মান্দায় পেঁয়াজ বীজ প্রণোদনার টাকা আত্নসাত কৃষি কর্মকর্তার
নওগাঁর মান্দায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বাড়াতে সোমবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলা চত্বরে ১৫০ জন কৃষককে বিনামূল্যে প্রণোদনা সামগ্রী ও পেঁয়াজ বীজ বিতরণ করা হয়। বরাদ্দের তালিকা অনুসারে, একজন কৃষক ১ কেজি পেঁয়াজ বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ২০ কেজি এমওপি সার, ১০০ টাকার বালাইনাশক এবং জমি প্রস্তুতি, সেচ ও বাঁশের বেড়া তৈরিতে বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার ৮০০ টাকা পাবেন।
সেই সঙ্গে ২ হাজার ১০০ টাকার পলিথিন ও ১৫০ টাকার সুতলি দেওয়ার কথা আছে। অথচ তালিকার বরাদ্দকৃত পুরো অর্থ পায়নি কৃষক। জেলা থেকে পাঠানো বরাদ্দকৃত তালিকার তথ্য গোপন করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন করেছেন সীমাহীন দুর্নীতি। অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পেয়ে কৃষি অফিস থেকে তালিকা সংগ্রহের পর সরেজমিনে উপজেলার প্রণোদনার তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছে গেলে দেখা যায়, বীজতলা তৈরিতে যে মানের দড়ি পলিথিন প্রয়োজন তা পায়নি কৃষক।
সূত্র বলছে, একজন কৃষক যেখানে ২১০০ টাকার পলিথিন পাবে সেখানে এর বিপরীতে কৃষককে দেওয়া হয়েছে মাত্র ২ থেকে ৩ কেজি সাদা রঙের পাতলা পলিথিন । যার বর্তমান বাজার মূল্য কেজি প্রতি ১৫০টাকা। গড়ে ৩ কেজি পলিথিনের মূল্য আসে ৪৫০ টাকা। একজন কৃষক ২ হাজার ১শত টাকার পলিথিনের বদলে পেয়েছেন মাত্র ৪৫০ টাকার পলিথিন। শুধুমাত্র পলিথিনে দুর্নীতি হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।
একই ভাবে ১৫০টাকা মূল্যে ১কেজি সুতলির বদলে কৃষক পেয়েছেন হরিণ মার্কা ৩টি প্লাস্টিকের দড়ি যা ১কেজিতে ৭টি ধরে মূল্য ৮২ টাকা। এক একটি দড়ির পাইকারি কয়েলের মূল্য মাত্র ১২টাকা। যার ৩টি প্লাস্টিকের কয়েলের মূল্য দাঁড়ায় ৩৬ টাকা। এখানে বরাদ্দকৃত ১৫০টাকার মধ্যে কৃষককে ১১৪ টাকা দেওয়া হয়নি। দড়িতে দুর্নীতি প্রায় ১৭ হাজার টাকা।
এছাড়াও আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ ও, পরিবহণ ব্যয়ের টাকা পায়নি কৃষক। এছাড়া সাংবাদিকদের কাছে তথ্য গোপন করে কৌশলে ২১০০ টাকার পলিথিনের জায়গাতে, পলিথিনের পরিমান ১৫০ ব.মি হিসাবে প্রদান করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে তথ্য প্রদান করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন ।
মৈনম ইউপির আনিছুর রহমান, মান্দা ইউপির ওছমান আলী, কালিকাপুর ইউপির আশরাফুল ইসলাম ,কুসুম্বা ইউপির আব্দুল করিম, নুরুল্যাবাদ ইউপির খুশি কুমার, সহ অন্যান্য সকল ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, ১ কেজি পেঁয়াজ বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ২০ কেজি এমওপি সার, ও থিমিড ৫০ মিলি একটি ওষুধের বোতল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কেউ ১ কেজি সাড়ে ৭০০ গ্রাম এবার কেউ প্রায় ৩ কেজি পাতলা পলিথিন, তিনটি প্লাস্টিকের দড়ি ও ২৮০০টাকা পেয়েছেন। মোট পলিথিন বড়জোর ৪ থেকে ৫শত টাকার হবে। ভাল মানের দড়ি খুচরা বাজারে ১৫ টাকা পিচ মহিসেবে ৩টি বান্ডিলের মূল্য সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন অনিয়মের বিষয়টি শিকার করে বলেন, অফিসের বিভিন্ন খরচ (চা নাস্তার) জন্য কৃষকদের পলিথিনে বরাদ্দকৃত ২ হাজার ১শত টাকা থেকে কিছু কেটে রাখা হয়েছে। কেটে রাখা টাকা গুলো সরকারি কোষাগারে ফেরত দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি না বলেন। নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই । খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।
প্রীতি / প্রীতি