ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ ঐতিহ্য বটবৃক্ষ


বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি photo বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৭-৩-২০২৫ দুপুর ৪:১৭

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে বটবৃক্ষ। এক সময় বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই বটগাছ দেখা যেতো। কালের বিবর্তনে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য বটবৃক্ষ।

একসময়ে বাড়ির সামনে, জমির ধারে ও নৌকাঘাটগুলোতে বট গাছ থাকতো। তখন কোনো ঠিকানা নিশ্চিত করতে বট গাছকেই ব্যবহার করা হতো। গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজার এবং বিভিন্ন মেলাও বসতো বটবৃক্ষকে কেন্দ্র করে। এমনকি কৃষি জমিতে কাজ করা ক্লান্ত কৃষকরাও এক সময় বিশ্রাম নিত এই বটবৃক্ষের ছায়ায়।

সরেজমিনে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখাগেছে, বর্তমানে প্রাচীন আমলের দুই-একটি গাছ চোখে পড়লেও প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও মানুষের চলাফেরার সুবিধার্থে বেশিরভাগ গাছই কেটে ফেলা হয়েছে।

উপজেলা সদরের সহকারী শিক্ষক ও সাহিত্যিক মানষ গুণের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগেও আমাদের এলাকায় অসংখ্য বটগাছ ছিল। পুরনো আমলের বটগাছগুলো নিজের প্রয়োজনে মানুষ কেটে ফেললেও নতুন করে কোনো চারা রোপণ না করায় প্রকৃতি বান্ধব এই গাছ আর তেমন চোখে পড়ে না।

তিনি আরও বলেন, বানিজ্যিকভাবে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন গাছ যত্নসহকারে রোপণ করলেও বর্তমানে বটগাছ রোপণের তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনা। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে একদিকে বটবৃক্ষ অন্যদিকে বাংলার সংস্কৃতি। আমার মতে- বর্তমানে পরিবারের জীবিত বয়স্ক ব্যক্তিকে বটবৃক্ষের সঙ্গে মূল্যহীন বলে তুলনা করা হচ্ছে।

একই এলাকার আরেক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ও সংগীতশিল্পী কান্তি রঞ্জন রায় চৌধুরী বলেন, গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় লোকসংগীত ‘বটবৃক্ষের ছায়া যেমন রে... মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে’ মানুষকে আজও মনে করিয়ে দেয় গ্রামীণ ঐতিহ্য বটবৃক্ষের কথা। বটগাছ বাংলা সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সংস্পর্শ অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে মিশে আছে। আজ থেকে প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে বারহাট্টার গ্রামীণ জনপদের আনাচে-কানাচে চোখে পড়তো বটবৃক্ষ। প্রতিনিয়ত পুরনো বটগাছগুলো মানুষ কেটে ফেললেও নতুন করে কোনো চারা রোপণ না করায় এখন আর আগের মতো চোখে পড়ছে না প্রকৃতিবান্ধব এই বটগাছ।

বারহাট্টা সরকারি ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রভাষক মজিবুল হক জানান, বট তথা বটগাছের বৈজ্ঞানিক নাম (Ficus benghalensis) ফাইকাস বা ডুমুর জাতীয় গোত্রের ইউরোস্টিগ্মা উপগোত্রের সদস্য। এর আদি নিবাস হল বঙ্গভূমি (বাংলাভাষী অঞ্চল)। এটি একটি বৃহদাকার বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। বট গাছ খুব বড় জায়গা জুড়ে জমির সমান্তরাল শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে যারা স্তম্ভমূলের উপর ভর দিয়ে থাকে। স্তম্ভমূল প্রথমে সরু সরু ঝুরি হিসবে বাতাসে ঝোলে। পরে মাটিতে প্রেথিত হলে  স্তম্ভমূলের মাটির উপরের অংশ বিটপে পরিবর্তিত হয়। বটগাছের মূল গাছ এবং গাছের ঝুরির শিকড় অনেকটা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশের মাটি আঁকড়ে রাখে। তুলনামূলকভাবে এ গাছে পাতা বেশি। বসন্ত ও শরৎকালে নতুন পাতা গজায়। কচি পাতার রং তামাটে। বট গাছের মঞ্জরির গর্ভে খুবই ছোট এবং ফলের মতোই গোলাকার ফুল লুকানো থাকে। এক লিঙ্গিক ফুল পরাগায়ণের জন্য বিশেষ জাতের পতঙ্গের ওপর নির্ভরশীল। গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে বটের ফল পাকে। তিনি বলেন, একটি বট গাছ কাটার সঙ্গে সঙ্গে ৩ শতাধিক প্রজাতির আবাস নষ্ট হয়। এরা আশ্রয় খুঁজে বেড়ায়। আশ্রয় না মিললে এক সময় হারিয়ে যায় বা বিলুপ্ত হয়। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে পরিবেশবান্ধব বিশাল আকৃতির বটগাছকে রক্ষা করতে হবে। 

বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, আগের মতো বটগাছ আর চোখে পড়ে না। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি করে বটগাছ লাগাতে হবে।

এমএসএম / এমএসএম

জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সেকাল-একাল বই এর মোড়ক উন্মোচন

বড়লেখায় ইজ্জত বাঁচাতে চলন্ত অটোরিকশা থেকে লাফ দিয়ে কলেজছাত্রী আহত, চালক আটক

মানবিক সাহায্যের আবেদন-‘বাঁচতে চায় শিশু ফরহাদ আলী’

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাজশাহীতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

কমলগঞ্জে দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য প্রকল্প পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ

মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা হেঁচড়াসহ মারধরের অভিযোগ

বাঘা থানার অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত ও নিয়মিত মামলার ৬ আসামি গ্রেফতার

নবীনগরে কাঁঠালের ছড়াছড়ি: বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক ও ভোক্তা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় স্টপেজের দাবিতে ট্রেন থামিয়ে অবরোধ

সন্দ্বীপ থানার অভিযানে ১২ মামলার আসামী গাঁজা ব্যবসায়ী আটক

নোয়াখালীতে আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ যুবদল সভাপতি গ্রেফতার

কাউনিয়ার মেহরাব নৌপ্রধান স্বর্ণপদক পাওয়ায় এলাকায় অভিনন্দনের ঝড়