ঢাকা শুক্রবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৫

সিন্ডিকেটের কবলে যাদবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ


সোহেল রানা, ধামরাই photo সোহেল রানা, ধামরাই
প্রকাশিত: ২২-৮-২০২২ দুপুর ৪:১
সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে শতবর্ষী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নিয়োগ পরীক্ষায় ৫ নম্বর পেয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক আকলিমা আক্তার ও একটি সিন্ডিকেট চক্রের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে। এমন ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাদবপুর বি এম স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
 
অনুসন্ধানে জানা যায়, যাদবপুর বি.এম স্কুল এন্ড কলেজে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ শূন্যপদে ৭ জন শিক্ষক নেয়ার বিজ্ঞপ্তি দিলে ওই নিয়োগ পরীক্ষায় আকলিমা আক্তার নামে এক প্রার্থী ৫ নম্বর পায় প্রথম স্থান অধিকারী আ. আজিজের কাছে মোটা অংকের টাকা চাওয়া হয় এবং তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যোগদান হতে বিরত রাখা হয়। পরে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য করেন আকলিমা আক্তার গং।
 
সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মাহাবুবুর রহমানের সাথে গোপনে সাবেক সভাপতি দেওয়ান মো. আলাউদ্দিনকে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে গোপনে পুনরায় নামসর্বস্ব পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রক্সির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইনছান আলী ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে বেপারোয়া হয়ে ওঠেন আকলিমা আক্তার।
 
প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে ৩০ লাখ টাকা থাকলেও পরে ৯ লাথ টাকা পাওয়া যায়। ৪ মাসে ২১ লাখ টাকা তছরুপ করেন আকলিমা গং। উক্ত টাকার হিসাব দিতে না পারায় এলাকাবাসী ও সচেতন অভিভাবকবৃন্দ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তখনকার পরিস্থিতি সামাল দেয়। প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান হতে বিরত রাখেন মিজানুর রহমান নামে এক শিক্ষককে। বহালতবিয়তে আবার আকলিমা আক্তার। পরবর্তীতে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে প্রধান শিক্ষক পদে মো. আলী হায়দার নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কথা বলে দাকি করেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। পরে দেন-দরবার করে প্রধান শিক্ষক পদে আসীন হন বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. আলী হায়দার।
 
প্রধান শিক্ষক আলী হায়দারকে বিতাড়িত করতে আকলিমা আক্তার, মাহাবুবুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন তালুকদার, বাবু স্বপন কুমার দাসকে নিয়ে একটি চক্র তৈরি করেন। এরা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করতেন। এদের চাপে কাজ করতে বাধ্য হন অনেক শিক্ষকই।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষক আকলিমা আক্তার এর নিয়োগ প্রক্রিয়াই অবৈধ। সহকারী শিক্ষক হিসেবে যখন নিয়োগপ্রাপ্ত হন তখন নিয়োগ রেজুলোশন বহিতে ইংরেজী বিষয়ে থাকলেও নিয়োগ পত্রে সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে নিয়োগ দেখানো হয়। মিনিষ্টারী অভিট এ তাকে পাঠদান বহির্ভূত শিক্ষক দেখানো হয়। কিছু দিন আগে প্রধান শিক্ষক আলী হায়দারের স্বাক্ষর ও সীল মহর জাল করে এই চক্র জাহাঙ্গীর হোসেন তালুকদার কে অগ্রনী ব্যাংক, ধামরাই শাখা থেকে টাকা উত্তলন করে দেন। এ ভাবে তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানের প্যাড ও প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
 
প্রতিষ্ঠানের নামে ৭৮ শতাংশ জমি ভুয়া দাতা দেখিয়ে দান করে নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে সভাপতি বানিয়ে আকলিমা মাহাবুব গংদের খুটি আরো শক্ত করেন। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকায় অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে এর সত্যতা পাওয়ায় সভাপতি পদ থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। এমনকি আদালতেও উক্ত দলিল ভূয়া প্রমানীত হয়।
 
