ্দেশ্যে সে প্রতিনিয়ত পেশা পরিবর্তন করত। সে বিভিন্ন সময় রিকশা চালক, ফেরিওয়ালা, সবজি বিক্রেতা, কুলি, রাজমিস্ত্রি, ট্রাকচালক এবং পরিবহন অফিসের দালালি করে জীবিকা নির্বাহ করতো এছাড়া তিনি নতুন ঠিকানায় সিরাজ নাম ধারন করে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর গ্রামকে বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে।
এমএসএম / জামান
হেডম্যান পাড়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার উদ্যােগের মহা আচরিয়া গুরু পূজা অনুষ্ঠিত
ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদে সমাজসেবা অফিস সহায়কের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কাউনিয়ায় শোকাবহ পরিবেশে ওসমান হাদীর গাইবানা জানাজা সম্পন্ন
আব্দুল আলী ও হালিবন নেছা ফাউন্ডেশন কর্তৃক মুকসুদপুরের ৩১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হলো মেধা বৃত্তি পরীক্ষা
শেরপুরের নকলায় নিখোঁজের চার দিন পর শিশু রেশমীর লাশ উদ্ধার
ভূরুঙ্গামারীতে শরীফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
তানোর কোয়েল পূর্বপাড়া গ্রামের স্বপন আলী অবৈধ মটার স্হাপন জনগণের মধ্যে চরম উত্তেজনা
বড়লেখায় আধুনিক ও ইসলামী শিক্ষার সমন্বয়ে "দারুল হিকমাহ আইডিয়াল দাখিল মাদরাসা"র উদ্বোধন
রায়গঞ্জে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত
শেরপুরে ওসমান হাদীর হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ
নবীগঞ্জে বনগাঁও ‘তারুণ্যের আলো’ সমাজ কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু
নেত্রকোণায় ভাষাসৈনিক এসকে চৌধুরী শিক্ষা বৃত্তি পেয়েছে ৩০ শিক্ষার্থী
শরীফ উসমান হাদী'র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান মুহসেনী
Link Copied