ঢাকা শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

বিক্রির হিরিক নেই মৃৎশিল্পের-চিন্তায় কপালে ভাঁজ মৃৎশিল্পীর


আবুল কালাম আজাদ, উলিপুর photo আবুল কালাম আজাদ, উলিপুর
প্রকাশিত: ১৩-২-২০২৩ রাত ৮:৪৩

কুড়িগ্রামের উলিপুরে মাটির তৈরি পন্যের দোকানে নেই বিক্রির হিরিক। কপালে ভাঁজ পড়েছে মৃৎশিল্প বিক্রেতাদের। কালের বিবর্তনে হারাতে বসেছে মৃৎশিল্পের। যেসব হাটে বাজারে মাটির তৈরি হাঁড়ি পাতিল, থালা, গ্লাসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্রের বিক্রি করতে দম হারিয়ে ফেলত। সেসব বাজার এখন দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক ও এলুমিনিয়ামের পণ্য। হাট বাজার গুলোতে তেমন বিক্রি না থাকায় মৃৎশিল্পীদের সংসার পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

সরেজমিন উপজেলার হাট ও বজারের প্রাণকেন্দ্রে উলিপুরের হাটে গিয়ে দেখা যায়, মৃৎশিল্পিরা মাটির তৈরি বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে ক্রেতার আশায় সকাল থেকে বসে আছেন। নেই কোন ক্রেতার দেখা। দু'জন একজন ক্রেতার দেখা মেলে দুপুর গড়িয়ে বিকেলে। মাটির তৈরি পন্যের উপর এতই অনিহা তা লক্ষ্য করা যায়। এত অনিহা আসার কারণ হচ্ছে বাজারে এখন দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক ও এলুমিনিয়ামের পণ্য। তার পরেও জীবন বাঁচার তাগিদে পারিবারিক ব্যবসা হিসেবে সেই ঐতিহ্যের ধারাটিকে আঁকড়ে ধরতে সময়ের সাথে লড়াই করে যাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা।

উপজেলা নাড়িকেলবাড়ি থেকে মৃৎশিল্প  কেনাকাটা করতে আসা মালেকা বেগম বলেন, আমি পিঠা ভাজার জন্য তাওয়া কিনতে এসেছি। ১০ টাকা দিয়ে ক্রয় করলাম। দুধ পিঠা ভাজতে তাওয়ার প্রয়োজন হয়। তিনি আরও বলেন, বাঙালির শিল্প-সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে হাজার বছরের ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্য বাঙালি বুকে লালন ও পালন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। তেমনি বাংলার এক শিল্প মৃৎশিল্প। এই শিল্পের অতীত ঐতিহ্য খুবই সমৃদ্ধশালী। হাঁড়িপাতিল থেকে শুরু করে ঘর-গৃহস্থালি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার হতো মৃৎশিল্পের নানা তৈজসপত্র। তবে এখন আর সেসবের অনেকটাই নেই বললেই চলে।

উপজেলার বিভিন্ন হাট ও বাজারে মাটির তৈরি জিনিস গুলো আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে কলস ৫০ থেকে ১০০ টাকা, পাতিল ১২ থেকে ২০ টাকা, সরা ১০ থেকে ২০ টাকা, বাটনা ৩০ টাকা, ঢাকনা ১০ টাকা, তাওয়া ২০ টাকা, চারি ৩৫ থেকে ২'শ টাকা, ধুপাতি ১৫ টাকায় বিক্রি করেন। 

উপজেলার অনন্তপুর কুমারপাড়া গ্রামের মাটির তৈরি তৈজসপত্র বিক্রেতা পরেশ চন্দ্র জানিয়েছেন, মাটির তৈজসপত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন হয় আঠালো ধরনের মাটি। আগে মাটির স্থান চিহ্নিত করা হয়, তারপর গর্ত করে জমির ৮ থেকে ১০ হাত নিচ থেকে এ মাটি সংগ্রহ করতে হয়। আগে জমির মালিককে টাকা দিতে হতো না। এখন মাটি আগের মতো পাওয়া যায় না। গর্ত করতে হয় বলে অনেকেই জমি থেকে মাটি দিতে চায় না। দিলেও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়। শুকনা মৌসুমে মাটি সংগ্রহ করা লাগে। তারপর সারা বছর কাজ চলে। এ ছাড়া জ্বালানি কাঠও আগে কিনতে হয়নি। এখন এক মণ জ্বালানি কাঠ কিনতে লাগে ১৫০ টাকা। তাই আমাদের এ মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে গেছে।

মৃৎশিল্পী উপেন্দ্র পাল বলেন, ‘আগে সবকিছু ফ্রিতে মিলত। এখন মাটি, লাকড়ি—সবকিছু কিনা (ক্রয়) লাগে। টাকা দিয়ে পোষাতে পারি না। আর্থিক সহযোগিতা পাইলে ব্যবসাকে বাড়ানো যাইত।’ তা নাহলে মৃৎশিল্প ও মৃৎশিল্পীদের টিকিয়ে রাখা অসম্ভব বলে জানান তিনি। 

মৃৎশিল্পী মন্টু চন্দপাল বলেন, সামনে বৈশাখ মাস আসতেছে বৈশাখী মেলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হতে যাচ্ছে। মেলাকে কেন্দ্র করেও মৌসুমি ব্যবসা হিসাবে প্রস্তুতি নিতে প্রায় ২০ হাজার টাকার মাটি ক্রয় করা হয়েছে। প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে কলস, হাঁড়ি, সরাসহ নানা রকম তৈজসপত্র। হাতে হাতে তৈরি হচ্ছে হাতি-ঘোড়া, নানা জাতের পাখি, মাটির ব্যাংক, ফলসহ অনেক রকম খেলনা। তাতে হাত লাগিয়েছেন ঘরের নারীরাও। সেগুলো তুলির আঁচড়ে রঙিন, নজরকাড়া করে তুলেছেন প্রতিটি পণ্যকে। এরপর এ পণ্য বিক্রির জন্য বাড়ির পুরুষেরা নিয়ে যাবেন এলাকার বিভিন্ন মেলায় ও বিভিন্ন হাটবাজারে। এগুলো পণ্য বিক্রি করতে পারলে প্রায় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভের আশা করছেন। তবে তা আর আগের মতো নেই। অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকপণ্য মাটির তৈজসপত্রের স্থানটি দখলে নিয়েছে। তারপরও মৃৎশিল্পের চাহিদা এখনো শেষ হয়ে যায়নি।

বিক্রি করতে আসা মৃতশিল্পি হরি চন্দ্র পাল বলেন, বিশ্বায়নের নামে নিজস্ব ঐতিহ্য পরিত্যাগ করা উচিত নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশই তার ঐতিহ্য-সংস্কৃতি নিয়েই আধুনিকতার দিকে ধাবিত হয়েছে। এ অবস্থায় অন্যান্য কারুশিল্পের মতো মাটির তৈরি তৈজসপত্র তৈরির ধারাটির সুরক্ষা আবশ্যক। এজন্য চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তৈজসপত্র তৈরিতে মনোযোগী হতে হবে, সেটা কিছুটা হচ্ছেও বটে। যেমন কুমাররা পোড়ামাটির, টব, খুঁটি ও রিং তৈরি করছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, কুমারদের চাহিদাসম্পন্ন পোড়ামাটির সরঞ্জাম তৈরির প্রশিক্ষণ এবং বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করা গেলে এ খাতের উন্নতি ঘটবে এবং অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে জানান তিনি।

এমএসএম / এমএসএম

টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভবন থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল নেই,ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা

নবীনগরে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এম. এ. মান্নানের নির্বাচনী জনসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত

কুমিল্লায় ইমাম–খতীব সম্মেলন রোববার,প্রধান অতিথি ধর্ম উপদেষ্টা

নন্দীগ্রামে ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া প্রতিহতের আহ্বান সাংবাদিকদের

লাকসামে জামায়াত প্রার্থী সরওয়ারের বিশাল হোন্ডা র‌্যালী

মনপুরায় সফরকালে সুধীবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা করেন জেলা প্রশাসক

দুমকীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি-নেত্রকোনায়-জামায়াত নেতা মতিউর রহমান আকন্দ

ফাঁদে ফেলে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক গ্রেপ্তার

বাস-ইজিবাইকের সংঘর্ষে নিহত ৪

নোয়াখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চিকিৎসাধীন সাবেক ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যু

কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি, এমডি রাব্বিক হাসানের বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতাদের সরব অভিযোগ