গণতন্ত্রের সবুজ উদ্যানেই প্রস্ফুটিত হয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব
বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অতীতমুখী। ভবিষ্যতের দাবি কিন্তু ভিন্ন। অতীতকে শুধু স্মরণ রাখাই যথেষ্ট। এর বেশি কিছু নয়। বর্তমানই হলো আসল। ভবিষ্যতের রঙিন স্বপ্ন চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর এ চেতনা জাগ্রত হয়নি। অগ্রগামী এই যুগে বাংলাদেশের আর কিছু না থাকলেও তার রয়েছে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। চীন-ভারতের মাঝামাঝি অবস্থান, থাইল্যান্ড-ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি, পূর্ব ও পশ্চিমের সন্ধিস্থলে ভূ-রাজনৈতিক 'লোকেশন', যা কোনো বৃহৎ শক্তি, যদি বাংলাদেশ স্বেচ্ছায় নিজের ঘরের চাবি অন্য কারো হাতে তুলে না দেয়, না পারবে ফেলতে, না পারবে গিলতে। এ অবস্থানের সঠিক সুযোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন শুধু উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচনার দৃঢ়সংকল্প এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমানকে ক্রমবর্ধমান জাতীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্র হিসেবে সুসজ্জিত করা। ছাত্ররাজনীতি অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। ছাত্র রাজনীতি ধারণাটাই অবান্তর। পৃথিবীর কোথাও এখন আর ছাত্ররাজনীতি জাতীয় রাজনীতির অংশ বলে দাবি করা হয় না। ১৮ বছরের যেকোনো নাগরিকই যেকোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারেন। সুতরাং কোনো শিক্ষার্থীর রাজনীতি করার ইচ্ছে থাকলে তার পছন্দের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে কোনো বাধা নেই। এটি তার গণতান্ত্রিক অধিকার। রাজনীতিবিদ হওয়ার জন্য লেখাপড়া জানতে হয়। এখন একুশ শতকের রাজনীতি অনেক বেশি জ্ঞাননির্ভর হয়ে উঠেছে। এখানে দেশ, সমাজ, মানুষ, প্রকৃতি, বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, প্রশাসন, অর্থনীতি, সমাজনীতি, কূটনীতি,আইন, সংসদ, বিধিবিধান ইত্যাদি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে হয়, যার জন্য দেশে এতসব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ রয়েছে। সেখানে পড়াশোনা করেও তো অনেকে বিদেশে গিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছেন। আমাদের দরকার আসলে উচ্চ গবেষণায় সফল শিক্ষিত মানুষের।
পেছনের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান কিংবা নব্বইয়ের আন্দোলনে ছাত্ররা নেতৃত্বে ছিল সত্য কথা, তবে আন্দোলনের শেষে সবাই লেখাপড়ায় ফিরে গেছেন। এসব আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অনেকেই পরবর্তী জীবনে রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, আমলা, পেশাজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক ইত্যাদি হিসেবে গড়ে উঠেছেন, বেড়ে উঠেছেন। তাদের এসব হয়ে ওঠার জন্য জীবনভর ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়নি। এমনকি ছাত্রসংগঠনের নেতারাও লেখাপড়ায় অনেক বেশি সময় দিতেন, মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংগঠনে টানার চেষ্টা করতেন। বিশেষত ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মেধাবীদের নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোই টানাটানি করত। এর কারণ ছিল ভোটে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মেধাবী শিক্ষার্থীদের নেতা হিসেবে মেনে নিত। পরীক্ষার ফলাফলে পেছনে পড়ে যাওয়া নেতাদের ভোটদানে আগ্রহ প্রকাশ করত না। এটিই ছিল আমাদের দেশের অতীত ছাত্রসংগঠন ও ছাত্ররাজনীতির বাস্তবতা। এখন আমরা ছাত্ররাজনীতির কথা বলি। কিন্তু ছাত্রদের কোনো রাজনীতি চোখে পড়ে না। যেটি চোখে পড়ে তা হলো কিছু ছাত্রসংগঠনের অস্তিত্ব বা কর্তৃত্ব ছাড়া আর কিছু নয়। সুতরাং অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি উল্লেখযোগ্য পূর্বশর্ত হলো, সমাজে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের পূর্বশর্ত হলো, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সমস্যা সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সহিষুষ্ণতা ও আপসকামী এক পরিবেশ। যে ১০টি দেশের কথা বিশ্বব্যাংক উচ্চৈঃস্বরে উচ্চারণ করছে, তাদের দিকে তাকালেই এর উত্তর মিলবে। তাইওয়ানের মতো একটি ক্ষুদ্র জনপদ এদিকে চোখ রেখে সৃষ্টি করেছে এক অবিশ্বাস্য ইতিহাস। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র বিশ্ব বিজয়ের প্রত্যয় লাভ করেছে। ওই সব রাষ্ট্রে রয়েছে নানা দল। রয়েছে হাজারো মতপার্থক্য।
কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে বিদ্যমান রয়েছে জাতীয় অগ্রগতি অর্জনের সাধারণ লক্ষ্য। ইন্দোনেশিয়ার মতো এককালের অনগ্রসর রাষ্ট্র প্রথমে জয় করেছে নিজের দুর্বলতা। তারপর অগ্রসর হচ্ছে দ্রুতগতিতে এক বৃহৎ শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার অভিযানে। অতীতকে নিয়ে টানাহেঁচড়ার প্রতিযোগিতা নেই এসব সমাজে। অতীতকে তারা গ্রহণ করেছে সবার অর্জন বা ব্যর্থতার সমষ্টিরূপে। এটি কারো পৈতৃক সম্পত্তি নয়। বর্তমানকে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদ বা বিতর্কে অবতীর্ণ হলেও ভবিষ্যৎকে গ্রহণ করেছে জাতির অভীষ্ট লক্ষ্য হিসেবে। এ লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে সহমত। সবাই দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাই সাহসী যোদ্ধার পদতলে বিজয় যেমন আছড়ে পড়ে ধন্য হয়, মাত্র পাঁচ দশকে ইন্দোনেশিয়া বা চীনের মতো অসংলগ্ন জনপদ অথবা তাইওয়ান বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ছোটখাটো সনাতন সমাজ আধুনিকতার আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। থাইল্যান্ডের মতো শতধাবিভক্ত সমাজেও গড়ে উঠেছে ইস্পাত-কঠিন ঐক্য। বাংলাদেশের অবস্থা কেমন হবে?এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না। দীর্ঘদিন পরে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত অবস্থানে বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন এসেছে। বহু দিন পরে এক ধরনের ‘ব্যাকওয়াটার’ বা সাধারণ অবস্থা থেকে একুশ শতকের মহাসমারোহে যোগ দেওয়ার পর্যায়ে বাংলাদেশ ক্রমে ক্রমে এগিয়ে আসছে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগ ক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থানের সুযোগ গ্রহণ করতে পারলে বাংলাদেশ নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। ভারত-চীন-থাইল্যান্ড-ইন্দোনেশিয়ার সন্ধিস্থলে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ সৃজনশীল কূটনীতির মাধ্যমে শুধু নিজের অবস্থা পরিবর্তন করবে না, অন্যান্য বৃহৎ শক্তির গতিবিধিও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হতে পারে।গণতন্ত্রের সবুজ উদ্যানেই প্রস্ফুটিত হয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের লাল গোলাপ আর এ লাল গোলাপই একুশ শতকের মহান উদ্যোগে বাংলাদেশকে দান করতে পারে তার যথার্থ স্থান।
বিভিন্ন রাষ্ট্রের আর একটি বৈশিষ্ট্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তা হলো অগ্রগতির অভিযাত্রায় নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে, কারো কাছে মাথা নিচু না করে, জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রাখার উদগ্র আকাক্সক্ষায় প্রথমে অতি ধীরে, পরে দ্রুততালে পথচলার দৃঢ়সংকল্প। তাইওয়ান চীনের মতো বৃহৎ শক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে ধীরস্থিরভাবে। দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া মোকাবিলা করেছে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের প্রচন্ড চাপ অত্যন্ত শান্তভাবে। ফ্রান্স, জাপান, জার্মানির ইতিহাস সবার জানা। কেউ কারো জঠরে বন্দি হয়ে নিরবচ্ছিন্ন প্রশান্তি লাভে আগ্রহী নয়। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বময় রাজত্ব করেছে। এখনো করতে চায়। চীন কারো চেয়ে কম নয়। ভারতের মাথায় রয়েছে গান্ধী-নেহরুর লালিত স্বপ্নের ডালি, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী ভারতবর্ষের অশোকচক্র। আর বাংলাদেশ? অগ্রগামী এই যুগে বাংলাদেশের আর কিছু না থাকলেও তার রয়েছে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান, চীন-ভারতের মাঝামাঝি অবস্থান, থাইল্যান্ড-ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিমের সন্ধিস্থলে ভূরাজনৈতিক লোকেশন, যা কোনো বৃহৎ শক্তি, যদি বাংলাদেশ স্বেচ্ছায় নিজের ঘরের চাবি অন্য কারো হাতে তুলে না দেয়; না পারবে ফেলতে, না পারবে গিলতে। এ অবস্থানের সঠিক সুযোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন শুধু উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচনার দৃঢ়সংকল্প এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমানকে ক্রমবর্ধমান জাতীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্র হিসেবে সুসজ্জিত করা। যদি বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে টিকে থাকার সংকল্পে দৃঢ় থাকে। বিশ্বব্যাংকের ধারণায়, ২০২০ সালে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স ও তাইওয়ান। এ ১০ রাষ্ট্রের সাতটিই এশিয়ার। সাতটিই বর্তমানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গতিশীল। সাতটিই রয়েছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থানে।
