ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

তানোরে ডাক্তার থাকার পরও সেকমোদের দিয়ে চিকিৎসা


সোহানুল হক পারভেজ, তানোর photo সোহানুল হক পারভেজ, তানোর
প্রকাশিত: ২৭-৬-২০২২ দুপুর ৩:৩৮
খাতা-কলমে জনবল থাকলেও বাস্তবে মহাসিন্ডিকেটে মহাসংকটে রাজশাহীর তানোর হাসপাতালটি। ডাক্তার-কর্মচারী সবই আছে, শুধু নেই উপস্থিতি। আবার প্রতি মাসেই বেতন তুলছেন ঠিকই। এতই সংকট যে বিভিন্ন স্বাস্থ্য-উপকেন্দ্রের কর্মরত চিকিৎসক কমিউনিটি স্বাস্থ্য উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের (সেকমো) দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
 
অনিয়মতান্ত্রিকভাবে তালন্দ বাজারের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (সেকমো) মিজানুর রহমান উপজেলা হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে দেদার দেখছেন রোগী বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। অথচ সেখানে মেডিকেলের কর্মরত ডাক্তার দেবেন চিকিৎসা। কিন্তু কোম্পানির কট্রাকের ওষুধ বিক্রি করতেই স্বাস্থ্য উপ-কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের (সেকমো) দিয়ে বাণিজ্য করছেন মেডিকেল কর্মকর্তা বলেও অহরহ অভিযোগ। ফলে মেডিকেলের অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করতে এবং ডাক্তারদের উপস্থিত হওয়ার জন্য স্থানীয় সাংসদসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
 
সরেজমিন দেখা যায়, সোমবার (২৭ জুন) হাসপাতালের মূল গেটের পূর্ব দিকে ইমার্জেন্সির ঘর ও বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন অনেক রোগী। ছিল একাধিক ওষুধ বিক্র কর্মীও। এমনকি অনেক রোগীও বিক্রয়কর্মীদের ডাক্তার মনে করে রোগের কথা বলতেও দেখা যায়। প্রায় কক্ষে অবাধে বিচরণ বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয়কর্মীদের।
 
উপজেলার তালন্দ স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের কর্মকর্তা (সেকমো) মিজান ইমারজেন্সিতে বসে একে একে রোগী ডাকছেন আর প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছেন।
 
সেখান থেকে ভারপ্রাপ্ত টিএইচও ডা: আব্দুল হাকিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকালের সময়কে  জানান, তালন্দ স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে রোগী আসেন না এবং হাসপাতালে ডাক্তারের প্রচুর সঙ্কট। মুলত এজন্যই কর্মকর্তা ডাক্তার বার্নাবাস হাসদার অনুমতিক্রমে মিজান চিকিৎসা দিচ্ছেন। শুধু মিজান নয় স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে যারা আছেন তাদের সবাইকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে বলেছেন।
 
মিজান এখানে চিকিৎসা দিলে তালন্দ স্বাস্থ্য কেন্দ্রেকে চিকিৎসা দিবেন জানতে চাইলে তিনি সকালের সময়কে জানান, সেটা আমাদের বিষয় বলে দম্ভোক্তিও প্রকাশ করেন তিনি। মেডিকেলে যেসব ঔষধ আছে দেওয়া হয় না কি কারনে প্রশ্ন করা হলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি কি সব ব্যাপারে আপনাকে তথ্য দিতে বাধ্য। কে বলেছে। একজন কর্মকর্তার ভাষায় যদি এমন হয় তাহলে সেবার কি অবস্থা হবে।
 
উপজেলার তালন্দ স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের কর্মকর্তা ( সেকমো) মিজানুর রহমান সকালের সময়কে জানান, ওই কেন্দ্রে বসার পরিবেশ নেই। রোগীরাও আসতে চায়না। আপনি না থাকলে রোগী কিভাবে আসবে আর ইমার্জেন্সিতে কিভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, সরকারি এবং টিএইচও স্যারের নির্দেশে। তাছাড়া আমি কেন চিকিৎসা দিব। সরকার আপনাকে তালন্দ স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের জন্য চাকুরী দিয়েছেন, আর সরকার আপনাকে ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দিবে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, আমার কাছে অর্ডারের কাগজ আছে। আপনি কি ইমার্জেন্সিতে এভাবে চিকিৎসা দিতে পারেন  জানতে চাইলে আবারো বলেন, নির্দেশ মোতাবেক কাজ করছি বলে এড়িয়ে যান।
 
