পাথরঘাটায় হামলা-মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপির অনেকেই বাড়িছাড়া

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীসহ দলটির অনেক সমর্থক হামলা-মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া এবং পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এলাকায় বিএনপি দলীয় যেসব লোকজন রয়েছেন তারাও কোণঠাসা অবস্থায় জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
 
পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুক বলেন, তেল গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা অনুযায়ী ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি। ওই সমাবেশে যোগদান করার লক্ষ্যে ৪ সেপ্টেম্বর রবিবার বিএনপি দলীয় সাবেক তিন বারের এমপি আলহাজ্ নুরুল ইসলাম মনি ঢাকা থেকে বরগুনার পাথরঘটার নাচনাপাড়ায় নিজ বাড়িতে আসার পথে রায়হানপুর ইউনিয়নের সিএন্ডবি নামক স্থানে আসা মাত্রই মনিকে এগিয়ে আনতে যাওয়া গাড়ি বহরে ও তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন।

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মনি,তার ভাই সাইফুল ইসলাম জামাল ও পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুকসহ বিএনপি দলীয় ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ৫ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কাকচিড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন পল্টু।মামলা হওয়ার পরে অজ্ঞাত আসামির কথা বলে পুলিশ ও আওয়ামীলীগ দলীয় বিভিন্ন লোকে উপজেলার বিএনপি দলীয় লোকজনকে মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন ৪ সেপ্টম্বর থেকে দফায় দফায় উপজেলার বিএনপি দলীয় লোকজনের ওপর হামলা করে আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীল দলীয় অঙ্গসংগঠন। এতে কাকচিড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মৃত মোক্তার আলী ফকিরের ছেলে মো. ইলিয়াস ফকির, কাকচিড়া ইউনিয়নের মো. জলিল, রায়হানপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের যুবদলের, মো. হানিফ, ৭নং ওয়ার্ডের সোহরাব, কাঠালতলী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মে. শাহ জালালসহ পাথরঘাটা উপজেলার বিএনপি দলীয় অনেক নেতা কর্মী আহত হন। এছাড়া কাকচিড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম পহলানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাকরা সহ উপজেলার একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এম মতিয়র রহমান মোল্লা বলেন, মামলা হওয়ার পরে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে অজ্ঞাত আসামির মামলায় তালিকাভুক্ত করার ভয় দেখান। একই ভাবে অভিযোগ রয়েছে পাথরঘাটা উপজেলার বিএনপি দলীয় বহু নেতাকর্মী। এছাড়াও ৪ সেপ্টেম্বর ঘটনা স্থলে না থেকেও মামলার আসামি হয়েছেন অনেকে।

জানতে চাইলে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো.ফারুক বলেন, ৪ সেপ্টেম্বর সম্পূর্ন অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায় আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন। তিনি বলেন হামলায় আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়াসহ দুই শতাধিক মটর সাইকেল ভাংচুর করা হলেও উল্টো আমাদের নামে ৫ সেপ্টেম্বর মামলা করে আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামীলী ও পুলিশ।

চৌধুরী ফারুক বলেন, ১২ সেপ্টেম্বর মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিগন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও এলাকায় ফিরতে ভয় পাচ্ছেন তারা। তিনি বলেন এছাড়াও অজ্ঞাত আসামির নামে ব্যাপক ভাবে আমাদের নেতা কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে জানতে চাইলে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, মামলার এজাহার নামীয় আসামিদের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। মামলার অজ্ঞাত আসামিদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন ভীডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।