ভয়াবহ বন্যায় নালিতাবাড়ীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা। ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। সীমান্তবর্তী এ উপজেলার দুটি নদী ভোগাই ও চেল্লাখালীর উজানে পানি কমতে শুরু করলেও ভাটি অঞ্চলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ। নালিতাবাড়ীতে বন্যার পানিতে ডুবে দুই ভাইসহ পাচঁজনের মৃত্যু হয়েছে। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন এসব মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আকস্মিক বন্যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ীর খলিশাকুড়া গ্রামের খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়ার ইদ্রিস আলী (৬৬), নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের দুই ভাই আলম (১৭) ও হাতেম (৩০) এবং বাঘবেড় বালুরচরের ওমেজা বেওয়া পানিতে ডুবে মারা গেছেন। সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। তবে পানির প্রবল স্রোত আর পর্যাপ্ত নৌযানের অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিতে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক এবং বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে অনেক জায়গায় বসতবাড়ি ঘর ধসে গেছে এবং শস্য ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত পোড়াগাঁও, নয়াবিল ও বাঘবেড় ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে গত কয়েক দিনে। এসব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় আলাদা করে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা। উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যানুযায়ী, জেলার ভোগাই নদীর নাকুগাঁও পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালীতে ২৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান বলেন, সোমবারের ভেতর কমবে সব নদীর পানি। উন্নতি হবে বন্যা পরিস্থিতির।
T.A.S / জামান