ঢাকা সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫

তালায় মৎস্য চাষে চলছে নিরব বিপ্লব রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে


এম,এম হায়দার আলী, তালা photo এম,এম হায়দার আলী, তালা
প্রকাশিত: ৩১-৫-২০২৩ দুপুর ২:৮

সাদা সোনা খ্যাত সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বেড়েই চলেছে । চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বা সরবরাহ বেশি হওয়ায়। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এ সম্পদ বিদেশে রপ্তানি হওয়ার বিষয়টি দীর্ঘ বছরের।এদিকে মৎস্য চাষ লাভজনক  হওয়ার কারনে অন্যান্য ফসলাদী উৎপাদনের পরেই মাছের অবস্থান লক্ষণীয়। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,তালা উপজেলা সহ জেলায় বসবাসকারী প্রায় ১০ লক্ষ নারী ও পুরুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই মাছ চাষের উপর নিরর্ভরশীল বলে জানা গেছে। মৎস্য চাষীদের অভিমত,মাছ উৎপাদনে সাতক্ষীরায় যেন চলছে নীরব বিপ্লব । জেলার জনগোষ্ঠীর চাহিদা মিটিয়ে চলতি বছর অতিরিক্ত ৮১ হাজার মেট্রিক টন মাছ দেশের অন্যান্য জেলাসহ বিদেশেও রপ্তানি করা হয়েছে। মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে জেলাতে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি সমৃদ্ধি হয়েছে জেলার অর্থনীতি। সব মৎস্য চাষিদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে পারলে জেলায় মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে কয়েকগুণ বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।বর্তমানে মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দেশের প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ জড়িত থাকলেও সাতক্ষীরা জেলায় মৎস্য খাতে প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ জড়িত দাবী সংশ্লিষ্টদের। মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বিশ্বজুড়ে মানুষের মাছ খাওয়া বেড়েছে ১২২ শতাংশ। বিশ্বের সাতটি দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের অর্ধেকের বেশি আসে মাছ থেকে। বাংলাদেশ প্রাণিজ আমিষের ৫৮ শতাংশ আসে মাছ থেকে। ২০১০ সালের সর্বশেষ খানা জরিপে উঠে এসেছে- বছরে বাংলাদেশে একেকজন মানুষ প্রায় ১২ কেজি মাছ খায়। এখন সেটা ৩০ কেজিতে পৌঁছেছে। বিশ্বে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে ২০১৯ সালে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার ২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গত বছর দেশে রেকর্ড পরিমাণ মাছ উৎপাদনের বিষয়টি। স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জেলায় এক লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। যেখানে জেলায় মাছের চাহিদা রয়েছে ৪৫ হাজার ৫৪৮ মেট্রিক টন। অর্থাৎ উদ্বৃত্ত ৮১ হাজার ২০৭ মেট্রিক টনের মধ্যে একাংশ বিদেশে রপ্তানি এবং অবশিষ্ট মাছ দেশের অন্যান্য এলাকায় সরবরাহ করা হয়।সূত্র জানায় বর্তমানে জেলাতে ৫০ হাজার ১৮টি পুকুরে কার্পজাতীয় মাছের চাষ হচ্ছে। এছাড়া জেলায় ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ১১০ হেক্টর লবনাক্ত জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। জেলায় মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে ২৫টি, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা রয়েছে ৪টি, মৎস্য আড়ৎ রয়েছে ৩২টি। এছাড়া ২৮৫টি মৎস্য ডিপো, ৪৪টি বরফকল, ১৫টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ৫৮টি পাইকারী মৎস্য বিপণন কেন্দ্রের মাধ্যমে সারা বছর মাছ বাজারজাত করা হয়।জেলা মৎস্য বিভাগের বিভিন্ন তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, সাতক্ষীরার চিংড়ি বিদেশে রপ্তানির বাজার দখল করেছে। এখানে উৎপাদিত হচ্ছে সব ধরনের সুস্বাদু সাদা মাছ। চিংড়ির পাশাপাশি কৈ, মাগুর, শিং, শোল, পাঙ্গাস, মনোসেক্স তেলাপিয়া, কার্প জাতীয় মাছ ছাড়াও জেলাব্যাপী কাঁকড়া ও কুচিয়ার চাষ ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার ৫৫ হাজার ১শত২২টি বাগদা চিংড়ি ঘের ও ১১ হাজার ৬শত৩৮টি গলদা চিংড়ি ঘেরের এক চতুর্থাংশে আধা নিবিড় ও নিবিড় চিংড়ি চাষ করা গেলে জেলার চিংড়ি উৎপাদন ৮ থেকে ১০ গুণ বেড়ে যাবে বলে জানানো হয়। বেসরকারি হিসেবে বাগদা ও গলদা চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা আরো বেশি। এসব ঘেরের মিষ্টি পানিতে ধান ও মাছ এক সাথে চাষ করা গেলে সাতক্ষীরায় মৎস্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হতে পারে  বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। সূত্র জানায়, জেলায় বাগদা ও গলদা পোনার চাহিদা প্রায় সাড়ে ৩শত৪৪ কোটি। এর মধ্যে বাগদা পোনার চাহিদা ৩শত৩৪ কোটি এবং গলদা পোনার চাহিদা ১০ কোটি ৫৫ লক্ষ। জানা যায়, চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলায় নিবন্ধিত ৪৯ হাজার ১শত৭৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে।এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় দুই হাজার ১শত৫টি, তালায় এক হাজার ২শত ৯৫টি,দেবহাটায় ২ হাজার ৮শত২৯টি, আশাশুনিতে ১৩ হাজার ২শত ১৭টি,কালিগঞ্জে ১৪ হাজার ৫শত ৫৯টি ও শ্যামনগরে ১৩ হাজার ১শত৫৮ এবং কলারোয়ায় ২ হাজারটি। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র  জানায়, জেলায় ৮১ হাজার ৪শত৩২জন মাছ চাষি রয়েছে। মৎস্য খাতকে আরো উন্নত করে তুলতে জেলার ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ জমির মালিককে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে তাদের মাছ চাষে আগ্রহী করে তুলতে জেলা মৎস্য বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। কৈ, মাগুর, শিং, শোল, পাঙ্গাস, মনোসেক্স তেলাপিয়া ছাড়াও জেলাব্যাপী কাঁকড়া ও কুচিয়ার চাষ ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার ৫৪ হাজার ৯শত৩৫টি বাগদা চিংড়ি ঘের ও সাড়ে ১১ হাজার গলদা চিংড়ি ঘেরের এক চতুর্থাংশে আধা নিবিড় ও নিবিড় চিংড়ি চাষ করা গেলে জেলার চিংড়ি উৎপাদন ৮ থেকে ১০ গুণ বেড়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই । বেসরকারি হিসাবে বাগদা ও গলদা চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা আরো বেশি। এসব ঘেরের মিষ্টি পানিতে ধান ও মাছ এক সাথে চাষ করা গেলে সাতক্ষীরায় মৎস্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হতে পারে বলেও জানানো হয়। তালা উপজেলার যুগিপুকুরিয়া গ্রামের বিশিষ্ট ঘের ব্যবসায়ী মৎস্য চাষী আব্দুর রউফ সরদার (৪৫) জানান,গত কয়েক বছর ধরে জমির হারি বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে মাছের পোনা ও খাবারের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। একই সাথে সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায়  লাভের অংশ একটু কমে গেছে।সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পাওয়া গেলে মাছ চাষে মানুষের  আগ্রহ আরো বাড়তো এবং  উৎপাদনও বেড়ে যেত।  এই ধরনের অভিযোগ এখানকার প্রায় সকল  মাছ চাষীদের বলে জানা যায়।সর্বোপরি, সরকারি বেসরকারি ভাবে প্রকৃত মাছ চাষিদের প্রশিক্ষণের জোরদার করা, মৎস্য বিভাগের তদারকি আরো বাড়ানো, মৎস্য খাদ্যের দাম কমানো সহ স্বল্প সুদে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা গেলে।দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী সংশ্লিষ্ট চাষীরা এ চাষে আরও অধিক লাভবান হবেন বলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।

এমএসএম / এমএসএম

সিডিএ'র কাজ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের বাধার মুখে ঠিকাদার

পটুয়াখালীতে কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের শত শত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ

বেনাপোল বন্দরে পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় বাণিজ্যে স্থবিরতা

রাণীনগরে বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

অবসরে যাওয়া পুলিশ কনস্টেবলদের বিদায় সংবর্ধনা

সম্প্রীতি বিনিষ্টকারীদের ছাড় নেই: গোপালগঞ্জে সম্মেলনে ডিসি

পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির টানায় শক লেগে ৫ শিশু হাসপাতালে

আমন চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে হাটহাজারীর কৃষকরা

রৌমারীতে আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘর সংস্কারের অভাবে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে

ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা মৃত্যুকে ভয় পায় না বলেই আন্দোলন মুছতে পারেনি : এটিএম আজহারুল

বোদায় ১৩৫০ টাকার সার ১৮০০ টাকায় বিক্রি, যৌথ বাহিনীর অভিযান

সমাজ উন্নয়নে শিক্ষার বিকল্প নেই : জহুরুল আলম

নেত্রকোনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহাম্মদ বশির