ঢাকা শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

এনজিওকে ঋণ বিতরণের সঙ্গে শিল্প-কারখানা স্থাপনে বাধ্যতামূলক করা হোক


বুলবুল হাসান, বেড়া photo বুলবুল হাসান, বেড়া
প্রকাশিত: ২৭-৯-২০২৫ দুপুর ১২:৪৭

 বাংলাদেশের এনজিও গুলো কে শুধু ঋণ বা লোন বিতরণে সীমাবদ্ধ না রেখে, শিল্প কারখানা স্থাপনে বাধ্যতামূলক করা হোক। এতে দেশে নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হবে। দেশের টেকসই উন্নয়নে বেকারত্ব ঘোচাতে কর্মসংস্থানও জরুরি। এনজিও শুধু মাএ ঋণ বিতরনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে চড়া সুদ- আসল তুলে নিয়ে প্রতিষ্ঠান লাভবান হচ্ছে । তবে বাস্তবতা হলো ক্ষুদ্র ঋন নিয়ে মাঠ পর্যায়ে উপকার ভোগীর তুলনায় ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যাই বেশি। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ অনেকটা নিরুপায় হয়ে ঋন গ্রহণ করে। ঋণ নিয়ে অনেকেই ব্যবসা করতে পারে না বা ব্যর্থ হয়। কিন্তু এনজিও নিজেই যদি শিল্প গড়ে তোলে, সেখানে অনেক মানুষ চাকরি পাবে  বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। অনেক এনজিওর মূল কাজই সামাজিক উন্নয়ন যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী উন্নয়ন ইত্যাদি। তাদেরকে শিল্প স্থাপনে বাধ্য করা মানে কাজের পরিধি বদলে ফেলা। অনেক এনজিও নারী উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে। শিল্প স্থাপন হলে নারী শ্রমিকদের কাজের সুযোগ বাড়বে, যা নারীর ক্ষমতায়নের পথ সুগম করবে। শুধু ঋণ দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন চাকরি, শিক্ষা ও দক্ষতা। শিল্প খাত এসবের জোগান দিতে পারে। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে উৎপাদনমুখী শিল্পনীতির দিকে অগ্রসর হওয়া দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এনজিওগুলো যদি ছোট বা মাঝারি শিল্প স্থাপনে অংশ নেয়, তবে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বাড়বে। বর্তমানে দেশের হাজার হাজার এনজিও গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি করলেও, এর বেশিরভাগই উচ্চ সুদের হার ও কঠোর শর্তে পরিচালিত হচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায়, ঋণগ্রহীতারা আর্থিক চাপে পড়ে আরও বেশি দারিদ্র্যের মুখে পড়ে যান। ফলেএনজিও গুলোর উদ্দেশ্য যে কেবল উন্নয়ন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যা দেশের অর্থনীতির উপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত এনজিওর সংখ্যা দুই হাজার ৫৫৪টি। এর মধ্যে দেশি এনজিওর সংখ্যা দুই হাজার ২৮৯টি ও বিদেশি এনজিওর সংখ্যা ২৬৫টি। এতো সংখ্যক ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান থাকলেও তাদের নিজেদের দৃশ্যমান কোনো কলকারখানা নেই। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যদি একটা করেও কলকারখানা স্থাপন করে এতে দেশের লখাধিক বেকারের কর্মসংস্থান হবে। এতে একদিকে যেমন বেকারত্ব ঘোচাতে সহায়ক হবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। 

