সিসিকের এসেসমেন্ট শাখায় সীমাহিন দূর্নীতি

সিলেট নগরীর মানুষের কাছে আতঙ্ক সিটি করপোরেশনের কর শাখা। বাসা-বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স, পানিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে সিসিককে কর দিতে হয়। তবে সব করের মধ্যে যে করের বোঝা নিয়ে নগরবাসী চিন্তিত সেটি হচ্ছে বাসা-বাড়ির হোল্ডিং কর। এটি তদারকি করে সিটি করপোরেশনের এসেসমেন্ট শাখা। কয়েক মাস পূর্বে সিসিক কর্তৃক নজিরবিহীন ও অবিশ্বাস্য কর নির্ধারণ নিয়ে সিলেট মহানগরীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিলো। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে গ্রাহকদের কাবু করে ঘুষ আদায় করার জন্য কর শাখার চার কর্মকর্তা নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। সেই হিসেবে করের চিঠি পাঠানো হয় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারিদের দিয়ে। অতিরিক্ত কর নির্ধারণ হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন গ্রাহকরা। এ অবস্থায় উপরোক্ত এসেসররা কর শাখার প্রধান কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী গ্রাহকরা কর শাখায় গেলে গুনতে হয় বড় অংকের টাকা। অন্যথায় কর কমে না। টাকা দিলেই নানা অজুহাত দেখিয়ে সীমিতভাবে কর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই শাখার দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। করের হিসেবেও হচ্ছে নয়ছয়। অভিযোগ রয়েছে, এতে দু’হাতে টাকা লুটেন এই শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। মাঠ পর্যায় থেকে অফিস সবখানেই দিতে হয় ঘুষ। এই শাখার প্রধান মো. আবদুল বাছিত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এসেসমেন্ট শাখায় কাজ করছেন। বর্তমান দায়িত্ব প্রধান এসেসর। ২০২৩ সালে নজিরবিহীন ও অসহনীয় কর ধার্য্যর কারণে হৈচৈ শুরু হয় নগরজুড়ে। আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এসেছিল আন্দোলনের ডাকও। পালাতক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের পিএস শহীদ চৌধুরী। সে সময় দুর্নীতির টিমওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন আবদুল বাছিত। করে ফাইল নিজেই ছাড় দিতেন শহীদ। টাকা নিতেন বাছিত। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মতে, সিলেট নগর ভবনের এক এসেসমেন্ট শাখায়ই তখন কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নজরে আসে আনোয়ারুজ্জামানের। গণ-অভ্যুত্থানের কয়েকদিন আগে শহীদকে নগর ভবন থেকে বিদায় করে দেন। তবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন আবদুল বাছিত। সঙ্গে তার দুর্নীতির নেটওয়ার্কও। চারজনের এই চক্রে এসেসমেন্ট শাখায় দুর্নীতি হচ্ছে সরবে। বর্তমানে সিলেট সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত রয়েছে। জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে কার্যক্রমে গতি আসছে না। কিন্তু এসেসমেন্ট শাখা বসে নেই। যেখানে নতুন ভবন হচ্ছে সেখানেই তারা ঢুঁ মারছে। পুরাতন ২৭টি ওয়ার্ডসহ নতুন ১৫ ওয়ার্ডে তারা নানা কর্মকান্ড করছে। এসেসমেন্ট করে অফিসের বসের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলা হচ্ছে। টাকা দিলে নামমাত্র কর দিয়েই কাজ হয়। আবার টাকা না দিলে ভোগান্তির অন্ত থাকে না। আবদুল বাছিত প্রথমে সিলেট পৌরসভায় টাইপিস্ট হিসেবে নিয়োগ পেলেও ২০০০ সালের দিকে তিনি সহকারী এসেসর’র পদ বাগিয়ে নেন। তার পদ এসেসর হলেও কয়েক মাস আগে তিনি প্রধান এসেসরের দায়িত্ব পেয়েছেন। যেখানে চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। নগরীর ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও প্রধান এসেসর আবদুল বাছিতের সম্পদ নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। খাসদবির এলাকায় রয়েছে তার বিলাসবহুল বাড়ি। প্রয়াত মেয়র কামরানের সময় বেপরোয়া ছিলেন সহকারী এসেসর আবদুল বাছিত। এরপর মেয়র আরিফের সময়ও তিনি দু’হাতে টাকা কামিয়েছেন। আর আনোয়ারুজ্জামানের সময় তার সঙ্গী ছিল আলোচিত শহীদ চৌধুরী নিজেই। সাম্প্রতিক সময়ে তিনিও দাপট দেখাচ্ছেন সিটিতে। তার আরেক সহযোগী এসেসর কবির উদ্দিন চৌধুরী পানি শাখায় নিয়োগ পেলেও দীর্ঘদিন থেকে এসেসমেন্ট শাখায় কাজ করছেন। আবদুল বাছিতের প্রধান সহযোগী হিসেবে তিনি ওই শাখায় কাজ করছেন। বাছিত ও কবিরের আরও দু’সহযোগী বাবলু ও মাহবুব মাস্টাররোলে বদর উদ্দিন কামরানের সময় নিয়োগ পায়। ২০১২ সালের দিকে হাইকোর্টের নির্দেশে তাদের চাকরি স্থায়ী হয়। এরপর থেকে তারাই বেপরোয়া দুর্নীতির সহযোগী হয়ে ওঠেন। তাদের প্রভাব এত বেশি যে কেউ সাহস করে অভিযোগ করার সাহস পায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেয়র দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, এদের হাত অনেক লম্বা। কর্মচারী সংসদের নেতা হওয়ায় তাদের সাথে কেউ পারেনা। সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের এপিএস শহীদ চৌধুরীর সাথে তাদের দহরম মহরম সবাই জানে। আমরা ঐ সময় দ্বায়িত্ব থাকা স্বত্তেয় মেয়র দপ্তরে কাজ করার সুযোগ পাইনি। নিয়মিত ষ্টাফ হওয়া স্বত্বেয় বসে বসে কাটাতে হয়েছে। কিন্তু বাছিত, বাবলু, কবির, মাহবুব তখন আওয়ামী লীগের অলিখিত কর্মী সেজে সকাল বিকাল শহীদ চৌধুরীর রুমে বসে থাকত। হোল্ডিং মালেকদের গাদা গাদা কর কমানোর আবেদন শহীদ চৌধুরীর হাতে দিত। সাথে খাম। শহীদ চৌধুরী নিজে এসব আবেদনে কর কমিয়ে পরিমাণ লিখে দিতেন। ঐসময় এই সিন্ডিকেটের বাইরে কেউ কর কমাতে পারেনি। শহীদ চৌধুরীর মাধ্যমে বাছিত, বাবলু, কবির ও মাহবুবরা অবৈধ নিয়োগ, হোল্ডিং টেক্স সহ বিভিন্ন খাতে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। শহীদ চৌধুরীর সাথে তাদের এ লিঁয়াজোর মাধ্যম হিসাবে কাজ করে সুজন নামক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নিয়োগকৃত এক মাষ্টাররোল কর্মচারী। ছাত্রলীগ নেতা সুজনকে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কর শাখায় সহকারী কর কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেন। অনেকেই পালিয়ে গেলেও সুজন এখনো বহাল তবিয়তে কাজ করছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এসেসমেন্ট শাখা যেন বাছিতের পারিবারিক সম্পত্তি। এখানে তার শ্যালক, ভাতিজা, ভাগনা কর্মরত রয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসেসমেন্ট শাখার সহকারি এসেসর জানান, বাছিতের আত্মীয়দের দাপটে কেউ কিছু বলতে পারেনা। তারা কর শাখাকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন।
এমএসএম / এমএসএম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি বীজ বিতরণ

মারুকা ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত: ঐক্য ও সংগঠনের বার্তা

বারহাট্টায় নাশকতার মামলায় ২ জন আটক

মধুখালীতে তামাক নিয়ন্ত্রণে উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের চলমান হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

মধুখালীতে কাব কার্নিভাল ২০২৫ অনুষ্ঠিত, অংশ নেয় ৩০টি স্কুল

সীতাকুণ্ডে পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

নাচোলে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

ক্ষেতলালে গণজমায়েতের মাধ্যমে উপকারভোগীদের শুনানি গ্রহণ

কুড়িগ্রামে ট্রাক চাপায় প্রাণ গেলো যুবকের

নাঙ্গলকোটে ৮ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশায় চরম ভোগান্তি

বারহাট্টার প্রকৃতিতে নান্দনিক সৌন্ধর্য নিয়ে এলো বর্ষা
