ঢাকা শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫

স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র কার জন্য কার স্বার্থে


মানিক লাল ঘোষ photo মানিক লাল ঘোষ
প্রকাশিত: ১০-৪-২০২৩ দুপুর ৩:৩১

 গত  বেশ কয়েকদিন ধরে  দেশব্যাপী আলোচনা  সমালোচনার খোরাক সৃষ্টি করেছে দৈনিক প্রথম আলো।   ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর অন লাইনে  একটি ছবি বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এই ছবিকে কেন্দ্র করে চলছে  বহুমুখী রাজনীতি।

  বাঙালির অত্যন্ত স্পর্শ কাতর দিন ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস।   এই দিনটির সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের আাবেগ,ভালেবাসা, ও স্বজন হারানোর স্মৃতি।জড়িয়ে আছে আমাদের অহংকার ও আত্মমর্যাদাবোধ।  সেই বিশেষ দিনে মুক্তিযুদ্ধের  পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর  রাজাকার, আলশামস, আলবদর বাহিনীর  নৃশংসতা নিয়ে প্রকাশিত গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে  পাঠকদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে  স্বাধীনতা শব্দটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে   প্রথম আলোর  এমন  ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন  উঠেছে সবার মনে।  কার স্বার্থে  কোন এজেন্ডা বাস্তবায়নে পাঠে নেমেছে প্রথম আলো?   স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করছেন প্রথম আলো এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ছাপিয়েছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করতে  কাদের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে প্রথম আলো?  কেন তারা   চাল-ডালের রাজনীতি করতে চায়।

হাজার বছরের বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদার নাম স্বাধীনতা।  ৩০ লাখ শহীদ আর  ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত  স্বাধীনতাকে  যারা প্রশ্নবিদ্ধ করে, অমর্যাদা করে, অসম্মান করে তারা কখনো  স্বাধীনতার সপক্ষের হতে পারে না। হয় তারা বিদেশি কোন অপশক্তির পেইড এজেন্ট, ৭১  সালে ও তারা আমাদের বিপক্ষে  ছিল ।  না হয় তারা স্বাধীনতা বিরোধী  পাকিদের  দোসর এখনো যারা বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার স্বপ্ন দেখে।  অথবা তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি মেনে  নিতে পারছে না। 

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়।  কিন্তু  স্বাধীনতা  আওয়ামীলীগের একার  অর্জন  নয়। সেই আওয়ামী লীগ  সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে  স্বাধীনতাকে  যারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়  আর যাই হোক  তাদের উদ্দেশ্য  যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী  এ কথা  বলার অপেক্ষা রাখে না।  সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সরকারের পরিবর্তন ঘটে। প্রথম আলোর  মতো  একটি  প্রথম শ্রেণির পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে স্বাধীনতাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার  বিষয়টি না ভুল।  না মেনে নেয়ার মতো।  ঐ পত্রিকাটির এডিটোরিয়াল  পলিসি, তাদের  এজেন্ডা এখন  আর বুঝতে কারো কষ্ট হচ্ছে না।  দিবালোকের মতো সব স্পষ্ট হয়ে উঠছে সবার কাছে।

প্রথম আলোতে  স্বাধীনতা দিবসে এক শিশুকে দিয়ে একজন সংবাদকর্মী বলিয়েছেন, এই স্বাধীনতা দিয়ে আমরা কী করুম! প্রথমত শিশুটির বয়স মাত্র সাত। সাত বছরের শিশু স্বাধীনতা  কি তা বোঝার কথা  নয়। ঐ শিশুর পক্ষে বাজারের খোঁজখবর রাখা শুধু অসম্ভবই নয়, অবাস্তবও। 

 ধন্যবাদ জানাই একাত্তর চ্যানেলকে এ বিষয়ে তাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য।  দেখলাম, ১০ টাকা দিয়ে শিশুর মুখ দিয়ে স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমানিত হয়  প্রথম  আলো  উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল। শিশুটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করে প্রতিবেদন তৈরি এবং  তা প্রকাশ করা  নিঃসন্দেহে অপরাধ।
স্বাধীনতা দিবসে আনন্দঘন মুহূর্তে স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ঘটনাটি কিসের ইংগিত?  দেশের মানুষ  ভালো নেই, অনাহার, অভাবের এধরণের  মিথ্যা  চিত্র প্রকাশ করে দেশ বিদেশে শুধু  দেশকে খাটো করা নয়,স্বাধীনতাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করা নয় এটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে  নতুন কোন প্রেক্ষাপটে তৈরীর পূর্বাভাস।  এমব ঘটনা  নতুন করে    বাসন্তীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।  ১৯৭৪ সালে বাসন্তীকে জাল পরাতে লেগেছিল ৫০ টাকা। , ২০২৩ সালে  শিশুটিকে দেয়া হয়েছে  মাত্র ১০ টাকা। শিশুকে টাকা দিয়ে ছবি ওঠানো ও  একটি অপরাধ।  শিশুটিকে বিতর্কিত করার ফলে শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনে নানা জটিলতার সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 
 সাধারন জনগনের জানার কথা  নয় একটি নিউজ কত জনের হাত বা টেবিল হয়ে আলোর মুখ দেখে।  মফস্বলের সংবাদ প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন মফস্বল ডেস্ক, নিউজ ডেস্ক, নিউজ এডিটর হয়ে প্রয়োজনে সম্পাদকের অনুমতি সাপেক্ষে সংশোধন-পরিমার্জন-পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকাশযোগ্য হয়। স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য প্রতিনিধি বা প্রতিবেদকের পাঠানো প্রতিবেদনটির জন্য শুধু প্রতিনিধি বা প্রতিবেদকই একমাত্র দায়ী নন। বিষয়টি আরো গভীরে, যা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। 
 স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সংবাদটি কেন তারা প্রকাশ করল, বিষয়টি বোধগম্য নয়।  প্রথম আলোর নেপথ্যে  কারা দেশকে  অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে  দেশের স্বার্থে   তা জানা জরুরি।  