পরে নুরুল ইসলাম এর ভাই সিরাজুল ইসলামের নামে ঔই অর্পিত সম্পত্তি ভূয়া দলিল করে আদালতে মামলা করেন। মামলাও আদালতে খারিজ হয়ে যায়। পরর্তীতে মোকদ্দমা নং- ৩৫৫১/১৩। মামলাটির বিবাদী গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, জেলা প্রশাসক, ঢাকা এর পক্ষে মোঃ আলী হায়দার প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান যাদবপুর বি.এম স্কুল এন্ড কলেজের পক্ষ হয়ে মামলাটি পরিচালনা করে আসছেন। মামলায় অর্পিত সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১১ একর। যার বর্তমান মূল্য ৪ (চারশত) কোটি টাকা। উক্ত অর্পিত সম্পত্তি থেকে ৭৮ শতাংশ ভিপিকেস নং- ১৩৯/৭৪ যাদবপুর বি.এম স্কুল এন্ড কলেজের নামে লীজ নেওয়া হয়। বাকি সম্পত্তি নুরুল ইসলামের ভাই যাদবপুর স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আকলিমা আক্তারের স্বামী মাসুম সরকার ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের সামনের জমি ভোগ- দখল করে আসছেন বলে জানা যায়। স্কুলের মামলা পরিচালনার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতিষ্ঠান থেকে আত্বসাৎ করেন। ২ বছর ১১ মাস ১১ দিন প্রতিষ্ঠানের মামলা নং- ১/১৬ পরিচালনা না করায় মামলাটি আদালত কর্তৃক খারিজ হয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে আব্দুর রহমান মুন্সি তার নিজের মামলা নং- ৪৫৬ পরিচালনা করেন। মামলাটি এখনো আদালতে চলমান। স্কুলের স্বার্থে কাজ করায়  সিন্ডিকেট চক্রের প্রধান বাধা মোঃ আলি হায়দার।
 
বর্তমান প্রধান শিক্ষক আলী হায়দারকে স্কুলের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্ন করায় তিনি বলেন, ২০১৫ সালে যোগদান করে প্রতিষ্ঠানকে স্কুল থেকে কলেজ পর্যায়ে উন্নতি করণ, জে.এস.সি ও এস.এস.সি পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপন, নমব শ্রেণীর ভোকেশনাল কোর্স চালু, ১টি চার তলা ভবন নির্মাণ, ২টি তিন তলা ভবন নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর নিমার্ণ, প্রতিষ্ঠানের রাস্তা পাকা করণ, প্রধান গেট নির্মাণ, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাবসহ বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের অবদান রেখেছি। তার সময়ে যাদবপুর স্কুলে প্রায় ৫ (পাঁচ) কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এমনকি জে. এস. সি ও এস. এস. সি পরীক্ষার ২০১৫ সাল হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফলে দিক দিয়ে ঢাকা জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এরুপ সফলতাই প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেট চক্রের চক্ষুশূলে পরিনত হয়েছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. আলী হায়দার।

এমএসএম / জামান

গাজীপুরে অন্তহীন অভিযোগে অভিভাবকদের তোপের মুখে প্রধান শিক্ষক!

ভূঞাপুরে টাইফয়েড টিকাদান বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন সভা

রাণীশংকৈলে পুলিশের ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত

সবুজে ঢেকে যাক কালকিনি: পরিবেশ রক্ষায় আনসার-ভিডিপি’র অঙ্গীকার

অভয়নগরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

শ্রীমঙ্গলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত -১

তানোরে ব্যাক ডেট ও জালিয়াতি নিয়োগের তদন্তে হাজির হননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে স্কুল শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন

চট্টগ্রামে নেক্সাস ফেস্ট-২০২৫ সম্পন্ন

পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে: জামায়াতের অধ্যাপক মজিবুর রহমান

শ্রীপুরে পরিবেশ বিপর্যয় রোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা

অনার্সের খাতা দেখেন কলেজ হোস্টেলের গার্ড !

মানিকগঞ্জে ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারী আটক