জেলা সিভিল সার্জন ডা: আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের কর্মকর্তা বা সেকমোদের মেডিকেলে এসে চিকিৎসা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তালন্দ স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের সেকমো মিজান ইমারজেন্সিতে  মেডিকেল কর্মকর্তা  কিভাবে আদেশ বা অর্ডার করতে পারেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, আমি এখনি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পুনরায় সেকমো মিজানকে বিষয়টি বলা হলে তিনি দম্ভক্তি প্রকাশ করে বলেন, আমি তো বললাম সরকারি অর্ডার আছে বলে এড়িয়ে যান তিনি।
 
জানা  গেছে, উপজেলা হাসপাতালে ২২ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। অথচ নীতিমালা লঙ্খন করে উপজেলার তালন্দ, কামারগাঁ, চৌরখৈর, মুন্ডুমালা ও মাদারিপুরসহ ৫টি ইউপি স্বাস্থ্য-উপকেন্দ্রের কর্মরত চিকিৎসক কমিউনিটি স্বাস্থ্য উপসহকারী কর্মকর্তাদের (সেকমো) উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে এসে আউটডোরেে চিকিৎসা দেওয়াচ্ছেন টিএইচও  । আবার হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ থাকার পরেও রোগীদের দেওয়া হয় না। শুধুমাত্র এন্টাসিড ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ লিখে রোগীদের কিনতে বাধ্য করছেন বলেও অহরহ অভিযোগ। এমনকি পার্শ্ববর্তী ক্লিনিক গুলোতেও মেডিকেলর ঔষধ চুরি করে বিক্রি করা হয়।
 
এদিকে ৫টি স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের ৫ জন কর্মকর্তা বা সেকমোদের হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়ার কারনে তালন্দ, চোরখৈর, কামারগাঁ, মুন্ডুমালা ও মাদারিপুর কেন্দ্রগুলো এক প্রকার অকেজো হয়ে পড়েছে । এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এমনিতে রোগী আসতে চাই না। এসেও লাভ হয় না। কারণ দিনের পর দিন ঘুরেফিরেও দারিদ্র্য অসহায় জনগোষ্ঠীরা কোনই চিকিৎসা সেবা পাই না।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোতলায় ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক ভুক্তভোগির পরিবার জানান, হাসপাতালের রোগীর বিছানায় ব্যবহৃত চাদর ও বালিসের কভারগুলো ময়লাযুক্ত দূর্গন্ধেভরা রয়েছে। সেই সাথে প্রচুর চার পোকা। রোগীর খাবার অত্যান্ত নিম্নমানের। ওয়ার্ড নার্সরা কক্ষ বন্ধ করে ভিতরে সামাজিক যোগাযোগের আড্ডায় মরিয়া।।
 
প্রয়োজনে রোগীর অভিভাবকরা নার্সদের ডাকলেও ভেতর থেকে কোন আওয়াজ বের না হলেও খারাপ ভাবে কথা বলেন এবং ধমকও দেন।  এছাড়া হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ আর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা রোগীদের দেয়া হয় না যা সরেজমিনে তদন্ত করলেই দূর্নীতির ভয়ংকর চিত্র ফুটে উঠবে বলে মনে করেন খোঁদ মেডিকেলের কর্মকর্তা কর্মচারী থেকে শুরু করে সচেতন মহল।

এমএসএম / জামান

আলোকবালীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা

কাপাসিয়ায় কড়িহাতা ইউনিয়নের মাস্টার ইয়াকুব আলী ফাউন্ডেশনের' উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

আলোকবালীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা মাজহারুল ইসলাম ইমন

সলঙ্গায় কচুরিপানার নিচ থেকে মানুষের পায়ের কঙ্কাল উদ্ধার

পাবিপ্রবি’র শিক্ষকদের জন্য কর্মশালা শুরু

ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা

হাটহাজারীতে মানবতার কল্যাণে আমরা সংগঠনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

চন্দনাইশে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

নাচোলে যথাযোগ্য মর্যাদায় ইলা মিত্রের জন্মশত বার্ষিকী পালিত

পাঁচবিবিতে গভীর রাতে ঝগড়া থামাতে বলায় প্রতিবেশির ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু

চট্টগ্রামে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আলোচনা সভায় বেগম সেলিমা রহমান

দাগনভূঞায় ফেনী-৩ উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে দুই হাজারের বেশি রোগীকে সেবা প্রদান

ভূরুঙ্গামারীতে গণমাধ্যমকর্মীর তৎপরতায় এক শিক্ষার্থী ফিরে পেল বই-খাতা আর স্বপ্নের স্কুলজীবন