সংবাদ প্রবাহ
নথি মনিটরিংয়ে কর্মকর্তাদের দায় এড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে

সরকারি অফিসে নথি মনিটরিংয়ের দায় নিতে চায় না অধিকাংশ কর্মকর্তা । কোন ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শো’কজ ইস্যুর পর সে বিষয়ের আপডেট বা ফলোআপ বিষয়ে তথ্য পাওয়া রীতিমত কঠিন হয়ে পড়েছে। তথ্য দেয়ার বদলে দায় এড়িয়ে যেতেই বেশী পছন্দ কর্মকর্তাদের। এর ফলে ঘটনায় দায়ি বা অভিযুক্তরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এর ফলে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে অফিসিয়াল দূর্নীতির মাত্রা। এ কারণে অপরাধ করার পর শোকজ পেয়েও একই ধরণের কাজ করে যাচ্ছে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বা কর্মচারিরা। তারা জেনে গেছে এসবে কিছুই হবে না। তদন্ত কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ করলেই সব শেষ। যা সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বার বার। সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি ঘটনায় এমন তথ্য দিচ্ছে। দৈনিক সকালের সময়ে প্রকাশিত দুটি সংবাদের উদহরণ হিসেবে এখানে উপাস্থাপন করা যায়।
ঘটনা প্রবাহ ১. গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঘুপসি বিজ্ঞপ্তি
একটি ঘুপসি বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাঝ দিয়ে একটি বিশেষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার উদ্যোগ নেয় গণপূর্তের কাঠের কারখানা বিভাগ। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না দিয়েই এ বিষেয় ১১.১২.২০২০ ইং তারিখে একটি পত্রিকায় ঘুপসি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। সে কাজে ভিন্ন নামে একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। ঠিকাদার এবং গণপূর্তেও সংশ্লিষ্ট শাখা যোগ সাজুস্যে সরকারের কোটি কোটি টাকার কাঠ নামমাত্র মূল্যে নিলামে দিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করার উদ্যোগ নেয় গণপূতের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলমগীর খানের সিন্ডিকেট। বিষয়টি জানা জানি হলে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণকরে এর সমাধান চেযে রিটেন্ডারের আবেদন করেন অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টির ব্যাখা চেয়ে এবং এ বিষয়ে করনীয় নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট শাখায় চিঠি দেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারিসচিব মোঃ সরাফত আলী। ১৭/০২/২০২১ তারিখে ইস্যুকৃত এ চিঠির স্মারক নং ২৫.০০.০০০.৫১.৩১.০০৮।
এ নিয়ে দৈনিক সকালের সময়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয় সম্পর্কে সে সময় গণপূতের প্রধান প্রকৌশলী শামীমআক্তারের দৃষ্টিতে আনা হলে এ বিষয়ে ফাইল তলব করে অনিয়ম খতিয়ে দেখাসহ ব্যবস্থাগ্রহণে করনীয় নির্ধারণে প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার মাহফুজুল আলমকে নির্দেশ দেন।
এর পর ঘটনা প্রবাহ মোড় নেয় অন্য দিকে। তথ্য গোপন করে মন্ত্রণালয়ের ইস্যুকৃত চিঠিকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলো এ বিষয়টি জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সঠিক কোন তথ্য না দিয়ে তড়িঘড়ি করে ফাইলের ওয়ার্ক ওর্ডার পাশের মিশনে নেমে আলমগীর খানের নেতৃত্বে গণপূর্তেও বিশেষ সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে এ সিন্ডিকেটের সদস্যদেও মধ্যে রযেছেন প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অপিসার মাহফুজুল আলমও।
ঘুপসি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং সকল এস্টিমেড অফিসারের চোখের আড়ালে পত্রিকায় ঘুপসি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সব জানার পরও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আলমগীর খান সে ফাইলটি সি এস করে তা পাশের জন্য প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রেরণ করেন।