কোনো রাষ্ট্র একবার অর্থনৈতিক পেশি অর্জন করলে তার পক্ষে সামরিক শক্তি অর্জন অত্যন্ত সহজ ও স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং অনুমান করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয় না, একুশ শতকে এ ১০ রাষ্ট্র বিশ্বের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এমনকি সামরিক কর্মকান্ডের নাটকে নাম ভূমিকায় থাকবে। রঙ্গমঞ্চ হবে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, বিশ শতকে যেমনটি ছিল ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকা। একুশ শতকে গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতি গাঁটছড়া বেঁধেই থাকবে বলে মনে হয়। সমাজে এ দুয়ের সাম্যাবস্থা অক্ষুণœ রাখার জন্যও প্রয়োজন হবে অত্যন্ত উঁচুমানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব। বাজার অর্থনীতি খুঁজে ফেরে মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়ক পরিবেশ, বৃহৎ বাজার, সস্তা শ্রম, স্বল্প নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি। গণতন্ত্র চায় পারস্পরিক আদান-প্রদানের পরিবেশ, সহিষ্ণুতা, উদার মনোভাব আর ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি। দুয়ের সমন্বয় ঘটানো কঠিন কাজ এবং এটি শুধু সম্ভব উন্নত ধরনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পক্ষে। সজ্ঞাত, সচেতন ও মেধাবী রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বারা। বাংলাদেশ এমনি সৃষ্টিধর্মী নেতৃত্বের আশীর্বাদ কামনা করে একুশ শতকের শেষ পাদে। একুশ শতকে প্রতিযোগিতা হবে মেধার, পেশির নয়। এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হতে হলে প্রয়োজন হবে সৃজনশীল মস্তিষ্কের, বিরাট বপুর নয়। প্রয়োজন হবে উদার হৃদয়ের, আকাশছোঁয়া অন্তঃকরণের। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা দেশের প্রস্তুতি কতটুকু? অগ্রবর্তী চিন্তাভাবনা? একুশ শতকে বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারা ও মাত্রা নির্ভর করবে এই সমাজের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রকৃতির ওপর। পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে ছাত্ররাজনীতির নামে ছাত্রসংগঠনগুলোতে যারা যুক্ত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই ব্যক্তিজীবনে খুব পিছিয়ে পড়া মানুষে পরিণত হচ্ছেন, কেউ কেউ অবৈধপন্থায় অর্থবিত্ত উপার্জন করছেন, কেউ কেউ দলের বড় নেতাদের পেছনে নানা তদবির নিয়ে ঘুরছেন কিন্তু খুব কমই কিছু অর্জনে সফল হচ্ছেন।
অথচ এরা যদি সবাই উচ্চশিক্ষার যে করণীয়, তা অনুসরণ করতেন; তাহলে এদের প্রায় সবাই দেশ ও জাতির রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষা-সংস্কৃতি, অর্থনীতি, প্রকৌশল, ডাক্তার, কূটনীতি, বিজ্ঞান, গবেষণা ইত্যাদিতে অনেকেই দিকপাল হয়ে উঠতেন; এতে কোনো সন্দেহ নেই। সেই মানুষটি হতে পারলে তারা বেড়ে উঠতেন আত্মমর্যাদাশীল, সৃজনশীল, দেশপ্রেমিক, চিন্তাশীল মানুষরূপেও। আমাদের দরকার আসলে উচ্চ গবেষণায় সফল শিক্ষিত মানুষের। তাহলেই আমাদের দেশ একুশ শতকের যোগ্য মেধাবীদের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় লাভ করবেন। ছাত্রসংগঠন আমাদের মেধাবী তরুণ বিশেষজ্ঞের জোগান দিতে পারছে না, রাজনীতিবিদও নয়। এ আত্মঘাতী অবস্থা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হলে অস্বচ্ছ রাজনীতির ধারণা থেকে বের হয়ে শিক্ষাজীবনের বাধ্যবাধকতায় ছাত্রছাত্রীদের যুক্ত করার উদ্যোগ দেশে রাজনৈতিক নেতাদের নিতেই হবে। যেকোন দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি উল্লেখযোগ্য পূর্বশর্ত হলো, সমাজে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের পূর্বশর্ত হলো, গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সমস্যা সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সহিষ্ণুতা ও আপসকামী এক পরিবেশ। একুশ শতকে গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতি গাঁটছড়া বেঁধেই থাকবে বলে মনে হয়। সমাজে এ দুয়ের সাম্যাবস্থা অক্ষুণ্ন রাখার জন্যও প্রয়োজন হবে অত্যন্ত উঁচু মানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক
এমএসএম / এমএসএম