দুর্ভোগের অপর নাম ইজিবাইক
অসহনীয় যানজটে দিশাহারা মাগুরাবাসী
মাগুরায় দিন দিন ইজিবাইকের ব্যবহার বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে জ্যাম-দুর্ভোগ। মাগুরা শহরের ঢাকা রোড থেকে চৌরঙ্গী পর্যন্ত সড়কে যত্রতত্র ইজিবাইক দাঁড় করে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়। এছাড়া শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা চৌরঙ্গী ও ভায়না মোড় এখন ইজিবাইকের স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। এসব কারণে সড়কের উভয় পাশে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
জানা গেছে, গত ছয় বছর আগে অনুমানে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ ইজিবাইকের নিবন্ধন দেয়া হয়েছিল। তবে অবৈধভাবে নেমেছে আরো কয়েক হাজার। দিন দিন বাড়ছে অনুমোদন। নিবন্ধনের সময় শেষ হয়েছে দুই মাস আগে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে চালক ও ইজিবাইককে নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য আবেদনপত্রের আহ্বান জানায় পৌরসভা। ইজিবাইক ও চালকসহ প্রায় ৪ হাজার ৪০০ আবেদন জমা পড়ে। বর্তমানে নিবন্ধনহীন অন্তত সাড়ে তিন থেকে চার হাজার ইজিবাইক শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলাচল করছে। যানজটও প্রতিদিন তীব্র আকার ধারণ করছে। গত সোম ও মঙ্গলবার ( ২১ ও ২২ অক্টোবর) সকাল থেকে সরেজমিন দেখা যায়, পৌর শহরের প্রধান সড়কের ভায়না মোড় থেকে চৌরঙ্গী পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে ইজিবাইকের সবচেয়ে বেশি চলাচল। এ কারণে প্রতিদিনই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। চৌরঙ্গী সড়কে এলোমেলোভাবে ইজিবাইক দাঁড়িয়ে আছে। এমনকি পথচারীদের চলাচলের জন্যও কোনো জায়গা নেই।
শুধু এ সড়কেই নয়, শহরের পুরাতন বাজার, থানার সামনে, মাগুরা সরকারি কলেজের সামনে, জজকোর্টের সামনে, চৌরঙ্গীর মোড়, ঢাকা রোড, ভায়নার মোড়, হাসপাতালের সামনে, নতুন বাজার, সড়কেও একই রকম দৃশ্য দেখা যায়। এসব সড়কে ইজিবাইকের জন্য প্রতিদিন দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শহরের সব রাস্তায় এলোমেলোভাবে ইজিবাইক দাঁড়িয়ে থাকে।
এই ভায়নার মোড় অতিক্রম করেই শহরের ভেতরের সড়ক সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল, বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজ, সদর থানা, পৌরসভা, এসপি অফিস , জজকোর্টসহ বিভিন্ন ব্যাংক, মাতৃসদন কেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে যেতে হয়। মাত্রাতিরক্ত ইজিবাইকের জন্য প্রতিনিয়ত শহরের এসব এলাকার সড়কে যানজট তৈরি হচ্ছে।
শহরের অন্তত ১৫-২০জন ব্যক্তি জানান, শহরের সবক’টি সড়কজুড়ে ইজিবাইকের চলাচল। রাস্তার মোড়গুলোতে অবৈধ স্ট্যান্ডে সারাদিনই যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া রাস্তার মাঝখানেই ইজিবাইক থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হয়। ‘‘পুরো শহর যেন ইজিবাইকের দখলে। ইজিবাইকের ভাড়া কম, এতে যাতায়াতের সময়ও বাঁচে। তবে ইজিবাইকের চালকরা নিয়ম কানুন বোঝেন না। এমনকি ১২/১৩ বছরের শিশুদেরও চালকের আসনে দেখা যায়। নিজের মন মতো গাড়ি চালায় তারা।
‘অদক্ষ চালক ও অনিয়ন্ত্রিত ইজিবাইকের কারণে প্রতিদিন ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেকেই গুরুতর আহত হচ্ছেন। অথচ এসবের কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।’’ এ বিষয়ে মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা, রেজাউল ইসলামের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে পারব না । এদিকে সাধারণজনগণ বলেন‘দেশের বিভিন্ন শহরে ইজিবাইক নিষিদ্ধ ও চালকদের
ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হোক।
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা ট্রাফিক পরিদর্শক মোঃ আরজু হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রায়ই অভিযান চালনা করি। তবে ইজিবাইকের চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনার কাজটি পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব না এবং নাগরিককেও সচেতন হতে হবে।’‘ তিনি আরোও বলেন যদি পৌরসভা এর কোনো পদক্ষেপ নেন তাহলে ভালো সমাধান আসতে পারেন।
এদিকে মাগুরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র( অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের) সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে চাই না । এবং এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই।
T.A.S / জামান