সরেজমিনে ঘুরে সায়লা, শারমিন, সুলতানার
মতো বেশ কয়েক জন ঋণ গ্রহীতার সাথে
 কথা বলে জানা যায় এক সময় দশ হাজার টাকা ঋণ নেন। এখন পরিবার বড় হয়ে যাওয়ায় ঋণের অংক বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে লাখ টাকা। যদি ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের এলাকায় কলকারখানা থাকতো আর যদি আমাদের পরিবারের কেউ সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পেত তাহলে এই ঋণের দায় আর বেশি হতো না। তিনি আরও বলেন আমার বাড়ির পাশেই একজন ব্যাংকে চাকরি করে, সেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি করছে, এখন চাকরির বেতন থেকে কিছু করে টাকা পরিশোধ করছে। এভাবে হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ উপকার পাবে। অন্যথায় দিন দিন মানুষের ঋণের দায় বাড়বেই। অনেক সময় পরিবারের সদস্যদের
কাজ থাকে না কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে নিরুপায় হয়ে অন্য এনজিও থেকে টাকা তুলে 
ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়, এতে ঋণ বাড়ে কমে না। মফস্বল অঞ্চলে যে সকল এনজিও রয়েছে তারা যদি গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিতো তাহলে আমরা উপকার ভোগী হতে পারতাম। 

 আয়শা খাতুন তার সন্তানকে শিক্ষা ঋণ নিয়ে লেখাপড়া করিয়েছেন, ছেলের পড়াশোনাও, বর্তমানে তার ছেলে বেকার। অফিস থেকে তাকে কিস্তির টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। ঋণ পরিশোধের উপায় এখন নেই । তিনি বলেন ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের যদি শিল্প কারখানা থাকতো, আমার ছেলের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে আমার কোনো চিন্তা ই থাকতো না। ঋণ নিয়ে ছেলে কে পড়িয়ে এখন বিপদে আছি। 

প্রবীণ শিক্ষক, নতুন ভারেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের
প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক এ কে এম আবুল কালাম বলেন, আগের দিনে মানুষ  কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করতো। এখন অধিকাংশ মানুষ  আয়েসি জীবনের প্রত্যাশায় ঋণ নিয়ে বাড়ি গাড়ি করে। একটা সময় দেখা যায় আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় আবার নতুন করে অন্য কোথাও থেকে ঋণে জড়িয়ে পড়ে। ফলে সে মানসিক হতাশায় ভুগে অকালেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। একটা সময় সে দুর্বিষহ জীবন যাপন করে। তাই রাষ্ট্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের উচিত, এনজিও কে ঋণ বিতরণের পাশাপাশি শিল্প-কারখানা স্থাপনে উৎসাহিত করা। যাতে এদেশের মানুষের নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়। এতে দেশের বেকারত্ব মোচন হবে, দেশ স্বনির্ভর হবে ও টেকসই উন্নয়ন তরান্বিত হবে। 

বাংলাদেশ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) দীর্ঘ দিন ধরে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করলেও অধিকাংশ এনজিও গুলো ঋণ বিতরণের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে তাদের উচ্চ সুদের ব্যবসায়ী উদ্দেশ্য সফল হলেও জনগণের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটছে না।  এই পরিস্থিতিতে এনজিও গুলো কে শুধু ঋণ বিতরণে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের আর্থ সামাজিক সমস্যা সমাধানে শিল্প কারখানা স্থাপনে বাধ্যতামূলক করা উচিত। এতে দেশে টেকসই উন্নয়ন হবে। রাষ্ট্রের উচিত এই বিষয় গুলো বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

এমএসএম / এমএসএম

কোনাবাড়ীতে গৃহবধূর আত্মহত্যা

গোদাগাড়ীতে নৌকাডুবিতে একজনের মৃত্যু, দুইজন নিখোঁজ

কাউনিয়ায় নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদযাপনে সনাতনীদের পাশে থাকবে বিএনপিঃ এমদাদুল হক ভরসা

৫ দফা দাবিতে বারহাট্টায় জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ

ডাসারে জরাজীর্ণ সড়ক : শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চরম ভোগান্তি

মোহনগঞ্জে অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন, ড্রেজার মালিককে জরিমানা

অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ নয়, এই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়

ঝিনাইদহ পৌর বিএনপির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার দুই শতাধিক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর আশীর্বাদে আপ্লুত এমপি প্রার্থী নিশাদ

রাজশাহী-ঢাকা রুটে আজও বন্ধ রয়েছে বাস সার্ভিস

নরসিংদীতে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করলেন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক

সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৭ দিন বন্ধ

চতুর্থ বারের মতো গিনেস বুকে নাম লেখালেন মাগুরার হালিম, ভাঙলেন নিজের রেকর্ড