ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে এখন সোনা ফলে


মজিবর রহমান, গাইবান্ধা photo মজিবর রহমান, গাইবান্ধা
প্রকাশিত: ৩-৪-২০২৪ দুপুর ২:৩৮

নদীর নীরবে বয়ে চলা শীতল জল, সবুজ ফসলে ভরা বিস্তীর্ণ সমভূমি এবং সহজ সাবলীল এক অনন্য জনজীবনের জেলা এই গাইবান্ধা। রংপুর বিভাগের প্রবেশ দার ও একটি প্রশাসনিক অঞ্চল গাইবান্ধা জেলা। এ জেলার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য ভুট্টা, মরিচ, বাদাম, তিল ও মিষ্টি কুমড়া বিশ্বের কাছে এক অনন্য উচ্চতায় সমৃদ্ধ করেছে। এগুলোর মধ্যে মরিচ দীর্ঘদিন ধরে কৃষককে ভালো পরিমাণে অর্থ দিচ্ছে বলে চরে এর চাষের পরিমাণ বাড়ছে। গত ১৭-১৮ বছর আগেও ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চরাঞ্চলে বলার মতো তেমন কোন ফসল হতো না। এখন সেই ধুধু বালুচর পরিণতি হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশের চরাঞ্চলে প্রায় ২৫-৩২ রকমের ফসলের আবাদ হচ্ছে। প্রধান অর্থকরী ফসলের মধ্যে আছে মরিচ, ভুট্টা ও মিষ্টি কুমড়া।

ফূলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের সন্ন্যাসীর  চরের কৃষক আব্দুর রহমানের এখন তার বয়স ৬০ বছর। তিনি ছোটবেলা থেকে সন্ন্যাসীর চর গ্রামে বসবাস করছেন। আব্দুর রহমান এ বছর প্রায় চার বিঘা জমিতে হাইব্রিড জতের  মরিচের চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় এই পর্যন্ত তিনি পাকা মরিচ পেয়েছেন ১১০-১৩০ মণ। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায়  ৪০-৪৫ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তিনি প্রতি বিঘায় লাভ করেছেন নব্বই হতে এক লক্ষ টাকা। মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, 'মাত্র  ১৫-১৬ বছর আগেও মরিচ থেকে ভালো পয়সা পাওয়া যেত না। কারণ দেশি মরিচের ফলন বেশি ভালো হতো না। হাইব্রিড জাতের মরিচ আসার পর এখন বিঘায় ১০০ থেকে ১৩০ মণ মরিচ হচ্ছে। এখন বিঘা প্রতি প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা বেশি লাভ হয়।,  'আগে সেচের ব্যবস্থা তেমন ছিল না। চরে কোনো অর্থকরী ফসল হতো না। শুধুমাত্র আউশ ধান, কাউন, চিনা, বাদাম ও ডাল চাষ হতো। এতে করে চরের মানুষের মুখে দুই বেলা ঠিকমতো খাবার জুটতো না। এখন দিন একেবারেই বদলে গেছে। এখন চরে সেচের ব্যবস্থা হয়েছে। নানান রকমের ফসল হচ্ছে। এই সব ফসলের মধ্যে মরিচ ও ভুট্টা চাষ করে ভালো পয়সা পাওয়ায় চরাঞ্চলে মানুষ লাভোবান যাচ্ছে।

ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মিন্টূ মিয়া বলেন, ' উপজেলার সাতটি  ইউনিয়নের মধ্যে উড়িয়া, গজারিয়া, ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি পুরোপুরি ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর চর। ৯০ এর দশকে গাইবান্ধায় হাইব্রিড মরিচের চাষ শুরু হয় তবে তা খুব সামান্য পরিমাণে। ২০০৪ সালে সরকার এই অঞ্চলের চরের মানুষের দরিদ্রতা দূর করতে 'চর লাইভলিহুড প্রোগ্রাম (সিএলপি)' বাস্তবায়ন করে। তখন থেকে উন্নতমানের ফসলের বীজ চরের কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সেই থেকে চরে মরিচ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। সারা দেশে ফুলছড়ি উপজেলার লাল শুকনো মরিচের সুনাম রয়েছে। সবচেয়ে ভালো মরিচ হয় ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলে। কারণ এই অঞ্চলটি মরিচ চাষের জন্য খুবই উপযোগী।' তিনি আরো বলেন, শুধু গাইবান্ধা বা ফুলছড়িই নয় উত্তরাঞ্চলের যেসব জেলার ওপর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা বয়ে গেছে সেই সব জেলার চরাঞ্চলে এখন প্রতি বছর মরিচের আবাদ সম্প্রসারিত হচ্ছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, 'এই জেলায় প্রায় ১৬৫টি চর আছে। এর মধ্যে যেসব চরে সেচের সুবিধা আছে সেসব চরে মরিচের চাষ হচ্ছে। ধান চাষে খুব একটা লাভ হয় না। ভুট্টা ও মরিচ গাইবান্ধার কৃষকের প্রাণ। মরিচে সেচ কম লাগে তাই চরাঞ্চলে মরিচের চাষ বাড়ছে। বর্তমানে মরিচ চরাঞ্চলের অন্যতম অর্থকরী ফসল। তবে চরে অস্থায়ী সোলার পাম্প দিতে পারলে আরও বেশি ফসল ফোলানো সম্ভব। এ বছর গাইবান্ধার চরাঞ্চলে প্রায় এক হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। এর বাজার মূল্য আনুমানিক ১২০ থেকে ১৪০ কোটি টাকা।

জেলার চারটি উপজেলার  চরাঞ্চলের জমিতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ মরিচ উৎপাদিত হয়। চরাঞ্চলে এই মরিচ কেনাবেচার একমাত্র হাট হচ্ছে ফুলছড়ির যমুনা নদী সংলগ্ন মরিচের হাট। প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার এই হাটে মরিচ বেচাকেনা চলে। চরাঞ্চল থেকে কৃষকরা নৌকা ভর্তি মরিচ নিয়ে এসে এখানেই বেচাকেনা করে থাকেন।

 উল্লেখ্য, ফুলছড়ির এই মরিচের হাটটি শুধু মরিচ বেচাকেনার জন্য একমাত্র হাট। কিন্তু এই হাটটির এখন বেহাল অবস্থা। প্রতিহাটে ৩শ’ থেকে ৪শ’ মরিচ চাষি ৮শ’ থেকে ১ হাজার মণ মরিচ বিক্রি করে থাকে। কিন্তু হাট বসে খোলা একটি চত্বরে। যেখানে কোন অবকাঠামো নেই। ফলে বৃষ্টি বাদলে ভিজে এবং প্রখর রোদে পুড়ে মরিচ চাষি, ক্রেতাদের মরিচ বেচাকেনা করতে হয়। অথচ এই হাট ইজারা দিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায় প্রায় কোটি। 

সরজমিনে হাট ঘুরে দেখা যায়, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত পুরাতন উপজেলা হেডকোয়ার্টার্স সামনে এই মরিচের হাট বসে। প্রাণ, এসিআই কোম্পানির প্রতিনিধি এবং ঢাকা, বগুড়া, সান্তাহারসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে এখান থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান।

তবে মরিচ চাষে সবটাই সফলতার গল্প নয়। কিছু হতাশার গল্পও আছে। অনেক সময় নকল বীজের কারণে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কিন্তু, এর সমাধান মিলছে না।

এমএসএম / এমএসএম

লোহাগড়ায় সরকারি রাস্তা দখল, ঘরবন্দি শিরিনা খাতুন

সান্তাহারে ইয়াবা ট্যাবলেট ও প্রাইভেট কারসহ দুইজন গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে গরুর গাড়ি মার্কা প্রার্থীর সমর্থনে সভা

কাউনিয়ায় এইচএসসি ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার অভিযোগে

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে গাছের চারা বিতরণ

দুই সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত

পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জন করে চটের ব্যাগ ব্যবহার করুন- কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সোনাগাজীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গরু চোরসহ গ্রেফতার-০৪, চোরাই গরু উদ্ধার

সীমান্তে বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ভূরুঙ্গামারীতে বিএনপির নেতাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এভাবেই নষ্ট হচ্ছে পৌরসভার অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ

টাকার বিনিময়ে সনদ বিক্রি, শিক্ষার্থী নেই তবুও চলছে এমপিওভুক্ত কলেজ

জয়পুরহাটে ব্র্যাকের উদ্যোগে ১৩৯ জন গ্রাহকের মাঝে তেলাপিয়া মাছের পোনা বিতরণ