এবার কমিটি জালিয়াতি করে আবার সমালোচিত কুষ্টিয়ার সেই দুই নেতা

রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কোন কথা নেই সেটাই যেন আবারও প্রমাণ করল কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি'র শীর্ষ দুই নেতা। দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি কে কেন্দ্র করে অনেক সমালোচনা বা বিতর্কিত সৃষ্টি হয়েছে। জেলার ত্যাগী ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করলেও কেন্দ্রীয় কমিটির এই দুই বিতর্কিত নেতার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এবার কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা ওমান্য করল জেলার এই দুই শীর্ষ বিএনপি নেতা।
প্রিয় পাঠক আপনারা ভারতের নটবরলাল এর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই যে কিনা জালিয়াতের মাধ্যমে বিশ্ব বিখ্যাত স্থাপনা তাজমহল বিক্রি করেছিল এক বিদেশী পর্যটক এর কাছে। তার জালিয়াতি এতটাই নিখুঁত ছিল যে সে সময় ভারতের তৎকালীন সরকারও তার জালিয়াতি প্রথমে বুঝতে পারেনি।কিন্তু নটবরলাল এর জালিয়াতি বুঝতে না পারলেও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির সরকারের জালিয়াতি বুঝতে পেরেছে কুমারখালী বিএনপি'র ত্যাগী ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলে, আওয়ামী লীগের পূর্ণবাসনের অভিযোগে যে কমিটি স্থগিত করেছিল কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির সরকার জালিয়াতির মাধ্যমে সেই কমিটিকেই আবার বহাল রেখেছে। আর এই জালিয়াতি কে কেন্দ্র করে কুমারখালী ত্যাগী ও সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে যার ফলে সাংগঠনিকভাবে দলের উপর অনেক প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করে কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ। তিনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেছে, কুষ্টিয়া জেলা কমিটি কর্তৃক কুমারখালী উপজেলা কমিটি গঠনের লক্ষে গত ৫ মাস পূর্বে উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব নিজ ইচ্ছামত ইউনিয়ন কমিটি গঠনের লক্ষে সার্চ কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটিতে আহ্বায়ক এর আত্মীয়-স্বজন, তার নিজ কর্মচারী ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের কে নিয়ে কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটির বিরুদ্ধে জেলা কমিটির নিকট অভিযোগ দিলে জেলা কমিটি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি সাত সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠিত হয়। উক্ত কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়ে সার্চ কমিটি থেকে আওয়ামী লীগের দোসরদের নাম বাদ দিয়েন নতুন করে সার্চ কমিটি গঠন করে। ইউনিয়নের ওয়ার্ড সম্মেলন ও ইউনিয়ন সম্মেলন করা হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতাই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য বৃন্দ প্রতিটি ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য সার্চ কমিটির প্রস্তাব জেলা কমিটিতে প্রদান করে। কিন্তু জেলা কমিটি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিগত ১০/৭/২০২৫ তারিখের বরাতে গত ২০/৭/২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন সম্মেলন করার লক্ষ্যে একটি কমিটি ঘোষণা দেন। এবং উচ্চ কমিটিকে ২১/৭/২০২৫ থেকে ২৩/৭/২০২৫ মধ্যে সম্মেলন সমাপ্ত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জেলা কমিটি তড়িঘড়ি করে দলের সংবিধান ও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পকেট কমিটি করার পায়তারা করছে। ফলে কুমারখালী উপজেলার দলীয় কন্দল সৃষ্টি হবে। ফলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। দলীয় হানাহানি থেকে দলকে রক্ষা করা ও সংবিধান অনুযায়ী দল পূর্ণগঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় নিবেদন করছি।
কুমারখালী উপজেলার এই বর্ষিয়ান রাজনৈতিক নেতার লিখিত অভিযোগের পরে নড়েচড়ে বসে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির পদ-বঞ্চিত নেতৃবৃন্দরা। এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলার এই দুই শীর্ষ নেতাকে ঘিরে চলতে থাকে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।
অনুসন্ধানে এ বিষয়ে দৈনিক সকালের সময় এর প্রতিবেদকের হাতে আসে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য তা হলো, গত ১৪/৬/২০২৫ তারিখে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির প্যাডে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় তাতে লেখা আছে, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির অন্তর্গত কুমারখালী উপজেলা বিএনপির ইউনিয়ন সমূহের কাউন্সিল সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সকল প্রকার আপত্তি বা অভিযোগ ও অসঙ্গতি নিষ্পত্তি করে কাউন্সিল সংক্রান্ত কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি কর্তৃক গঠিত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টিম। আর এই টিমের প্রধান ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার। এবং টিম সদস্যদের মধ্যে ছিলেন (১) মোহাম্মদ শেখ সাদী - যুগ্ন আহ্বায়ক,কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি। (২) নুরুল ইসলাম আনসার পারমানিক -আহ্বায়ক, কুমারখালী উপজেলা বিএনপি। (৩) অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ -সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি। (৪) অ্যাডভোকেট খাদিমুল ইসলাম - সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি। (৫) আব্দুল হাকিম মাসুদ - সদস্য,কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি। (৬) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান - সদস্য সচিব, কুমারখালী উপজেলা বিএনপি।
আর এই কমিটির সদস্যরা প্রকৃত বিএনপির কর্মী ও ত্যাগীদের মূল্যায়নের লক্ষ্যে উপজেলার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে গ্রহণযোগ্য বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ইউনিয়ন সার্চ কমিটির তালিকা করে। এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা জেলা কমিটি যে ৬ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম গঠন করে সেই টিমের ৪ জন সদস্য প্রত্যেকটা ইউনিয়ন সার্চ কমিটির তালিকায় স্বাক্ষর করে। কিন্তু এই কমিটি গ্রহণ না করে দলীয় সংবিধান লংঘন করে জেলা কমিটি পূর্বের আহ্বায়ক কমিটি বহাল রাখে। এবং আরো জানা যায়, স্বজনপ্রীতি ও আওয়ামী লীগের লোকদেরকে পূর্ণবহালের জন্য মোটা আঙ্কেল লেনদেনের মাধ্যমে আগের কমিটিকে জালিয়াতির মাধ্যমে বহাল রেখেছে জেলা বিএনপির এই দুই শীর্ষ নেতা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে পারবো না এখন।
এবং কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করলে তিনি কলটি রিসিভ করেনি।
কুমারখালী উপজেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সহ বিএনপি'র মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বলেন, কমিটি নিয়ে যে জালিয়াতি করেছে জেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন আহমেদ ও ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার বিচার আমরা চাই। আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি জালিয়াতির মাধ্যমে কুষ্টিয়া পৌর কমিটির কাউন্সিলের বিপুল ভোটে নির্বাচিত জনপ্রিয় নেতাকে কিভাবে পরাজিত করল এবং জেলার প্রতিটা কমিটিতেই নিজের আত্মীয়-স্বজন ও মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ নেতাদেরকে বিএনপির কমিটিতে রাখা হয়েছে এর প্রভাব দলের উপর পড়বে এবং দলের সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে। কুষ্টিয়ার এই দুই বিএনপি নেতার কারণে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার প্রত্যেকটা সংসদীয় আসন থেকে বিএনপি'র মনোনীত প্রার্থীরা পরাজিত হতে পারে। এতে করে বিএনপির ঘাঁটি খ্যাত কুষ্টিয়াতে বিএনপির জনপ্রিয়তা দিন দিন কমবে। এবং এই দুই শীর্ষ নেতার দুর্নীতি,চাঁদাবাজি ও চরমপন্থীদের আশ্রয় দাতা হিসেবে দিন দিন কুষ্টিয়ার সাধারণ জনগণ বিএনপি'র উপর থেকে মুখ সরিয়ে নেবে। আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা সবাই বলতে চাই কুষ্টিয়ায় বিএনপি রক্ষার্থে জেলার আহ্বায়ক কমিটি বাতিল ঘোষণা করা হোক এবং অবিলম্বে কাউন্সিলর মাধ্যমে সাধারণ নেতাকর্মীদের ভোটের মধ্যে দিয়ে দলীয় সংবিধান মেনে নেতা নির্বাচিত করা হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আদিত্য ইসলাম অমিত বলেন, আমার কাছে এখনো লিখিত অভিযোগটি পৌছায়নি লিখিত অভিযোগটি পেলে আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এমএসএম / এমএসএম

