ইনকিলাবের সম্পাদক ও রিপোর্টারের বিরুদ্ধে আবারও ৫ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা

ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এবং রিপোর্টার সাইদ আহমেদের বিরুদ্ধে ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপুরনের মামলা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানীমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপ। ঢাকার ৫ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে গতকাল মঙ্গলবার ২৯ অক্টোবর মামলাটি করেন গ্রুপের ব্যবস্থাপক মো. মুরাদুল ইসলাম। মামলা নং- ৭৫/২০২৪। বাদী নোমান গ্রুপের পক্ষের আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

আইনজীবী বলেন, নোমান গ্রুপ, এর চেয়ারম্যান, এমডি ও পরিচালকগণের বিরুদ্ধে বিগত ৪ ডিসেম্বর ২০২২, ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ২৬ অক্টোবর ২০২৪ এবং ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা মিথ্যা, ভিত্তিহীন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে, মানহানিকর ও মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বন্ডের কাঁচামাল খোলাবাজারে বিক্রি করে ‘শত শত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে নোমান গ্রুপ’ ‘অবৈধভাবে ব্যাংক ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ’ ‘ভুয়া জামানতে তুলে নেয়া হয় সাড়ে ৪শ' কোটি টাকা’ ‘দেশ ত্যাগের পর নিষেধাজ্ঞা দিল দুদক’ ‘নোমান গ্রুপের ব্যাংক লুট-নিষেধাজ্ঞার আগেই দেশ ছাড়েন তিন পরিচালক’ নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদেরকে ব্যাংক লুটেরা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলন দমনে অর্থের যোগানদাতা আখ্যায়িত করে মিথ্যা, ভিত্তিহীন মানহানিকর অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রথমে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদলিপি ও আইনি নোটিশ দেয়ার পরও ভুল স্বীকার করেনি দৈনিক ইনকিলাব। ফলে নিজস্ব সুনাম রক্ষার্থে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে নোমান গ্রুপ। ইতিপূর্বেও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম বাহাউদ্দীন এবং রিপোর্টার সাইদ আহমেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বনোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে ২ হাজার কোটি টাকার মানহানি ও ৫ হাজার কোটি টাকার অর্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান দৈনিক সকালের সময়য়ের প্রতিবেদককে জানান, বর্তমান উপদেষ্টা সরকার যখন দেশকে এগিয়ে নিতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় একটি কুচক্রি মহল সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল লাখো মানুষের রুটি-রুজির জায়গা, দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলা স্বনামধন্য নোমান গ্রুপকে ধ্বংসের নীল নকশায় মেতে উঠেছে। তিনি বলেন, তবে আপনাকে জানিয়ে রাখি নোমান গ্রুপ পেশাদার ব্যবসায়ি গ্রুপ অপসাংবাদিকতা করে নোমান গ্রুপকে ধ্বংস করা যাবে না, কারণ কোটি মানুষের দোয়া ও মহান আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন।    

উল্লেখ্য, এর আগেও দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম বাহাউদ্দীন এবং বিশেষ প্রতিবেদক সাইদ আহমেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বনোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে স্বনামধন্য ব্যবসায়িক গোষ্ঠি নোমান গ্রুপ ৫ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছিল। বিগত ৮ অক্টোবর ঢাকার ৫ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে নোমান গ্রুপের ব্যবস্থাপক মুরাদুল ইসলাম এ মামলা দায়ের করেন। বাদী নোমান গ্রুপের পক্ষের আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এদিন আইনজীবী তৌফিকুল বলেন, নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গত ১ সেপ্টেম্বর দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ও মানহানিকর মনগড়া একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেই চলেছে। 

ওই প্রতিবেদনে নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যানকে ব্যাংক লুটেরা আখ্যায়িত করে নোমান গ্রুপ ঋণের নামে ২৮ হাজার কোটি টাকা হাতিয়েছেন বলে মিথ্যা, মানহানিকর অভিযোগ আনা হয়েছিল। প্রতিবেদনে নোমান গ্রুপ ৪৬২ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারকে শত শত কোটি টাকা ডোনেশন দিয়েছে, তিতাস গ্যাস থেকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে, জার্সি বদলাচ্ছে নূরুল ইসলাম, অনেক মানুষ গুম করা হয়েছেসহ আরো অসত্য, কাল্পনিক, মানহানিকর অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ ঘটনাতেও প্রথমে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদলিপি ও আইনি নোটিশ দেয়ার পরও ভুল স্বীকার করেনি দৈনিক ইনকিলাব। ফলে নিজস্ব সুনাম রক্ষার্থে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিল নোমান গ্রুপ।

এই পদক্ষেপের আলোকে দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম বাহাউদ্দীন এবং বিশেষ প্রতিবেদক সাইদ আহমেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বনোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে ৫ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।