চট্টগ্রামে মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) চট্টগ্রাম অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্নভাবে অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। তারা বিভিন্ন কৌশলে চাঁদা আদায়, মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে নিয়মিত মোটা অংকের মাসোহারা নেয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিগত সময়ে ঈদ রমজানের আগ থেকে বিএসটিআই মাঠ পর্যায়ে জোরালো মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করে আসলেও এবার বিএসটিআইর কর্মকান্ড ঝিমিয়ে পড়েছে কোন ধরণের কর্মকান্ড চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিএসটিআই চট্টগ্রাম অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে একই অফিসে চাকুরী করার কারণে ভেজাল পণ্যর ব্যবসায়ী ও কারখানার মালিকের সাথে এক ধরণের সখ্যতা গড়ে উঠেছে। মাসোহারা নেয়ার কারণে ভেজাল পণ্য ও কারখানা বিরোধী কোন অভিযান করছে না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানায়।
এছাড়াও উক্ত অফিসে কোন গ্রাহক সেবা নিতে গেলে মোটা অংকের ঘুষ। সরকারি ফি ছাড়াও লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও মেলে না লাইসেন্স, পাস হয় না স্যাম্পলও। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা এক ধরনের জিম্মি এখানকার অসাধু ও ঘুষখোর কর্মকর্তাদের কাছে। সরকারি ফির কয়েক গুণ বেশি টাকা দিলেও কর্মকর্তারা নানা অজুহাতে আটকে দেন স্যাম্পল টেস্ট। তাদের হয়রানির শিকার হয়ে ইতিমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী গুটিয়ে ফেলেছেন তাদের ব্যবসা।
স্যাম্পল পাস করতে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করে রাহিদ ড্রিংকিং ওয়াটারের স্বত্বাধিকারী আমিরুল ইসলাম ফি ছাড়াও লাইসেন্স পেতে বিএসটিআই কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লক্ষাধিক টাকা দিয়েছি। পানির স্যাম্পল কালেকশন করলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে স্যাম্পল পাস করেননি। লাইসেন্সের জন্য অনেক কর্মকর্তার কাছে ধরনা দিয়েছি, সবাই নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে ভুক্তভোগী ও কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম শাখার নেতারা শিল্প মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগে দাবি করা হয় কয়েক গুণ বাড়তি টাকা ছাড়া কোনো পণ্যের মান যাচাই সনদ পাওয়া যায় না এখানে। অনেক অবৈধ কোম্পানি মাসিক মাসোহারার চুক্তিতে ব্যবসা করছে। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম শহরে ১০০ থেকে ১২০টি মিনারেল ওয়াটার কোম্পানির লাইসেন্স থাকলেও বর্তমানে তা ৩০ থেকে ৪০ টিতে নেমে এসেছে। অধিকাংশ ফ্যাক্টরি এখন মাসিক মাসোহারা ভিত্তিতে চলছে। বিএসটিআই অধ্যাদেশ অনুযায়ী লাইসেন্স গ্রহণের পর ৬ মাস অন্তর মার্কেট সার্ভিলেন্স করে ওই পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষা করার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসে বিভিন্ন পণ্যের লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সঠিক কোনো তালিকা নেই। শিশু খাদ্য, সয়াবিন, জুস, পানি, পাউডার দুধের রমরমা অবৈধ বাণিজ্য চলছে চট্টগ্রাম মহানগরসহ পুরো জেলায়। অনেকে প্যাকেটের গায়ে বিএসটিআইর ভুয়া লোগো লাগিয়ে অবাধে পণ্য বিক্রি করছে।
মিল্ক ভিটা দুধ সবার পরিচিত। মিল্ক ভিটা দুধের আদলে একই রকম প্রিন্ট করা প্যাকেট ও মলাটে ডেইরি ফ্রেস নাম দিয়ে সম্পূর্ণ ভুয়া ও বিএসটিআইর লাইসেন্সবিহীন দুধ চট্টগ্রামে বাজারজাত করা হচ্চ্েছ। কোম্পানিটির মূল ঠিকানা নারায়ণগঞ্জ হলেও তারা চট্টগ্রামে সাধারণ ভোক্তাদের বাজারজাত করছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই এওয়ান, এ সেভেন, ডান্যোফা, রেসিপি, কুকমি, সূর্য্য, অ্যারাবিয়ান, কর্ণফুলী, রূপসা, শক্তি, ইমা, আমিনসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করে ভেজাল ঘি উৎপাদন করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে নীরব বিএসটিআই। একইভাবে অনেক বেকারি বিএসটিআইয়ের নকল সিল ব্যবহার করে ব্যবসায় পরিচালনা করলেও তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। চলতি মৌসুমে ভেজাল সেমাই, ঘি, দুধ, তেলসহ পণ্য ও কারখানাতে বিএসটিআই অভিযান পরিচালনা করলেও এবার তারা নিরব দর্শকের ভূমিকায়।
হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বেকারিসহ বিভিন্ন খাবারের দোকানের যাবতীয় বিষয় তদারকির দায়িত্বে আছে বিএসটিআই, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা সরকারি এ চারটি দপ্তরের মধ্যে তিনটি সক্রিয় থাকলেও দৃশ্যমান কোনো অভিযান নেই বিএসটিআইয়ের। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অভিযোগ,অসাধু ও লাইসেন্সবিহীন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনায় বিএসটিআয়ের কোনো আগ্রহই নেই। মাসোহারা আদায় করার কারণেই তারা অভিযান চালাচ্ছেন না।
এ প্রসঙ্গে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল বাহার ছাবেরী, জানান বিএসটিআইর বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করে আসছি। উক্ত অফিসে দীর্ঘদিন ধরে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে যাওয়ায় তারা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। এ অফিসটি এখন ভেজাল ব্যবসায়ীদেও হাতে নিয়ন্ত্রিত তাদেরে ইশরায় চলছে সব কর্মকান্ড সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হলেও তাদের কিছু করার নেই, তারা তাদের লাভের হিসাব করে অফিস চালাচ্ছে।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম অফিসের মোবাইল কোট নিয়ন্ত্রণ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে সহকারী পরিচালক(সিএম) নিখিল রায় ও সহকারী পরিচালক(সিএম) রিগ্যান বৈদ্য। এ বিষয়ে বিএসটিআই সহকারী পরিচালক নিখিল রায়ের কাছে অভিযান না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্টে তারা অংশ গ্রহণ করতেছে বলে দাবি করেন বিএসটিআই নিজস্ব কোন অভিযান নেই কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি প্রতিবেদকের সাথে বসে কথা বলবেন বলে জানান।
মোবাইল কোর্টের দায়িত্বে থাকা অরেক সহকারী পরিচালক (সিএম) রিগ্যান বৈদ্য বলেন, বিএসটিআইর ভেজাল বিরোধী অভিযান বন্ধ বিষয়টি সঠিক না, আমরা আমাদের করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছি, চলতি মাসে কি পরিমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি তথ্য দিতে পারবে না অফিস প্রধানের অনুমতি লাগবে উনার অনুমিত ছাড়া তথ্য দেয়া নিষেধ রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসটিআই চট্টগ্রাম উপ পরিচালক (সিএম) ও অফিস প্রধান মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানীর সাথে মোবাইলে যোযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে ফোনে এসএমস দেয়া হলেও কোন সাড়া দেয়নি।
এমএসএম / এমএসএম

রাণীশংকৈলে ৩ ইটভাটার মালিককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

গণতন্ত্রের অর্ডার ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন শক্তিশালী গণমাধ্যম : আমির খসরু

নওগাঁয় অবৈধ ইট ভাটা ভেঙে গুড়িয়ে দিল প্রশাসন

নবীনগরে ১১ চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার

গাজীপুরে ঘোড়ার মাংস বিক্রি করে আলোচনায় দুই বন্ধু, কেজি ২৫০ টাকা

নেত্রকোনা দুর্গাপুরে খামারের পাহাড়াদারকে হত্যা করে গরু লুট, যুবদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩

জামালপুরে আইনজীবী ও শিক্ষার্থীদের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি

অটোরিকশা চোর চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার

তানোরে দাদন ব্যবসায়ীর লাঞ্ছনা সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা

ধামইরহাটে ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমানকে বিদায় সংবর্ধনা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মনিরা'কে ছাত্রদলের সম্মাননা প্রদান

পটুয়াখালীতে যাকাতের চেক বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