জানা যায় ফাইলটি এখন অনলাইনে পাশের অপেক্ষায় রয়েছে।এ বিষয়ে মন্ত্রণারয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব মোঃ শরাফত আলীর সাথে যোগযোগ করে তার ইস্যূকৃত চিঠির বিষয়ে কোন আপডেট তার কাছে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরের কোন আপডেট তার জানা নেই। অর্থাৎ অভিযোগের পর চিঠি দেয়া পর্যন্তই। দায়িত্ব শেষ! এর আপডেট জানার দায়কার? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সব কিছু মনিটরিং করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাহলে মনিটরিংয়ের অভাবে বিভাগীয় অপরাধ ধরা পড়ার পরও যদি কোন পদক্ষেপ নেয়া না যায় তাহলে দাপ্তরিক দূর্নীতি বেড়ে যাবে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জবাব তিনি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। এ দিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অস্বচ্ছতা ও দূর্নীতির সকল অধ্যায় পার করে ফাইলটি পাশের জোর তৎপরতা চালাচ্ছে সিন্ডিকেটটি।
২. আন্তর্জাতিক একটি টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নারায়নগঞ্জ ডিপিডিসি প্রজেক্ট-০১ এর আওতায় ভূগর্ভস্ত ৫০ কিলোমিটার ক্যাবল লাইন স্থাপনে ক্যাবল সাপ্লাই এর কাজ পায় পলিক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিজ। দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে তাদের কাজ দেয়া হয়। কিন্তু কাজ চলমান সময়ে ডিপিডিসি কর্র্তৃপক্ষ পলিক্যাবলের সরবরাহকৃত তার নিম্নমানের ও ত্র্যুটিপূর্ণ দেখতে পায়। বিষয়টি কোম্পানীকে অবহিত করে সে বিষয়ে জবাব দিতে ৭ দিন সময় বেধে দিয়ে গত ৯মার্চ ২০২১ ইং তারিখে চিঠি ইস্যু করেন ডিপিডিসর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চুক্তি ও ক্রয় সার্কেল সালেক মাহমুদ।
যার স্মারক নং ২৭.৮৭.০০০.১০৬.৩৫.০০১.২০.২৮। ইস্যুকৃত চিঠির সরবরাহকৃত ক্যাবল বিষয়ে ডিপিডিসির প্রজেক্ট দপ্তর থেকে অভিযোগ উঠেছে।
সে বিষয়ে ৮টি ছবিও সংযুক্ত করা হয়। কিন্তু চিঠিতে জবাব দানের ৭দিনের পর আরো দু মাস পার হলেও সে চিঠির জবাবে কোম্পানী কি বলেছে বা ডিপিডিসির পক্ষ থেকে কি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে তা জানেনা চিঠি ইস্যুকারি কর্মকর্তা প্রকৌশলী সালেক মাহমুদ।
গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তার সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান এ বিসয়ে কোম্পানী কোন জবাব দিয়েছে কিনা বা ক্যাবলের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে এ বিষয়টি নারয়নগঞ্জের প্রজেক্ট -১ এর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানবেন। তার সাথে যোযোগ করা হলে তিনি জানান, এটা তার জানার বিষয় নয়। সমস্যার বিষয়ে উধর্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর বেশী কিছুউ তার বলার নেই।
এ দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিুযক্ত সে ক্যাবলই বসানো হয়েছে ভূগর্ভস্ত লাইনে। চিঠি দেয়ার পর সে বিষয়ের আপডেট কেন জানবেন না এমন প্রশ্নের উত্তরে সালেক মাহমুদ বলেন, এটা সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়েছে। এর বেশী তিনি কিছুই বলতে পারবেন না। দুটি চিঠি ও ঘটনা রেফারেন্স হিসেবে নেয়া হলো। এ ধরণের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। আর এসবের ফাঁক গলে দূবৃত্ত ও অসৎ কর্মকর্তারা তাদের তাদেও অন্যায় কাজ করে ও পার পেয়ে যাচ্ছে দেদারচ্ছে। যা দূর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স অবস্থানকে প্রশ্ন বিদ্ধ করছে।
লেখকঃ পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক দৈনিক সকালের সময়
এমএসএম / এমএসএম

মুসলিম রাষ্ট্রকে নিয়ে বৈশ্বিক শক্তির ষড়যন্ত্র-মো. হাসিব

শিশু হাসপাতালে সেবার পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে ও দালালদের দৌরাত্ম্য কমেছে

স্কুল-জীবনের স্মার্টফোন: শিক্ষার পথ সহজ, নাকি বাঁধার দেয়াল?

ডিজিটাল ইকোনমিতে তরুণদের অংশগ্রহণে বাড়ছে প্রবৃদ্ধির গতি

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নে বাড়ছে অপরাধ

শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসুক পুরনো দিনের ঐতিহ্য

মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা সংকট থেকে প্রযুক্তি বাজার: বাংলাদেশের করণীয় কি?

পিআর পদ্ধতি নিয়ে হঠাৎ এতো আলোচনা

আ-তে আলো, আ-তে আধাঁর

মোদির চীন সফর ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রভাব

রিসাইক্লিং থেকে রেভিনিউঃ চক্রাকার অর্থনীতির বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি

বিপদের বন্ধু লোকনাথ বাবা ও তাঁর অলৌকিক কাহিনী
