ঢাকা সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চৌদ্দগ্রামে ২৫ লাখ টাকা নিয়ে নারী প্রতারক উধাও


মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম photo মুহা. ফখরুদ্দীন ইমন, চৌদ্দগ্রাম
প্রকাশিত: ২৮-৮-২০২২ দুপুর ২:৩৭

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিভিন্ন এনজিও ও মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনদের নামে ঋণ তুলে কিস্তির টাকা পরিশোধ না করে ২৫ লাখ টাকাসহ ১২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে উধাও হয়ে গেছে মোসা. মাসুকা বেগম (৩৫) নামে এক নারী প্রতারক। প্রতারণার এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছে তার মা-বোন, স্বামীসহ পরিবারের লোকজন। মাসুকা উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের খিরনশাল গ্রামের উত্তরপাড়ার তাজুল ইসলামের মেয়ে ও একই গ্রামের আব্দুল খালেকের স্ত্রী। এ ঘটনায় আবুল কালাম সোহেল নামে এক ভুক্তভোগী মাসুকা ও তার স্বামী আব্দুল খালেক, ছেলে মাসুদ, ভাই সাদ্দাম, সুমন ও মা হাজেরা বেগমকে বাদী করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে, মাসুকা বেগম তার এক ভাইকে বিদেশে পাঠানো ও বিদেশে থাকা অপর ভাইয়ের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত করার কথা বলে প্রতিবেশী মৃত ইউসুফের ছেলে আবুল কালাম সোহেলের কাছ থেকে এক সপ্তাহের কথা বলে ১২ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক দেয়ার জন্য নিয়ে যান। পরে ওই স্বর্ণালঙ্কারগুলো বন্ধক থেকে ছাড়িয়ে আনার কথা বলে সোহেলের মায়ের নামে এনজিওসহ বিভিন্ন সমিতি থেকে অন্তত ৭ লাখ টাকার ঋণ তুলে আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া নানা প্রলোভন দেখিয়ে একই গ্রামের শাহিনুর, তাসলিমা বেগম, আয়েশা বেগম, আতর ইসলাম, রুজিনা বেগম, হনুফা বেগম, নিলুফা বেগম, রতনা বেগম, পারভিন বেগম, রাজিয়া বেগম, তাহেরা বেগম, মাহফুজা বেগম, মানজুমা বেগম, আব্দুল খালেকসহ কমপক্ষে ২০ জনের নামে ব্র্যাক, ব্যুরো বাংলাদেশ, এসএসএস, প্রত্যাশীসহ বিভিন্ন এনজিও এবং মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন পরিমাণে ঋণ উত্তোলন করেন। ঋণের এ টাকাগুলো উত্তোলন করে মাসুকা প্রথম প্রথম বিভিন্ন নামে উত্তোলনকৃত সে ঋণের বিপরীতে সাপ্তাহিক বা মাসিক হারে দুয়েক কিস্তি নিজে পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে মাসুকা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় ও উপরোল্লিখিত ব্যক্তিদের নামে উত্তোলনকৃত কারো ঋণই পরিশোধ না করায় ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাঠ কর্মকর্তারা এসে যাদের নামে ঋণ দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে ঋণের কিস্তি আদায় করেন।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে মাসুকা পলাতক থাকার পর এবং ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতার ধারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়ায় ভুক্তভোগিরা বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা সামাজিকভাবে মাসুকার পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করলে মাসুকাকে হাজির করে তার পরিবার। এরপর কয়েক দফা গ্রাম্য সালিশে মাসুকা টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শীঘ্রই পাওনাদারদের টাকা দিয়ে দেবেন মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। এরপর কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও ভুক্তভোগীরা টাকা না পেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ দায়েরের পর থানার এসআই তোফায়েল ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জেনে গত শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিষয়টি নিয়ে থানায় বৈঠকে বসার নিমিত্তে উভয়পক্ষকে থানায় আসতে বলেন। কিন্তু এতে বিবাদীপক্ষ অনুপস্থিত থাকায় বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হন।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী আবুল কালাম সোহেলসহ অন্যান্য ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, মাসুকা তার স্বামীসহ পরিবারের লোকজনের সার্বিক সহযোগিতায় নানা কৌশল অবলম্বন ও প্রলোভন দেখিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিবেশী অনেকের নামে কয়েকটি এনজিও থেকে বিভিন্ন পরিমাণে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করে উধাও হয়ে যায়। আমাদের এ টাকা দিয়ে সে তার দুই ভাইকে বিদেশ পাঠায় এবং এ টাকায় তারা সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। এছাড়াও মানুষের কাছ থেকে নেয়া টাকায় বাড়িতে ঘর নির্মাণসহ নিত্যনতুন নানা আসবাবপত্র ক্রয় করে বিলাসী জীবনযাপন শুরু করে মাসুকা। অবাক করা বিষয় হলো, কারো লেনদেনের বিষয়ে কেউ জানত না। এখানে সে খুবই চতুরতা দেখিয়েছে। পরে তার আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় বিষয়গুলো এলাকায় জানাজানি হয়। আমরা সামাজিকভাবেও বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে কয়েকবার গ্রাম্য সালিশে পর্যায়ক্রমে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা না করায় আমরা আইনের দারস্থ হয়েছি। আমরা আমাদের পাওনা টাকা ফেরত পেতে এবং মাসুকার মতো এমন জঘন্য প্রতারকের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিতে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছি’।

এ ব্যাপারে জানতে মাসুকার বাড়ি গিয়ে তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার মা হাজেরা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি মানুষের কাছ থেকে মাসুকার টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। কেউ যদি টাকা দিয়ে থাকে তারা আর যে টাকা নিয়েছে সে জানে।

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই মো. তোফায়েল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী কর্তৃক থানায় অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশি তৎপরতায় সামাজিকভাবে বৈঠকে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিবাদীপক্ষের অনুপস্থিতির কারণে এখন পর্যন্ত সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়নি। প্রতারক চক্রটি বেশ ধূর্ত প্রকৃতির। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাবউদ্দিন মজুমদার রানা বলেন, মাসুকা ও তার পরিবারের প্রতারণার বিষয়টি সত্য। তারা নানা কৌশলে এলাকার অসহায় মানুষদের কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়ে গেছে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। গ্রাম্য সালিশি মাসুকা ও তার পরিবারের লোকজন টাকা পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। সমাধান না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করেছে। এরপরও অসহায় এ লোকগুলোর পাওনা টাকা উদ্ধারে একজন ইউপি সদস্য হিসেবে আমার যা করণীয়, তা করব।

এমএসএম / জামান

মিরসরাইয়ে দাড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানের পেছনে বাসের ধাক্কায় নিহত হেলপার

জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে কুষ্টিয়ায় মাসিক রাজস্ব সভা অনুষ্ঠিত

রায়পুরে সরকারি খাস জমিতে অবৈধ স্থাপনা, উচ্ছেদে ধীরগতি

জমির জন্য বৃদ্ধ দম্পতিকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ

শ্রীপুর পৌর শহরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

আত্রাইয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অপসারণ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

জয়পুরহাটে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

মেহেরপুরে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

হাটহাজারী সাব রেজিস্টার অফিসে মূল দলিলের পাতা গায়েব করে ভুয়া পাতা সংযুক্ত

আগামী নির্বাচনে তারেক রহমানকে সংসদীয় ৫ আসনে উপহার দিতে মীর হেলাল উদ্দিনের বিকল্প নাই -গিয়াস উদ্দীন

১৪৫ কোটি টাকার ফেরিঘাটে নেই ফেরি, সরকারের নতুন চিন্তা

জলবায়ু পরিবর্তনের ছোবল: স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় সন্দ্বীপে কর্মশালা

টুঙ্গিপাড়ায় মধুমতি সংযোগ খাল কচুরিপানায় বন্ধ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী