ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

পার্বত্য জেলা পরিষদ না থাকায় তিন জেলার সরকারি দফতরগুলোতে স্থবিরতা


মনু মারমা, রাঙামাটি photo মনু মারমা, রাঙামাটি
প্রকাশিত: ৬-১১-২০২৪ দুপুর ৩:৩৫

জনপ্রতিধি না থাকায় অনেকটা অভিভাবক শূন্য হয়ে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে পাহাড়ের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো। তিন জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সমাজসেবাসহ হস্তান্তরিত বিভাগগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম থমকে আছে। নতুন পরিষদ পুনর্গঠন না হওয়ায় ফাইল-নথিপত্র অনুমোদন, প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রেও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠনে উদ্যোগী হন সুপ্রদীপ চাকমা। এ লক্ষে তিনি খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে প্রথকভাবে মত বিনিময় সভাও করেছেন। এরপর তিন মাস পার হলেও এখনো তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুর্নগঠন করতে পারেনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে খুব শীঘ্রই তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম শামিমুল হক সিদ্দিকী।

আওয়মী লীগ সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর তাদের মনোনীত চেয়ারম্যান ও সদস্যরা কার্যত: ৫ আগস্টের পর থেকে ‘নিরাপত্তাহী শঙ্কায় পরিষদ কার্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। এর মাঝেই গত ৩ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী ‘শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন, পরে বাতিল হয়ে যায় সদস্যদের পদও। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে পরিষদগুলো। এদিকে পদের আশায় নানাজনের দরজায় দরজায় তদবির নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে তিন জেলার বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠির অসংখ্য মানুষ।

পরিষদ পুনর্গঠন বিষয়ে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন বলেন- আমরা আশা করেছিলাম অন্তবর্তীকালীন সরকার নতুন আঙ্গিকে নতুন পরিষদ গঠন করবেন। দীর্ঘ আড়াই মাস পরও পরিষদ পুনর্গঠন না হওয়ায় উন্নয়নমুলক কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ও যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে অচিরেই তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা দরকার। আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন বলেই নিজেদের অবস্থান বুঝতে পেরে তারা সটকে পড়েছেন বলে যোগ করেন তিনি।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সমতলের ৬১ জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দিলেও আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করেনি সরকার। যদিও গত ১৬ অক্টোবর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় তিনটি পৃথক অফিস আদেশে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাগণকে প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করে। এ নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন মহলে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও বিধি-বিধানকে পাশ কাটিয়ে এভাবে অফিস আদেশের মাধ্যমে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাগণকে প্রশাসনিক ক্ষমতা দেয়াকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি লংঘন বলে অভিহিত করা হয়। এ ঘটনাকে নজিরবিহীন এবং এতে প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে রাঙামাটির সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট প্রতীম রায় পাম্পু বলেন-মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাগণকে প্রশাসনিক ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি হয়ত প্রশাসনিক বাস্তবতা। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। পরিষদ পুনর্গঠন সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলে আমরা জানি। অচিরেই হয়তো জেলা পরিষদ পুনর্গঠন হতে পারে। পরিষদ গঠন হলে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকবে না।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম বলেন, বর্তমানে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে কোন কার্যক্রম নেই। আমরা শুধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিচ্ছি। 
তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম শামিমুল হক সিদ্দিকী মুঠোফোনে বলেন, সব কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। খুব শিগগিরই তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করা হবে। 
১৯৮৯ সালের ২৫ জুন স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচন দিয়ে তিন পার্বত্য জেলায় ৫ বছর মেয়াদে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট তিনটি পৃথক স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন করেন তৎকালীন সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।

পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর চুক্তি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার পরিষদের পরিবর্তে পার্বত্য জেলা পরিষদ’ নামকরণ করে একজন উপজাতীয় ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট অন্তর্তীকালীন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হয়।
২০১৪ সালে তিন পার্বত্য পরিষদের আইন সংশোধন করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে পুনর্গঠন করে একজন চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্যর আন্তবর্তীকালীন পরিষদ গঠন করে সরকার।  

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামীলীগ সরকারের মনোনীত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা গত আড়াই মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে পাহাড়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সমাজসেবাসহ হস্তান্তরিত বিভাগগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম থমকে যায়। এতে পার্বত্য অঞ্চলে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শূণ্যতার সৃষ্টি হয়। এধরনের প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক শূণ্যতা পরিহার করার জন্য পার্বত্য এলাকার জনগণ শীঘ্রই তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের পুনর্গঠন প্রত্যাশা করছেন।

স্থানীয়রা জানান, দেশের সর্ব বৃহত্তর উপজেলা এখনো কোন ফায়ার স্টেশন না থাকায় আগুনে প্রতিবছর কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। তাই দ্রু সময়ে বাঘাইছড়িতে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের জোর জানায় স্থনীয়রা।

T.A.S / T.A.S

জয়পুরহাটে গ্রাম আদালত বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ঝালকাঠিতে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

মেঘনায় স্পিডবোট ডুবি, অক্ষত উদ্ধার ২৮ যাত্রী

বিয়ানীবাজারে প্রবাসী জামায়াত কর্মীকে হত্যার হুমকি

ত্রিশালে ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু

মেহেরপুরে কাব কার্নিভাল ২০২৫ এর উদ্বোধন

বারইয়ারহাটে আন্ডারপাস অথবা ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

বাঘায় বিশেষ অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ আটক ৫

সিংগাইরে শ্রেষ্ঠ ওসি তৌফিক আজম, ওয়ারেন্ট তামিলে এএসআই জলিল পুরস্কৃত

চুয়াডাঙ্গায় কেরুজ পুকুরে বিদ্যুতায়িত জিআই তারে কৃষকের মৃত্যু

পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে আনবেন না: শিক্ষা উপদেষ্টা

কুতুবদিয়ায় তিন দিনে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত

রাজশাহীতে দিনব্যাপী সুজুকি বাইকার্স ডে অনুষ্ঠিত