নাটোরের বড়াইগ্রামে নকল বাবা সাজিয়ে সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
নাটোরে নকল বাবা সাজিয়ে দেড় কোটি টাকা মূল্যের ৩ দশমিক ৪৮ একর জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে ছেলে-মেয়েদের বিরুদ্ধে। বড়াইগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দলিল লেখকের সহযোগিতায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভুক্তভোগীর এক ছেলে।
বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করবেন- এমন আশঙ্কায় নকল বাবা সাজিয়ে নিজেদের নামে প্রায় সাড়ে ১০ বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার এ ঘটনা ঘটেছে বড়াইগ্রাম উত্তরপাড়া মহল্লায়। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, গত ২০ জুন বড়াইগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে বড়াইগ্রাম উত্তরপাড়া মহল্লার ইয়াসিন আলী মোল্লার ৩ দশমিক ৪৮ একর জমি জনৈক ব্যক্তিকে নকল ইয়াসিন মোল্লা সাজিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। বুধবার জমির মালিক বিষয়টি জানতে পারেন। পরে তিনি বড়াইগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিলের নকল কপি সংগ্রহ করে দেখেন তার সম্পত্তি অন্য কাউকে বাবা সাজিয়ে ছেলে ইয়াকুব মোল্লা, আবুল কালাম, একরামুল ইসলাম, মেয়ে ইসমা খাতুন, সাবিনা খাতুন ও সাবানা খাতুন এবং স্ত্রী মালেকা বেগমের নামে গোপনে রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী ইয়াসিন আলী মোল্লা বলেন, ছেলেরা আমার দেখাশোনা করে না। উল্টো মারধরের হুমকি দেয়। এর আগেও জীবনের ভয়ে আমি কিছুদিন বাড়িছাড়া ছিলাম। তারপরও আমি একটি পুকুরসহ অধিকাংশ জমি ছেলেদেরই চাষাবাদ করে খাওয়ার জন্য দিয়েছি। তবুও এবার তারা আমার প্রায় সব জমি জাল দলিল করে নিয়েছে। আমার ঘরে থাকা দলিল চুরি করে অন্য কাউকে বাবা সাজিয়ে তারা এ প্রতারণা করেছে। আমি বড়াইগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। আমি এ ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অভিযুক্ত একরামুল ইসলাম বলেন, জমি আমার বাবাই রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবেন, সেজন্য তিনি আমাদের কাছে টাকা চেয়েছেন। আমরা এ বছর টাকা দিতে পারব না বলে দেয়ায় ক্ষোভ থেকে তিনি এ অভিযোগ করেছেন।
জমির দলিল লেখক আনিসুল ইসলাম আনিস বলেন, দলিল সম্পাদন করেছি, কিন্তু সাবমিট করেছেন সমিতির সভাপতি। কোনো দুর্নীতি করলে তিনি করেছেন। তবে তিনি হজে গেছেন, দেশে ফিরে এলে এ ব্যাপারে জানা যাবে।
এদিকে, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বড়াইগ্রাম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার কানিজ ফাতেমা বলেন, ইয়াসিন মোল্লা আমার কাছে এসে দাবি করেছেন যে তিনি কোনো জমি রেজিস্ট্রি করে দেননি। তবে আমি দলিলে দেয়া ছবি ও দাতার চেহারা মিল পেয়েই স্বাক্ষর করেছি, পরবর্তীতে কিছু ঘটেছে কি-না তা জানি না। তিনি জমি ফিরে চাইলে আদালতে মামলা করতে পারেন বলে জানান কানিজ ফাতেমা।
এমএসএম / জামান