বোদায় মহিলা মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল বিতরণ

হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্থায়ী সদস্য কবর জেয়ারত ও পরিচালক'র সাথে সৌজন্য সাক্ষাত

ভবদাহ অঞ্চলে পানিবন্দি শত শত পরিবার

বারহাট্টার প্রকৃতিতে ফুটন্ত শাপলা যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে

কুড়িগ্রামে দূর্গম চরাঞ্চলের দরিদ্র মহিলাদের মাঝে সেলাই/হস্তশিল্প বিষয়ক প্রশিক্ষনের উদ্বোধন

মানিকগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী মুন্নুর মৃত্যুবার্ষিকীতে চিকিৎসা সেবা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি

বিয়ে হয়নি তবুও নিচ্ছেন মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা

মির্জাগঞ্জে চাঁদাবাজির মামলায় রাসেল মৃধা গ্রেপ্তার

কর্ণফুলী পেপার মিলসের তামার তার পাচারের সময় ১ জন গ্রেফতার

নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ নেতা বিস্ফোরক মামলার আসামি ভারতে পালানোর সময় গ্রেপ্তার

তানোরে বিএনপির স্থবিরতা কাটাতে মিজানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি তৃণমূল নেতাকর্মীদের!

মেহেরপুর জেলা বিএনপি'র উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত
