মাগুরায় জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযানের উদ্বোধন
মাগুরায় মাসব্যাপী জাতীয় ইঁদুর দমন অভিযানের উদ্বোধন এবং বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াসিন আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের, মাগুরা সদর উপজেলার কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির।
ইঁদুর নিধন কর্মসূচির এবারকার প্রতিপাদ্য ছিল- ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক ভাই ভাই, ইঁদুর দমনে সহযোগিতা চাই। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ডিসপ্লে বোর্ডে ইঁদুর সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন কার্যাবলী দেখানো হয়। এ সময় দেখানো হয়, বাংলাদেশে মোট ১২ জাতের ইঁদুর আছে। ইঁদুরের বংশ বৃদ্ধির হার খুব বেশি। ইঁদুর বছরে ৬ থেকে ৮ বার বচ্চা দেয়। একজোড়া ইঁদুর থেকে বছরে ৩ হাজার ইঁদুর জন্ম হতে পারে। এদের জীবনকাল ২-৩ বছর। প্রধান ফসলগুলো ইঁদুর যেভাবে নষ্ট করে তার মধ্যে গমের ক্ষতি করে ৮-১২ ভাগ, আমন ধানের ক্ষতি করে ৫-৭ ভাগ ও শাকসবজির ক্ষতি করে ৪-৫ ভাগ।
সভায় ইঁদুর দমন অভিযান-২০২৪ সফলের জন্য কিছু সুপারিশ করা হয়। সুপারিশসমূহ হলো- ইঁদুর দমন অভিযানকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করে আরো বেগবান করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। জনগণের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলাসহ নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা। শুধু মাস নয়, সারাবছর ইঁদুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। ইঁদুরের বংশ বিস্তার, ক্ষতির প্রভাব ও নিধন কৌশল পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তি করা। স্থানীয় সরকারের সর্ব নিম্নস্তরে যেমন ওয়ার্ড/ইউনিয়নে ইঁদুর নিধনে বিশেষ কর্মসূচি নেয়া যেতে পারে। প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া কর্তৃক সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা। সবশেষে প্রধান অতিথি মো. অহিদুল ইসলাম বলেন, অনুষ্ঠান শুরুর আগে আমাকে নিচ থেকে ইঁদুর মেরে আসতে বলেছিল কিন্তু আমি ভাবলাম একটা প্রাণী হত্যা করব এটা কেমন হয়। এখন অনুষ্ঠানে এসে দেখলাম ইঁদুর একটি খুবই ক্ষতিকর প্রানী তাই তাকে মেরে ফেলা উচিত। আমরা সবাই ইঁদুরের বংশবিস্তার সম্পর্কে সচেতন হবো এবং ইঁদুর নিধনের মাধ্যমে ফসলকে রক্ষা করব।
উক্ত অনুষ্ঠানে মাগুরার ৬ বার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মো. আব্দুল হান্নান মোল্লার তার আবিষ্কৃত ইঁদুর নিধনের বিভিন্ন ফাঁদ কীটনাশক ও অন্যান্য জিনিসপত্র প্রদর্শন করেন, মাগুরায় ২০০৫ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এবং ব্যবহারের কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। তার চাওয়া তার আবিষ্কৃত এই প্রযুক্তি বাংলাদেশর প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক, তবেই তার সার্থকতা।
জেলা প্রশাসক ওহিদুল ইসলাম তার এই আবিষ্কারের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অবশেষে তাকে তার অবদানের জন্য সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। এছাড়া ও কৃষিক্ষেত্রে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় অবস্থান অধিকার করা মো. আশরাফুল আলম সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাগুরা, তাকেও সম্মাননা দেয়া হয়।
T.A.S / জামান