ঢাকা বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

প্রিমিয়াম ইউনির্ভাসিটি অফ টেকনোলজি নামে জাল সার্টিফিকেট বিক্রির চক্র আবারও সক্রিয়


শহিদুল ইসলাম photo শহিদুল ইসলাম
প্রকাশিত: ২-৬-২০২৪ বিকাল ৫:৪৮

প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সার্টিফিকেট বিক্রি করে  একটি  চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তাদের নামসর্বস¦ রয়েছে ‘প্রিমিয়াম ইউনির্ভাসিটি অফ টেকনোলজি’ নামে একটি সাইন বোর্ড। এমনই একটি বিশ্ববিদ্যালয় সন্ধান মিলছে ঢাকার খিলক্ষেতে একতা টাওয়ারের ৭ম তলায়। কোন ক্লাসরুম বা অফিস না থাকলেও আছে নামমাত্র সাইন বোর্ড দুইটি। শুধু তাই নয় একটি সাইন বোর্ডে রয়েছে দুইটি বিশ^বিদ্যালয়ের নাম তার মধ্যে 'পিচ ব্লেন্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি' (প্রস্তাবিত) লেখা রয়েছে। এ চক্রটি দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর যাবৎ এ প্রতারণা করে আসছে। ২০২২সালে এপ্রিলে একবার র‌্যাবের হাত আটোক হয় এ প্রতারক চক্রটি। কিছুদিন জেলে থাকার পর আবার বের হয়ে একই কাজ করছে তারা।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, নামমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, নেই কোন কোন ক্যাম্পস, আছে ঠিকানা বিহীন একটি ওয়েবসাইড। এই ওয়েবসাইডের নেই কোন অ্যাড্রেস। তবে বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় দুইটি মোবাইল নাম্বার সচল থাকে। ওই নাম্বারে ফোন দিলে প্রফেসার এমএম হক নামে একজন ফোন রিসিড করেন। কেউ ফোন দিলেই তিনি জানতে চান কেন ফোন দেয়া হয়েছে। ভর্তির জন্য হলে অন লাইনে কাগজপত্র পাঠাতে বলেন, এরপর আস্তে আস্তে কিভাবে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে তার ছবক শিখান এবং হাতিয়ে নেন টাকা।

সুচতুর চক্রটি দেশের প্রথম সারির পত্রিকায় চটকদার বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে মফস্বল এলাকার নিবোর্ধ লোকের টার্গেট করে ফাঁত পেতে বসে থাকে। যখন তারা ফোন দেয় তখন তাদের জালে ফেঁসে যায়। তারা এসএসসি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি পর্যন্ত দিয়ে থাকে । তাদের কাছে এমন কোন বিষয় নেই যা তারা পড়ান না, বিজ্ঞান,ব্যবসা,কলা, ডিপ্লোমা, প্রকৌশল,ডাক্তার সব রকমের বিষয় তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ানো হয় এবং সার্টিফিকেট দেয়া হয়। সূত্র বলছে এরকম প্রতারনার ফাঁত তারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করেছে। এ চক্রটি ২০০৯সালে মালিবাগের প্যারামাউন্ট টাওয়ারে ছিলো। এখন তারা খিলখেত রেলগেট একতা প্লাজায় নিয়ে গেছে। মফস্বল এলাকায় যারা প্রতারক তারা এই জাল সার্টিফিকেট কিনে নিয়ে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে। এরই মধ্যে প্রতিবেদকের কাছে অনেক ভুয়া সার্টিফিকেটের কপি এসেছে।

সূত্রে জানা গেছে, মফস¦লে অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং মাধ্যমিকের ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি হওয়ার জন্য বি এ ও এইচএসসি পাসের দরকার হয় যা অনেকই এখান থেকে নিয়ে থাকে।সূত্র জানায়, ভুয়া সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগে 'প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি'র ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল র্এ আগে। শুধু প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিই নয়; 'পিচ ব্লেন্ড ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি' ও 'পিস ল্যান্ড ইউনিভার্সিটি' নামে আরও দুটি ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন। কোর্স ও প্রোগ্রাম-পাঠ্য বিষয়েরও অনুমোদনের কোনো বালাই নেই। তবুও শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি দিচ্ছে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি। নামসর্বস্ব এ প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব কেবল ওয়েবসাইটেই সীমাবদ্ধ।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি  অব টেকনোলজির সনদ দিয়ে এমপিওভুক্তির আবেদন করেন। তবে তাদের আবেদন বাতিল করেছে মাধ্যমিক ও উচ্ছশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেছে সরকারের আরেক সংস্থ’া পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব পায়নি ডিআইএ।এ বিষয়ে ডিআইএ’র পরিচালক অধ্যাপক অলিউল্লাহ্ মো. আজমতগীর বলেন, একাধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি নামক প্রতিষ্ঠানের সনদ দিয়ে এমপিওভুক্তির আবেদন করেছিলেন। তবে এ নামে কোনো ইউনিভার্সিটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ প্রতিষ্ঠানের সনদ দিয়ে এমপিওভুক্তির সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারক সংস্থা ইউজিসি বলছে, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নেই। যাদের অনুমোদন রয়েছে তাদের নাম ইউজিসির ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সবকিছু যাচাই করে ভর্তি হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে ।এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি নামে কোনো ইউনিভার্সিটির অস্তিত্ব নেই। এটি একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান। এদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। যারা এ ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
 এ বিষয় খিতক্ষেত থানার ওসি হুমায়েন কবিরে কাছে জানতে চাইলে তিনি সকালের সময়কে বলেন, এ ব্যাপরে আমার জানা নেই, এ থানায় আমি দুই মাস হয় এসেছি। তবে এখন খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।

তবে বিজ্ঞাপনে দেয়া নাম্বারে এ বিষয়টি নিয়ে মোবাইলে কথা বললে প্রফেসর এম এম হক  নামে একজন কথা বলেন, তার দাবী ইউজিসির আইনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ভারতসহ কয়েকটি দেশের অনুমোদন রয়েছে তাদের। এ অনুমোদনের দ্বারা তারা নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তাদের নিবন্ধনও রয়েছে। তারা ১৮৬০ সালের ২১ ধারা মোতাবেক সোসাইটি আইন ১৯৭৯ এর মাধ্যমে পরিচালিত। কারা এখান থেকে সনদ নিয়েছে, আর কারা নেয়নি সে তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে রয়েছে। এসব কথা বলে তারা ফোন কেটে দেয় এরপর বারবার ফোন দিলেও ধরেনি।

সার্বিক বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, দেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হলে অবশ্যই ইউজিসির অনুমোদন নিতে হবে। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নেই, আর কোনটির অনুমোদন রয়েছে- তা আমাদের (ইউজিসি) ওয়েবসাইটে রয়েছে। এ ধরনের ভুয়া প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।

এমএসএম / এমএসএম

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে ফের উত্তপ্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাবিতে হিজাব দিবসের র‍্যালি ও সিম্পোজিয়াম আগামীকাল

গবিতে প্রথমবার সরস্বতী পূজা: আশীর্বাদ প্রার্থনা শিক্ষার্থীদের

সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে আলু চাষ- কমবে খরচ, বাড়বে উৎপাদন

নারী পুরোহিত করলেন সরস্বতী পূজা

রাবি হাল্ট প্রাইজ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান 'টিম ঝালমুড়ি'

ইবিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষক আহত, আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা

বাঁশ দিয়ে তিতুমীরের সামনের রাস্তা আটকে দিলেন শিক্ষার্থীরা

রাবিতে ৮ম 'আরইউএসসি ন্যাশনাল সায়েন্স ফিয়েস্টা' শুরু

তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে অনশন, দাবি পূরণে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম

জাবি সায়েন্স ক্লাবের নতুন সভাপতি সৌরভ, সম্পাদক মুসা

'ই ইউনিট' পরীক্ষা দিয়ে চার বছর পর জবি নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষায় ফিরল

প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে গবেষকদের বৈজ্ঞানিক সম্মেলন শুরু শনিবার