সিডিএ’র সেকশন অফিসারের পদোন্নতিতে অনিয়ম

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ/চউক) সেকশন অফিসারের পদোন্নতিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সিনিয়রদের বাদ দিয়ে জুনিয়রদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পদোন্নতির চিঠিতে ৪৩৫তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের কথা বলা হলেও, বাস্তবে ওই বোর্ড সভায় তাদের পদোন্নতি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। বোর্ড সভার সিদ্ধান্তে সংশোধনের শর্ত দেওয়া থাকলেও তা মানা হয়নি। ফলে এই পদোন্নতি নিয়ে সিডিএ ভবনেই চলছে ব্যাপক সমালোচনা। তবে সিডিএ’র সচিব দাবি করছেন, এই পদোন্নতি নিয়ম মেনেই হয়েছে।
জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারি সিডিএ’র সচিব রবীন্দ্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উচ্চমান সহকারী সেকশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মইন উদ্দিন ও উচ্চমান সহকারী/ সেকশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আক্তারকে সেকশন অফিসার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত বাছাই কমিটির সুপারিশ এবং ১৮/৪/২০১৯ তারিখের চউক এর ৪৩৫তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের আলোকে চউক এর কর্মচারীদ্বয়কে সেকশন অফিসার পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো।” এতে চেয়ারম্যানের অনুমোদন আছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাস্তবে ৪৩৫তম বোর্ড সভায় এই দুই কর্মচারীর পদোন্নতি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
৪৩৫তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত:
৪৩৫তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, চউকের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ে গঠিত কমিটির বিস্তারিত পর্যালোচনান্তে বিভিন্ন পদে কমিটির সুপারিশকৃত তালিকা যথাক্রমে- প্রকৌশল বিভাগের পদোন্নতি ও নিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘পরিশিষ্ট-ক’, প্রশাসন বিভাগের পদোন্নতি ও নিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘পরিশিষ্ট-খ’, পরিকল্পনা বিভাগের পদোন্নতি ও নিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘পরিশিষ্ট-গ’ এবং হিসাব বিভাগের পদোন্নতি ও নিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘পরিশিষ্ট-ঘ’ এ উল্লেখিত পদসমূহের বিষয়ে নিম্নবর্ণিত সংশোধনপূর্বক পদোন্নতি প্রদানসহ অন্যান্য সুপারিশসমূহ গৃহীত হলো।
কী আছে সংশোধনে?
সংশোধনে বলা হয়েছে, কোনো শাখা বা বিভাগ উল্লেখ ব্যতীত শুধুমাত্র সেকশন অফিসার (শাখা প্রধান) পদে নিম্নোক্ত ৫ জনকে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়: স্টেনোগ্রাফার জমির উদ্দিন, আশরাফ খাতুন ও নুরুল কবির, উচ্চমান সহকারী (ইউডিএ) জাকির হোসেন এবং সুবীর বড়ুয়াকে সেকশন অফিসার (শাখা প্রধান) হিসেবে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে অফিস আদেশের মাধ্যমে বিভিন্ন শাখা/বিভাগে পদায়ন করতে হবে। এছাড়া উচ্চমান সহকারী (ইউডিএ) সুনীত ভট্টাচার্য্য, মো. মইন উদ্দিন, শাহীন আক্তার ও কেয়ারটেকার মো. আলমগীর তালুকদার এর মধ্যে জ্যেষ্ঠতা, বেতন গ্রেড এবং ফিডার পদের বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় সেকশন অফিসার এর ১টি পদে পদোন্নতি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বাছাই কমিটির সুপারিশে অনিয়ম:
সিডিএ’র পদোন্নতি বিষয়ে গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশে অনিয়ম প্রতিফলিত হয়েছে। চউক চাকরি বিধিমালা ১৯৯০ অনুযায়ী প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে, সেকশন অফিসার হিসেবে পদোন্নতির ক্ষেত্রে উচ্চমান সহকারী, তত্ত্বাবধায়ক বা স্টেনোগ্রাফার পদকে ফিডার পদ হিসেবে গণ্য হবে। স্নাতক ডিগ্রিসহ এসব পদে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রাপ্ত হবেন। কিন্তু কমিটি যাদের বিষয়ে সুপারিশ করেছে তাদের চেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন লোক থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাদের নাম আসেনি। ২০০৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক পদে যোগদান করা এমএসসিসহ একজন বিএ পাশ করা লোকের নামই ওঠেনি বাছাই কমিটির তালিকায়। ফলে ২১ বছর তত্ত্বাবধায়ক পদে চাকরি করে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন আলমগীর নামের একজন। সে ২০০৪ সালের ১৭ নভেম্বর কেয়ারটেকার পদে যোগদান করেছিলেন। রহস্যজনক কারণে সিনিয়রের তালিকার শীর্ষে থাকা মো. নাসির খানের নাম আসেনি তালিকায়। অপরদিকে বাছাই কমিটির সুপারিশের তালিকায় যাদের নাম এসেছে তারা হলেন, ইউডিএ সন্তোষ কুমার দাস (যোগদানের তারিখ ১/৯/১৯৭৭/পিয়ন), স্টেনোগ্রাফার জমির উদ্দিন (৯/১২/১৯৯৯/স্টেনোটাইপিস্ট), ইউডিএ জাকির হোসেন (১২/১১/১৯৮০/পিয়ন), স্টেনোগ্রাফার আশরাফী খাতুন (২৪/১২/২০০৬), নুরুল কবির (৫/৯/১৯৯২/অফিস সহকারী) ও সুবীর বড়ুয়া (১৭/৪/১৯৮৯/কর্মসহকারী)।
ইউডিএ হিসেবে কর্মরতদের তালিকায় আছেন: ফরিদ আহমেদ, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, মইন উদ্দিন, সুনীত ভট্টাচার্য্য ও শাহীন আক্তার। মইন উদ্দিন ও শাহীন আক্তার ২০০০ সালে অফিস সহকারী পদে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সেকশন অফিসার শাহীন আক্তার ও মো. মইন উদ্দিন বলেন, "নিয়ম অনিয়ম আসলে আমাদের কিছু করার নেই, কর্তৃপক্ষ আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, আইনগত বিষয়গুলোও তারা দেখবেন।" তবে তারা দাবি করেন, তাদের পদোন্নতির বিষয়টি বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং শাহীন আক্তার ২০২০ থেকে এবং মইন উদ্দিন ২০২১ থেকে ভারপ্রাপ্ত সেকশন অফিসারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর যে পদটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে সেটি এখনো খালি আছে।
তবে অপর একটি সূত্র জানায়, সিডিএ’র সবচেয়ে সিনিয়র ব্যক্তি মো. নাসির খান এখনো পদোন্নতি না পেয়ে ওই পদে (সেকশন অফিসার) ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এই পদোন্নতি নিয়ে খোদ সিডিএ’র কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী জানান, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ও তার বোর্ড সভার সদস্যরা অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে বাছাই কমিটিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সিনিয়রদের বাদ দিয়ে জুনিয়রদের তালিকায় রেখেছেন। আবার বর্তমান চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়ে তার পথেই হাঁটছেন। সেকশন অফিসারের পদোন্নতিতে অনিয়মের আভাস পাওয়া গেছে। বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের বরাত দিয়ে যে পদোন্নতির চিঠি দেওয়া হয়েছে, তা নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। তারা আশা করছেন, বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত ভালোভাবে কর্তৃপক্ষ যথাযথ আইনানুগ সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সচিব ও পদোন্নতিপত্রে স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা রবীন্দ্র চাকমা দৈনিক সকালের সময়কে বলেন, "আমরা কোনো অনিয়মের আশ্রয় নেইনি। বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে মাত্র। আমার চিঠির আগেই তারা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।"
এমএসএম / এমএসএম

পাঁচবিবিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের সমাপনী

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে ৩ দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

মির্জাগঞ্জে গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক

বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা মুন্সি আকতার হোসেনের সংবাদ সম্মেলন

পাকশীতে রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের বারো দফা দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা

অনির্বাণের আয়োজনে লেখক ও কবিদের চলনবিল ভ্রমণ ও সাহিত্য আড্ডা

জয়পুরহাটে বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী

ভূঞাপুরে আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের ৪ সদস্য আহত

পাঁচবিবিতে উপজেলা স্কাউটের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন

তাড়াশের ২ জন পাচারকারী র্যাব-১২’র অভিযানে মূল্যবান কষ্টি পাথরের তৈরি মূতিসহ গ্রেফতার

বাউফলে দুই বাড়িতে ডাকাতি; গণপিটুনিতে নিহত ১

কুড়িগ্রাম -১আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ডা:মো: ইউনুস আলী
