ঢাকা সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

চট্টগ্রামে রাস্তায় ৫০ হাজার অনিবন্ধিত সিএনজি, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার


এসএম পিন্টু photo এসএম পিন্টু
প্রকাশিত: ১২-১০-২০২৫ রাত ১১:৫

সড়ক পরিবহন আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলায় চলাচল করছে প্রায় ৫০ হাজার অনিবন্ধিত সিএনজি অটোরিকশা। এর ফলে বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সড়কের দায়িত্বে থাকা বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশের অবহেলা বা থানা পুলিশের সাথে টাকার চুক্তিতে এসব গাড়ি চলাচল করছে বলে বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। মাঝে মাঝে অনিবন্ধিত কিছু গাড়ি আটক হলেও শাস্তি বা জরিমানার ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন আইন মানা হচ্ছে না। আইনে এধরণের অপরাধের জন্য ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান থাকলেও ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করছে প্রসিকিউশন। ফলে এসব গাড়ি নিবন্ধনে আগ্রহ নেই মালিকদের। জরিমানার টাকা দিয়ে তারা আবারো অন্যায়ভাবেই রাস্তায় গাড়ি চালানো শুরু করে। যথাযথ আইনের প্রয়োগ হলে রাস্তায় অনিবন্ধিত গাড়ি থাকবে না বলেও সূত্র দাবি করছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলার মিরশ্বরাই, সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, রাউজান,  রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, বোয়ালখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া,  চন্দনাইশ, লোহাগাড়া,  কর্ণফুলী,  আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলায় অনিবিন্ধিত সিএনজি অটোরিকশার দৌরাত্ম চরম অবস্থা বিরাজ করছে। এসব এলাকায় অনিবন্ধিত সিএনজির ভিরে নিবন্ধিত সিএনজি তেমন একটা চোখে পড়ে না। প্রতি উপজেলার সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে সেখানে বেশিরভাগই অনিবন্ধিত সিএনজি চলাচল করে। কোথাও থানা পুলিশের সাথে শ্রমিক নেতাদের চুক্তি আছে আবার কোথাও নেই। তবে দৌরাত্ম সকখানেই কমবেশি আছে। প্রত্যেক উপজেলায় গড়ে ৪ থেকে ৬ হাজার অনিবন্ধিত সিএনজি চলাচলের আনুমানিক সংখ্যার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 
 যেভাবে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার:
ঊাংলাদেশ রোড ট্র্যান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্র জানায়, প্রতিটি নতুন সিএনজি নিবন্ধন করলে  রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন স্মার্টকার্ড বাবদ সরকারের রাজস্ব খাতে ১৯৭৫০ টাকা জমা হয়। আর রুটপারমিটের জন্য সরকার পায় ২৪৫০ টাকা। অর্থাৎ নিবন্ধনের জন্য সরকারকে দিতে হয় ২২ হাজার ২০০ টাকা। এই হিসেবে ৫০ হাজার সিএনজির নিবন্ধন ফি বাবদ ১১১ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আবার প্রতিবছর ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন ও রুট পারমিট (৩ বছর অন্তর) নবায়নে সরকারকে রাজস্ব দিতে হয় ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা সেই হিসেবে সরকার আরো ৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার কথা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অবহেলায় সরকার এই রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  
কি বলছে সড়ক পরিবহন আইন:
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৪৭ নং আইনের ধারা ১৬ (১) এ বলা হয়েছে, ”কোনো ব্যক্তি বা মোটরযান মালিক রেজিস্ট্রেশন সনদ ব্যতীত সড়ক, মহাসড়ক বা পাবলিক প্লেসে মোটরযান চালাইতে বা চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না।
(৩) কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা মোটরযান মালিক রেজিস্ট্রেশন নম্বরপ্লেট সংযোজন ও প্রদর্শন ব্যতীত মোটরযান চালাইতে বা চালাইবার অনুমতি প্রদান করিতে পারিবেন না।”
একই আইনের একাদশ অধ্যায় অপরাধ, বিচার ও  দণ্ডের ক্ষেত্রে ৭২ ধারায় বলা হয়েছে, ”যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৬ (ছয়) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।”
কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন দণ্ড দেয়াও হয়না আর অপরাধও থামেনা।
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, অনিবন্ধিত গাড়ি আটকের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ধারা ১৬ ও বিধি ৭২ এর প্রয়োগ করা হয়না। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ছাড়পত্র দিয়ে থাকেন। ফলে এসব গাড়ির মালিকরা গাড়ি নিবন্ধন না করে আবার রাস্তায় চালানো শুরু করে। আইনের দুর্বল ব্যবহারের ফলে এর সুফল না পাচ্ছে রাষ্ট্র না পাচ্ছে জনগণ। তারা এটা না করে আদালতের মাধ্যমে ১০/২০ টা অপরাধের পূর্ণ জরিমানার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলে মালিকদের মাঝে নিবন্ধনের আগ্রহ জন্মাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।    
জেলা যানবাহন শাখার বক্তব্য:
জেলা যানবাহন শাখার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. রফিক অনিবন্ধিত সিএনজির দণ্ড আদায়ের বিষয়ে বলেন, প্রতি সিএনজি সরকারের খাতে ৩০০০ টাকা ও রেকার ভাড়া বাবদ ১২৫০ টাকা সহ মোট ৪২৫০ টাকা দিয়ে ছাড়পত্র দেয়া হয়। অনিবন্ধিত গাড়ির ছাড়পত্র দেয়া সড়ক পরিবহন আইনে অপরাধ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিপূর্ণ আইন বাস্তবায়ন করা খুব কঠিন, তবু আমরা একটা নির্ধারিত জরিমানা আদায় করছি। কিন্তু আপনারা এটা না করে রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দেয়ার বাধ্যবাদকতা আরোপ করলে অনিবন্ধিত গাড়ির সংখা কমবে বলে মনে করি, আপনি মনে করেন কি না জানতে চাইলে তিনি সিলিং সমস্যার কারনে জেলা সিএনজির নিবন্ধন বন্ধ থাকার কথা জানান। কিন্তু নিবন্ধন চালু আছে জানালেও তিনি তা বন্ধ আছে বলে দাবি করেন।
বিআরটিএ এর বক্তব্য: 
এব্যপারে বাংলাদেশ রোড ট্র্যান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (ইঞ্জি.) মো. মাসুদ আলম বলেন, চট্টগ্রামের জেলা এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা নিবন্ধন চালু আছে। কিন্তু নিবন্ধন ছাড়াই তারা চালাতে পারছে বলে রেজিস্ট্রেশনে তেমন আগ্রহ নেই।
ট্রাফিক বিভাগের বক্তব্য: 
এব্যপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) শেখ মো. সেলিম বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাচ্ছে, আমরা দায়িত্ব পালনে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। আপনার উত্থাপিত বিষয়গুলোর ব্যপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

এমএসএম / এমএসএম

চট্টগ্রামে রাস্তায় ৫০ হাজার অনিবন্ধিত সিএনজি, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

কসবায় টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

কুষ্টিয়ায় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গণে ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার, দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়রা

ধামরাই প্রেস ক্লাবের নির্বাচন : সভাপতি তুষার, সম্পাদক আহাদ

সাপ্টিবাড়ী ডিগ্রি কলেজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ, রফিকুল আলমের চাকরিচ্যুতি দাবিতে মানববন্ধন

তাড়াশে বিয়ে বাড়িতে চুরির ঘটনা

টুঙ্গিপাড়ায় শুরু হয়েছে টাইফয়েড ভ্যাকসিন টিকাদান কর্মসূচি

তেঁতুলিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পর্যটন কেন্দ্র এখন মোহনগঞ্জের গলার কাঁটা

অভয়নগরে শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণ

রাঙামাটিতে টাইফয়েড টিকাদান শুরু

শিবচরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ এর শুভ উদ্বোধন