ঢাকা সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

শুধু হিরোশিমা নয়, জাপানের কোন কোন শহরে বোমা ফেলা হবে, তার একটা বিশদ পরিকল্পনা অনেক দিন ধরেই চলছিল।

কেন জাপানের এই শহরকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল? জানুন হিরোশিমার ইতিহাস...


ডেস্ক রিপোর্ট  photo ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১১-৮-২০২১ বিকাল ৭:৪২

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাপানে বোমা ফেলার ঘটনার রেশ সেখানেই শেষ হয়ে যায়নি। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বহন করতে হয়েছে তার বিষময় পরিণতি। অতএব, জাপানের চলচ্চিত্রে, সাহিত্যে যে সেই ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই জুড়ে থাকবে সিংহভাগ, তাতে আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু নেই।

কিন্তু বিশ্বও এই নৃশংসতার দায় নিয়েছে মাথা পেতে, সেই জন্যেই প্রতি বছর ৬ অগাস্ট তারিখে উদযাপিত হয় হিরোশিমা দিবস (Hiroshima Day)। ইতিহাসের কলঙ্ক অপনোদনের চেষ্টা এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য নয়, নির্মমতার নজির তুলে ধরে বিশ্ব শান্তির বার্তা দেওয়াই এই দিনটি উদযাপনের উদ্দেশ্য।

 

এই প্রসঙ্গে সঙ্গত কারণেই একটা প্রশ্ন উঠে আসে। জাপানের এত শহর থাকতে কেন হিরোশিমাকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল? ১৯৪৫ সালে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে (Pearl Harbour) অক্ষশক্তির অন্তর্গত জাপান বোমা ফেলল, তারই বদলা নিতে যুক্তরাষ্ট্রও বোমা ফেলল হিরোশিমায়, ঘটনা কি এতটাই সরলীকৃত ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?

সবার আগে এটুকু স্পষ্ট করে দেওয়া দরকার যে শুধু হিরোশিমা নয়, জাপানের কোন কোন শহরে বোমা ফেলা হবে, তার একটা বিশদ পরিকল্পনা অনেক দিন ধরেই চলছিল। এই প্রসঙ্গে আমেরিকার ম্যানহাটান প্রজেক্টের (Manhattan Project) নাম উল্লেখ করতেই হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পারমাণবিক শক্তির প্রয়োগ নিয়ে অনেক দেশই গোপনে গোপনে তৈরি হচ্ছিল, আমেরিকাও তার মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এই দেশ যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করছিল, তার পথ বেয়েই তৈরি হয়েছিল দুই বিধ্বংসী বোমা। একটির নাম রাখা হয়েছিল লিটল বয় (Little Boy), অন্যটির নাম ছিল ফ্যাট ম্যান (Fat Man)।

নামে লিটল বয় হলেও আদতে তো সে পারমাণবিক অস্ত্র, ফলে তার একবার প্রয়োগই একটা শহরকে উৎখাত করার পক্ষে যথেষ্ট! ফলে, ফ্যাট ম্যান তৈরির ঘটনা স্পষ্ট সাক্ষ্য দেয় যে শুধু হিরোশিমাই নয়, জাপানের অন্য শহরও ছিল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার তালিকায়। যে কারণে নাগাসাকিতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল ফ্যাট ম্যান! তার পরেও প্রথম অভিঘাত হিরোশিমার উপরে নেমে আসার কারণ ছিল একরকম অনিবার্য!

কেন না, সেই সময়ে হিরোশিমা ছিল জাপানের সেকেন্ড জেনারেল আর্মির সদর দফতর, বাহিনীর ফিফথ ডিভিশনের ৪০ হাজার সেনাও সেই সময়ে মোতায়েন ছিল শহরের সীমান্তের মধ্যেই। ফলে হিরোশিমার উপরে যে শত্রুর বিশেষ আক্রোশ থাকবে, তা বলাই বাহুল্য!

বাকি কারণটা নেহাতই প্রাকৃতিক, আবহাওয়া মেঘলা থাকার কারণে সেই দিন জাপানের অন্য শহরে বোমা ফেলার সুবিধা হয়নি, ফলে বিষের ধোঁয়ায় ৬ অগাস্ট সকালে ঢেকে গিয়েছিল হিরোশিমার গৌরব!

কফিল / কফিল