‘কালো মানিক’-এর দাম নিয়ে চিন্তিত মালিক সুমন
আসছে কোরবানির ঈদে ক্রেতাদের নজর কাড়বে ময়মনসিংহের ত্রিশালের ‘কালো মানিক’। ইতোমধ্যে গরুটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তবে করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে ন্যায্যমূ্ল্য নিয়ে চিন্তিত গরুর মালিক জাকির হোসেন সুমন। গরুটি লালন-পালন করতে প্রতিদিন গড়ে তার দুই হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
চার বছর ধরে ফ্রিজিয়ান ষাঁড়টি লালন-পালন করছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের জাকির হোসেন সুমন। গত বছর কোরবানির ঈদের আগে ষাঁড়টির নাম দিয়েছিলেন কালো মানিক। এখন ত্রিশালসহ জেলা শহরেও কালো মানিক নামটি বেশ পরিচিত। এবার ঈদের আকর্ষণীয় এই ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন সুমনের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন সৌখিন মানুষেরা। লালন-পালনে খরচ বেশি হওয়ায় গরুটি বিক্রি করার আশা ব্যক্ত করেছেন সুমন।
জাকির হোসেন সুমন বলেন, ২০১৭ সালে স্থানীয় বাজার থেকে শখের বসে ফ্রিজিয়ান কালো রংয়ের এই ষাঁড়ের বাছুরটি ক্রয় করেন। লালন-পালন করতে করতে কেমনে চারটি বছর চলে গেল খোঁজও পাননি তিনি। গরুটি লম্বায় ১০ ফুট। মাংস হবে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কেজির মতো। সুঠাম আকৃতির এই গরুটি লালন-পালন করতে সারাদিন দুজন লোকের প্রয়োজন হয়। নিয়মিত দেখাতে হয় চিকিৎসককে। খাবার খাওয়ানো হয় খৈল, ভুসি, খড়, কাঁচা ঘাস, ভুট্টা এবং সয়াবিন। প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ হয় কালো মানিকের পেছনে।
তিনি আরো বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কালো মানিকের দাম চাচ্ছেন ২৫ লাখ টাকা। তবে কিছু কম-বেশি হলেও বিক্রি করে দেবেন। কিন্তু করোনার ভয় সব সময় তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। গরুটি লালন-পালন করতে তার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে পাইকাররা দাম হাঁকাচ্ছেন ১২ লাখ টাকার মতো। তার আশা, ঈদের আগেই ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হবে কালো মানিক।
স্থানীয় সাজেদুল হক ও জাফর ইকবাল বলেন, এবারের কোরবানির ঈদে কালো মানিক ময়মনসিংহ তথা সারাদেশের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় গরুগুলোর মধ্যে একটি হবে। এতবড় গরু জীবনে তারা খুব কমেই দেখেছেন। গরুটিকে কেন্দ্র করে ত্রিশাল উপজেলা সারাদেশে অন্যভাবে পরিচিতি পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি গরু লালন-পালন করায় মালিককে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের প্রত্যাশা, ঈদে কালো মানিকের ন্যায্যমূল্য পাবে মালিক। সরকারি সহযোগিতা পেলে এসব বড় গরু পালনে খামারিরা উৎসাহ পাবে।
পশু চিকিৎসক কামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে তিনি কালো মানিকের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে কালো মানিককে লালন-পালন করা হয়েছে। এমন গরু খুব কমেই দেখা যায়। এর মাংস সুস্বাদু হবে। তবে করোনার কারণে হয়তো প্রকৃত মূল্য নাও পেতে পারেন বলে ধারণা তার।
ময়মনসিংহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রশাসনিক সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে তাদের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রিতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উৎসাহ দিতে। সেই আঙ্গিকে কাজও করা হচ্ছে। এবার যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশের বাইরে থেকে বৈধ ও অবৈধ গরু আসার সুযোগ নেই। তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে গবাদিপশু লালন-পালন করছেন তারা এ বছর ন্যায্যমূল্য পাবেন, হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু ঈদ আমাদের ধর্মীয় বিষয় তাই অনলাইন ছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু হাট বসবে। তবে যে হারে করোনা বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা ছাড়া কোনোভাবেই হাট পরিচালনার অনুমতি দেয়া হবে না।
এমএসএম / জামান