ঢাকা মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষায় আধাপাকা ধান কাটছেন কৃষক


হারুন অর রশিদ, নালিতাবাড়ী photo হারুন অর রশিদ, নালিতাবাড়ী
প্রকাশিত: ২৭-৪-২০২৫ দুপুর ২:৪৫

বুরুঙ্গা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল কাদির (৫০)। ধারদেনা করে সীমান্তে ৭৫ শতক জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন তিনি। ফলন ভালোই হয়েছে। ধান পাকতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। কিন্তু তার আগেই গতকাল শনিবার ছেলেকে নিয়ে আধা পাকা ধান কেটে নেন আব্দুল কাদির। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কী করমু আত্তির (হাতি) ডরে আধা পাহা ধান কাডুন লাগতাছে। এ ছাড়া তো কোনো উপায় নাই। মাঝেমধ্যে হাতির দল পাহাড় থেকে নেমে এসে ধানক্ষেত বিনষ্ট করছে। তাই পেটের খোরাকী ও খরচের টাকা তুলতে আত্তির ডরে আধাপাকা ধানই কেটে ঘরে তুলছি।’

শুধু আব্দুল কাদির একা নয়, তাঁর মতো উপজেলার পোড়াগাঁও, নয়াবিল ও রামচন্দ্রকুড়া সীমান্তবর্তী এলাকার অর্ধশতাধিক প্রান্তিক কৃষক বন্য হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। হাতির দলকে প্রতিরোধ করতে তাঁরা ফসল রক্ষায় নির্ঘুম রাতও কাটাচ্ছেন।শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা কালাপানি গ্রামের পাহাড়ি গোপে কৃষক-কৃষাণীরা দলবেঁধে তাদের আধাপাকা বোরো ধান কাটছেন। তারা জানান, প্রায় ৪০/৫০টি বন্যহাতি প্রতিদিন পড়ন্ত বিকেলে খাবারের সন্ধানে বোরো ধানক্ষেতে নেমে এসে ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করছে। এতে তাদের সোনার ফসল ঘরে তোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাই যেসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু করেছে, সেসব ধান কাটা শুরু করেছেন।

এলাকার কৃষকরা ধান রোপণের পর থেকেই দিনের বেলায় টং ঘরে বসে এবং রাতের বেলায় মশাল জ্বালিয়ে চিৎকার করে ফসল রক্ষা করছেন। কিন্তু আবাদের প্রায় শেষ প্রান্তে এসেও হাতির ভয়ে ঠিকমতো পাকা ধান কাটতে পারছেন না।একই এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, "সারারাত জেগে হাতি তাড়ানোর কারণে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে। এজন্য আমরা দিনের বেলায় ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না।"

কৃষাণী রত্না আক্তার বলেন, "বন্যহাতির দল আগে রাতের বেলায় বোরোক্ষেতে নেমে আসতো। আর এখন দিনের বেলাতেও এসে ধান খেয়ে সাবাড় করছে। হাতিরা এখন আর কোনো কিছুতেই ভয় পায় না। এমনকি কোনো বাধাও মানে না। আমরা বন্যহাতির ভয়ে ছোট ছোট সন্তানাদি নিয়ে রাত জেগে বসে থাকি। ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না।"ওই এলাকার কৃষক আয়নাল হক বলেন, "আমার দুটি বসতঘর গুড়িয়ে দিয়েছে বন্যহাতি। আমি এর কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি।" একই কথা জানান কৃষাণী রাবিয়া বেগম। তিনিও ফসলের ক্ষতিপূরণ পাননি।

ময়মনসিংহ বনবিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, "বন্যহাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।"নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, "নিয়ম হলো শতকরা ৮০ ভাগ পাকলে ধান কাটতে হয়। কিন্তু পাহাড়ি অঞ্চলে বন্যহাতির তাণ্ডব চলছে। তাই ওই এলাকার কৃষকের জমির ধান যদি শতকরা ৬০ ভাগ পাকে, তাহলে তাদের ক্ষেতের ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে অন্তত কৃষকরা খোরাকীর ধান ও খরচের টাকা উঠাতে পারবেন।"

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, "গারো পাহাড়ে বন্যহাতির তাণ্ডব দীর্ঘদিনের সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে বনবিভাগের মাধ্যমে সরকার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।"

এমএসএম / এমএসএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ওএমএস ডিলার পয়েন্ট বৃদ্ধির দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

দুই মহাসড়ক অবরোধ, দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যান চলাচল বন্ধ

চাঁদপুরে মাদক কারবারি ইউপি সদস্যের স্ত্রীসহ আটক ২

ঝিনাইদহে মহিলা রোগীর গালে থাপ্পড় মারলেন ডাঃ দেবাশীষ বিশ্বাস; অন্তরালে যা ঘটেছিল

বড়লেখায় দুই সিএনজি-অটোরিক্সা চুর আটক, গণপিটুনিতে নিহত-১

সাতক্ষীরায় কথিত সাংবাদিকের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সকলে

সাভারে ইউএনওর এক বছর পূর্তিতে উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা

নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির "ফল-২০২৫" ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত

নাচোলে রাতের আঁধারে আমের ডাল কর্তন ও চুরি ক্ষতি প্রায় ৮০ হাজার টাকা

রায়গঞ্জে এক অসহায় বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ালো শিক্ষার্থী শেখ রিয়াদ

বাউবিতে প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান

নড়াইলে ইব্রাহিম মোল্যাকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার নাটকের অবসান : ভিকটিম উদ্ধার, নারীসহ গ্রেপ্তার ৪

শালিখায় অবৈধ মৎস্য সরঞ্জাম আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস