কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে তালার ঘানি শিল্প

ঘানি ঘোরানো খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে আলু, বেগুন, উচ্ছে সহ সকল প্রকার ভর্তা খাওয়ার মজাটাই যেন আলাদা। শুধু কি তাই, গ্রামীণ জনপদে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুদের সারা শরীরে এই খাঁটি সরিষার তেল লাগানোর বিষয়টি এখনও বিদ্যমান। একই সাথে মানুষের মাথার খুশকি দূর করতে এই তেলের গুনাগুন অপরিহার্য। অথচ সময়ের ব্যবধানে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় আধুনিকতার ছোয়ায় কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে, গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য ঘানি শিল্প। এক সময় সল্প ব্যায়ে কম খরচে বহু বাড়িতে তৈরী করা হত খাঁটি সরিষার তৈল। বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারায় এ শিল্প এখন বিলুপ্ত প্রায়। গ্রাম বাংলার এই শিল্প এখন আর তেমন দেখা যায় না। উপজেলায় হাতে গোনা দু একটা গ্রামে এ শিল্প টিকে আছে। তাই বর্তমান প্রজন্মের কাছে এ শিল্প যেন নানা-দাদা গল্পের ঝুলি বলে মনে হয়। এখন আর ঘানিতে ঘুরান খাঁটি সরিষার তৈল পাওয়া অনেকটা কস্টসাধ্য। ঘূর্ণন যন্ত্র দারা ঘানিতে গরুর সাহায্যে এ সরিষা জাতীয় তৈল বীজ থেকে বের করা হয় তেল । ঘানি টানার জন্য গরু দু চোখ বেঁধে ঘোরানো হয়। যে যন্ত্রের সাহায্যে কোন তৈল বীজকে নিষ্পেষন করে তেল বের করা হয় তাকে ঘানি বলে। তৈল নিষ্পেষন একটি প্রাচীন জীবিকা এই পেশার লোকদের কে কলু বলা হয়। ঘানি টানা খুব পরিশ্রমের কাজ তাই আগেকার দিনে কারাদণ্ড-প্রাপ্ত লোকদের দিয়ে ঘানি ঘোরানো হত। তাই তো প্রবাদ মতে, জেল-হাজতে যাওয়াকেই অনেক সময় জেলের ঘানি টানছে এমন কথা বলা হয়ে থাকে। বর্তমান প্রযুক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যের সেই ঘানি। বর্তমানে খাঁটি ঘানির প্রতি কেজি সরিষার তেলের দাম ৪শ টাকা। কিন্তু সে তুলনায় মেশিনের তেল ১ শত ৮০টাকা কেজি দরে যদিও বিক্রি হচ্ছ। তবে সেই তেলের গুণগত মান নিয়ে জনমণে রয়েছে নানান প্রশ্ন। তারপরও অনিবার্য কারণবশত নিত্য নতুন প্রযুক্তির কাছে ঘানি আজ হার মানতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে এ শিল্প টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজার সংলগ্ন দাইপাড়া মোড় নামক স্থানে পুরান ঐতিহ্য ঘানি শিল্পটি আজও টিকে আছে। গতকাল সরজমিনে, কথা হয় বিদেশ প্রবাসী ইয়াছিন সরদারের পুত্র অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ সরদারের সাথে। সে জানায় আমার দাদাদের আমলের এ শিল্প প্রায় বিলীন হওয়ার পথে, কোন রকমে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন এ ঘানি আঠারাে মাইল বেতা গ্রামের আমার নানা আহম্মদ আলী গাজী ও পাটকেলঘাটায় আমাদের ছাড়া এলাকায় কোন ঘানি নাই। এ শিল্পে লোকবল কম লাগে,কম খরচে প্রাচীন আমলের সেই ঘানির মাধ্যমে খাঁটি তেল বের করা হয়। প্রতিদিন ঘানিতে ৪ থেকে ৬ কেজি তেল বের করা হয়। তেলের চাহিদা অনেক চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। প্রতি কেজি তেল ৪শ টাকায় বিক্রি করা হয়। খাঁটি সরিষার তেল নিতে দূর দুরান্ত থেকে লোক আমাদের এখানে আসে। কথা হয় পাটকেলঘাটার তৈলকুপি গ্রামের রাধাপদ সাধুর সাথে সে জানায় ঠাকুর দাদারা ঘানির সাথে যুক্ত থেকে অনেক কিছু করেছে। আমাদের কাছে ঘানি এখন রুপ কথার মত। পাটকেলঘাটা পশ্চিম পাড়া গ্রামের আবুল কালাম গাজী সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনেক আগে থেকেই আমরা এ পেশা ছেড়ে দিয়েছি, আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে এ শিল্প টিকে থাকতে পারেনা, তাছাড়া এ পেশা লাভ জনক না, বর্তমানে আমরা ব্যবসা বানিজ্য করে ভাল আছি। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া শারমিন বলেন, যেহেতু গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের সাথে জড়িত ঘানি শিল্প সেহেতু এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। বিষযটি খোজ খবর নিয়ে দেখবো সরকারের কোন দপ্তর এটার সাথে সংশ্লিষ্ট। অবশ্যই ব্যবস্থা নিব যাতে এ শিল্প টিকে থাকে।
এমএসএম / এমএসএম

ইলিশ পাচার সিন্ডিকেট বিলুপ্ত চান ভোলার উপকূলের জেলেরা

ঝিনাইদহে রেলপথের দাবিতে মানববন্ধন

ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যমান সার নীতিমালা বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

লামা উপজেলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দায়িত্বশীল শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত

কোটালীপাড়ায় পোনা মাছ অবমুক্তকরণ

ত্রিশালে বাগান মাদরাসা পরিদর্শনে আইএমইডির মহাপরিচালক

কুড়িগ্রামে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের কর্মশালা

সার নীতিমালা বহালের দাবিতে কুড়িগ্রামে সংবাদ সম্মেলন

ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজ তিন মাদ্রাসাছাত্রী, ২১ দিনেও সন্ধান মিলেনি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনাধান-১৭ সম্প্রসারণে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

রৌমারীতে মানষিক ও শারিরীক নিযাতনেই গৃহবধুর বিষপানে আত্মহত্যা

চৌগাছায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ
