ঢাকা বৃহষ্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

৫০ বছরে একটি ইটও পড়ল না ঝিনাইদহের পোড়াহটি উইনিয়নের মান্দারতলা গ্রামের রাস্তটিতে


শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ photo শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ২৩-৯-২০২১ দুপুর ৪:২৮

গ্রামের নাম মান্দারতলা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহটি উইনিয়নের মান্দারতলা গ্রামের মান্দারতলা ঈদগাহ মোড় থেকে পশ্চিমপাড়া জামাল মোল্লার বাড়ি পর্যন্ত অবহেলিত একটি গ্রাম। এ গ্রামের মানুষ এখনো স্বপ্ন দেখেন মৃত্যুর আগে হয়তো গ্রামে প্রবেশের একটা ভালো রাস্তা দেখে যেতে পারবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থাকবে, নাকি বাস্তবে পরিণত হবে? এমন শঙ্কা নিয়েই দিনাতিপাত করছেন মান্দারতলা গ্রামের বাসিন্দারা।

গ্রামটিতে প্রায় সহস্রাধিক লোকের বসবাস। রয়েছে শতাধিক স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী।হাঁটুসমান কর্দমাক্ত হয়ে নারী-পুরুষ, শিশু ও অসুস্থ’ রোগী নিয়ে চলাচলে এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো পাঠগ্রহণ করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারেন না। কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেয়াও হয়ে যায় কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অনেক বয়স্ক মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পড়ে গিয়ে ভেঙেছেন হাত-পা। বছরের পর বছর ধরে এ গ্রামের মানুষগুলো এমন ভোগান্তি নিয়েই বসবাস করছেন।

দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকায় জনপ্রতিনিধিদের ওপর চরম ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া প্রত্যন্ত গ্রামেও সাধারণত ইট দিয়ে হলেও রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। এডিপি, এলজিএসপি, টিআর-কাবিখাসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন তহবিল থেকে জনদুর্ভোগের এ সব কাজগুলো করার কথা। কিন্তু‘ পোড়াহটি ইউনিয়নের মান্দারতলা গ্রামের অবস্থ’া দেখে মনে হয় সেখানে যেন সরকারের কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অথচ সদর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের টিআর,জিআর,কাবিটা,কাবিখা ভাগাভাগি হয় বলে বিভিন্ন সংস্থার কাছে তথ্য রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি কাঁদায় প¬াবিত হয়ে পড়ে আছে। ঘোড়ার গাড়ি যেতে হলে ঘোড়া পর্যন্ত লাফিয়ে উঠে সেখানেতো মানুষ। আষাঁড় মাস শুরু হলে যন্ত্রনা বাড়ে তিন চার গ্রামের লোকের। আর চলে কার্তিক মাস পর্যন্ত। এ কষ্ট দেখার মতো কোন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নেই। প্রায় এক কিলো মিটার রাস্থার এ হাল। গ্রামে কৃষক থেকে সরকারী চাকুরীজীবী বাস করে। আর শিক্ষার্থীদের কথা তো বাদ থাকলো। তাদের দুঃখ দুরদশা আরো অবর্ণনীয়। রাস্থা ঘাটে কাদার কারণে স্কুলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যায়। গ্রামে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান হয় না। কেউ অসুস্থ হলে কাঁধে করে হাসপাতালে নিতে হয়। বর্ষা মৌসুম আসলে অনেকে শহরে গিয়ে রাত কাটায়। 

করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সদান্দ কুমার বিশ্বাস বলেন, আমার বাড়ি মান্দারতলা গ্রামে। পাশের গ্রাম করিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। কিন্ত আষাড় মাস আসলে শুরু হয় যন্ত্রনা আর চলে কার্তিক মাস পর্যন্ত। রাস্থার কাঁদা দিয়ে হাটা যায় না। আর এসময় হাতে পলিথিনে থাকে শার্ট-প্যান্ট ও সেন্ডেল। পরনে থাকে লুঙ্গি ও গেনজি। বিভিন্ন বাড়ীর মধ্যে দিয়ে হেটে গিয়ে পাকা রাস্তায় উঠে হাত-পা ধুয়ে লুঙ্গি-গেনজি খুলে শার্ট-প্যান্ট পরে ও সেন্ডেল পায়ে দিয়ে স্কুলে প্রবেশ করি। 

কথা হয় গ্রামের বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ রেজাউল করিম বিশ্বাস, আরিফুল ইসলাম, সেলিম মাহমুদ লিটন, আনিচুর রহমান মিলনের  সঙ্গেভ তারা জানান, বৃষ্টির সময় কাদাপানির কারণে কোন বাড়িতে বিয়েও হয়না। এমনকি বাড়ি থেকেও কেও বের হয় না। বলা যায় কাঁদাপানিতে অবরুদ্ধ দশা গ্রামবাসির। রাস্তায় এতই কাঁদা থাকে যে রোগী ও বৃদ্ধ মানুষ কোলে করে নিয়ে চলাচল করতে হয়। কাঁদার জন্য মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। বর্তমান অবস্থা এতোটাই খারাপ পথচারী তো দূরের কথ গরু ছাগলও হেটে যাতায়াত করতে পারছে না। ডিজিটাল ও সভ্যতার এই যুগে এমন রাস্তার কথা কেও কল্পনাও করতে পারে না। একটু বৃষ্টিতেই কর্দমাক্ত হয়ে ওঠে রাস্তাটি। কাঁদার মধ্য দিয়েই চলাচল করতে হয় গ্রামের মানুষের। হাঁটু সমান কাদা ভেঙ্গে চলাচলের এমন দৃশ্য এখন আর কোথাও দেখা যায় না। বাব-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি রাস্তাটি কাঁদা থাকে। ৫০ থেকে ৬০ বছর আগে রাস্তাটি হয়ে আছে। কিন্ত রাস্তায় একটি ইটও পড়েনি। সদর উপজেলার স্থানীয় সরকার বা এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করে কোনা লাভ হয়নি। তারা শুধু আশার বানী শুনিয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাস্তার অবস্থা বেহাল হওয়ায় স্কুলে যেতে কোমলমতি শিশুদের যেমন কষ্ট হয়, তেমনি মসজিদে যাতায়াতেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় মুসল্লিদেরও।

গ্রামবাসীরা জানান, দীর্ঘ ৫০ বছরেও রাস্তাটি ভালো করা হয়নি। এ সময়ের মধ্যে ইট ফেলে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

স্থানীয় ওয়ার্ড (১নং ওয়ার্ডের) কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম ও নারী কাউন্সিলর বলেন, একটি রাস্তার অভাবে মান্দারতলা গ্রামের মানুষগুলো খুবই অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছি। কয়েক বৎসর ইউনিয়ন মিটিং এ তালিকাভুক্ত করেছি। তাতেও কোন কাজ হয়নি। তাছাড়া সদর উপজেলা এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করে রাস্তাটি করতে পারেনি। 

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, রাস্তাটির বিষয়ে আমি খোজ খোবর নিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা করবো। সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া প্রত্যন্ত গ্রামেও সাধারণত ইট দিয়ে হলেও রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। এডিপি, এলজিএসপি, টিআর-কাবিখাসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন তহবিল থেকে জনদুর্ভোগের এ সব কাজগুলো করার কথা। কিন্তু পোড়াহটি ইউনিয়নের মান্দারতলা গ্রামের অবস্থা দেখে মনে হয় সেখানে যেন সরকারের কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

এমএসএম / জামান

বাবার শেষ চিহ্ন টুকু ফিরিয়ে দেয়ার আকুঁতি আজীম অননের

ফেলে যাওয়া প্লাস্টিকের বস্তা থেকে মিলল ২লাখ২০হাজার ইয়াবা

চট্টগ্রামে কেজিডিসিএল'র তিন শতাধিক অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

তিলকপুরের সেই মাঠেই ফুটবল খেললো নারীরা

মাগুরায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

২৪ গণবিপ্লবের চেতনা বিরোধী ধারায় দেশকে নিয়ে যাবার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে : মুহাম্মদ শাহজাহান

মোবাইল কোর্টের অভিযান

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবককে কুপিয়ে যখম অতঃপর থানায় মামলা

রায়পুরে পাবলিক লাইব্রেরীর দ্বিতীয়তলা উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান খাঁন

গোদাগাড়ীতে বাঁশঝারের নিচ থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

দাশুড়িয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুলে মেধাবী সংবর্ধনা ও ফ্যামিলি স্পোর্টস ডে উদযাপন

বকশীগঞ্জে ট্রাক মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ১

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নাগরিকদের সমস্যা একইঃ পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহাম্মেদ মারুফ