বারহাট্টার মাঠে শোভা পাচ্ছে বাহারি রঙের ফুলকপি
দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো বারহাট্টার কৃষকের মাঠে শোভা পাচ্ছে বাহারী রঙের রঙিন ফুলকপি। এসব কপি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমনি সুস্বাদু, পুষ্টিগুণও সাধারণ ফুলকপির চেয়ে বেশি। এসব কপির ফলন ও মুনাফা ভালো হওয়ায় চাষীদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়ছে। এসব রঙিন ফুলকপি ক্রেতাদের নজর কাড়ছে, চাষীরাও ভাল দাম পাচ্ছেন।
সরেজমিনে বারহাট্টার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে বাহারী রঙের ফুলকপি। কোথাও বেগুনী, কোথাওবা হলুদ, আছে লাল-সবুজের শোভাও। না না রঙের এই ফুলকপি দেখতে খুবই সুন্দর। এসব কপি চাষে কোনো ধরনের কীটনাশক-সার ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এই কপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা।
উপজেলার সদরের বরঘর গ্রামের কৃষক তপন চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি সকালের সময়কে বলেন, ‘নিজ বাড়ির আঙিনার এক বিঘা জমিতে আমি প্রতি বছরই লাউ, ঢ্যাঁড়স, ফুলকপি, বেগুন, টমেটো, শিম, শশাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করি। গতবছর স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে জমির অর্ধেকাংশে পরীক্ষামূলকভাবে হলুদ ও গোলাপি রঙের ফুলকপি চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছিলাম। তাই এবারও চাষ করেছি। বাজারে অন্যান্য সবজির দাম কমে গেলেও রঙিন ফুলকপির চাহিদা কমেনি বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন ফুলকপি। মাঝারি আকৃতির একেকটি ফুলকপি ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন কৃষকসহ উৎসুক মানুষ। তাদের কেউ ফুলকপি কিনছেন আবার কেউ চাষের বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।
রসুলপুর গ্রামের কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, এতদিন আমি সাদা ফুলকপি চাষ করেছি। গত দুই বছর ধরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী অল্প কিছু জায়গায় এই রঙিন ফুলকপি চাষ করেছিলাম। ফলনও হয়েছিল ভালো, মূল্যও ভালো পেয়েছি। তবে কপি গুলো রঙিন হওয়ায় বাজারে এই ফুলকপির দাম দ্বিগুণ। গতবার কৃষি অফিস থেকে ২০০ বীজ এনে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে ২ শতাংশ জমিতে রোপণ করে প্রায় ২০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছি। এবার আমি ১০ শতাংশ জমিতে রঙিন ফুলকপির চাষ করেছি।
তিনি জানান, ফুলকপি চাষে তিনি কোনো প্রকার কীটনাশক বা সার ব্যবহার করেননি, শুধু জৈব সার ব্যবহার করছেন। একই পরিমাণ খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এই কপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও।
স্থানীয় বাসিন্দা সাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাদ কেমন তা দেখতে জমি থেকেই ৫০ টাকা দিয়ে একটি হলুদ রঙের ফুলকপি কিনেছি। স্বাদ যেমনই হোক কপি গুলো দেখতে চমৎকার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, এসব রঙিন কপি নিঃসন্দেহে একটি আকর্ষণীয় সবজি। রঙিন কপি চাষে বর্তমানে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। সেইসঙ্গে মানবদেহের জন্য সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপি অনেক পুষ্টিকর এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। রঙিন ফুলকপি ভিটামিন-সি, ই, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটেনেয়ড সমৃদ্ধ সবজি। এই সবজি ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে।
এমএসএম / এমএসএম