পাঠকদের সুবিধার জন্য  আবারো নিউজটি  সামনে  নিয়ে আসলাম।  প্রথম আলোর তুমুল বিতর্ক তোলা সেই সংবাদে দিনমজুর জাকির হোসেনের নাম দিয়ে তার বক্তব্যে লেখা হয় “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।”

ওই মন্তব্য ধরে শিরোনাম  প্রকাশ করা হলেও করা হলেও ছবি দেওয়া হয় সবুজ  নামের  আরেক শিশুর, যার কথা প্রতিবেদনের ভেতরে ছিল। ওই ছবি ও শিরোনাম দিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি কার্ড পোস্ট করা হয়, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।  

পরে প্রথম আলো প্রতিবেদনটি থেকে সেই শিশুর ছবি সরিয়ে শিরোনাম বদলে দেয়। পাশাপাশি তাদের সোশাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টও প্রত্যাহার করে। 

পরদিন বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাত্তর টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। তাতে দাবি করা হয়,  সবুজ নামের সাত বছরের  শিশুকে ১০ টাকা দিয়ে সেই কথা বলানো হয়েছে।  প্রথম  আলোর সংবাদ ও একাত্তর চ্যানেলের সংবাদটি বিশ্লেষণ করলে  বিচক্ষণ পাঠকদের বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয় একটি উদ্দেশ্য  নিয়েই  প্রথম আলো এমনটা করেছে।

আর এ কারনেই  এই সংবাদটিকে ১৯৭৪ সালে বাসন্তীর গায়ে জাল পরনোর সঙ্গেও তুলনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।  তিনি বলেন, “আমাদের ভুলে গেলে চলবে না এভাবেই ঘুষ দিয়ে ব্রহ্মপুত্রপাড়ের চিলমারীর প্রতিবন্ধী নারী বাসন্তীকে ১৯৭৪ সালে ১০ টাকার শাড়ি খুলে ৩০০ টাকার জাল পরিয়ে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পটভূমি রচনা করা হয়েছিল।”

 আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে  নানামুখী অপতৎপরতা চলছে। ১/১১  তত্ত্বাবধাায়ক সরকারের সময়ে  প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের ভূমিকা কমবেশি সবার জানা। তাই গণমাধ্যমের  স্বাধীনতার নামে  দেশের স্বাধীনতা,সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও অগ্রগতি বিরুদ্ধে কেউ যেন ষড়যন্ত্র করতে না পারে,অসাংবিধানিক সরকার  প্রতিষ্টার নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে না পারে তাদের ব্যাপারে  দেশবাসীকে সতর্ক খাকতে হবে। 

( মানিক লাল ঘোষ ঃ সহ সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য)

এমএসএম / এমএসএম

বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস ২০২৫ : গল্পের মাধ্যমে গড়ে উঠুক সচেতনতার বাঁধ

রাজনীতি আজ নিলামের হাট: কুষ্টিয়া-৪ এ হাইব্রিড দাপটের নির্মম প্রতিচ্ছবি

জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দিবে প্রবাসীরা, আনন্দে ভাসছে পরবাসে বাঙালীরা

বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতা ও বাংলাদেশে তার প্রভাব

বাংলাদেশে ওয়াশিং প্ল্যান্টের বর্জ্য দ্বারা মিঠাপানির দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে

বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ

দলীয় পরিচয়ে পদোন্নতি ও বদলি: দুর্নীতির ভয়াল থাবায় বাংলাদেশ

ব্যবসায়ীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সমাধান: FBCCI-এর বিদ্যমান সেবার উৎকর্ষ সাধন

বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিসরকে একীভূত করা: অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য বিসিক কেন অপরিহার্য

সবুজ অর্থায়নের কৌশলগত বিশ্লেষণ: বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ

মেধাবী হলেই ভালো চাকরি হয় না কেন?

ধৈর্য্য ও কর্মে অনন্য উচ্চতায় তারেক রহমান

আলী খামেনির নেতৃত্ব ও বিশ্বে তার প্রভাব